—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন স্বামীর ফোনের। ফোনে সাড়া না পাওয়ায় বাড়ছিল উদ্বেগ। শেষ পর্যন্ত কয়েক ঘণ্টা পরে জানলেন ‘করবা চৌথ’-এর দিনে স্বামীহারা হয়েছেন তিনি। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়া ছেলে আর বছর তিনেকের মেয়ে রয়েছে তাঁদের। জম্মুর বাসিন্দা সেই রুচি আবরোল ও পরিবারের সদস্যদের প্রশ্ন, রুচির স্বামী শশীকে খুন করে জঙ্গিরা কী পেল?
গত কাল সন্ধ্যায় কাশ্মীরের গান্ধেরবালে গগনগিরের কাছে এক বেসরকারি সংস্থার শ্রমিকদের শিবিরে হামলা চালায় জঙ্গিরা। তাতেই নিহত হয়েছেন স্থপতি শশী আবরোল-সহ সাত জন। গত কাল সন্ধ্যায় স্বামীর কল্যাণে করবা চৌথ পালন করে মন্দিরে যাওয়ার আগে ফোনে স্বামীর সঙ্গে কথা বলেন রুচি। আজ জম্মুর বাড়িতে বসে বলছিলেন, ‘‘তখন কোনও সমস্যার কথাই বলেনি ও।’’
মন্দির থেকে বাড়ি ফিরে স্বামীকে বারবার ফোন করেও সাড়া পাননি রুচি। পরে সংবাদমাধ্যমে জানতে পারেন ঘটনার কথা। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য ছিলেন শশী। সম্প্রতি বাড়ি ফিরেছিলেন ছেলেকে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি করাতে। শশীর বাবা জে এল আবরোলের কথায়, ‘‘আমার বৌমাকে চাকরি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। বাড়িতে আর কোনও রোজগেরে সদস্য নেই।’’ শশীর বোন দিব্যার প্রশ্ন, ‘‘বৌদি ছেলেমেয়েকে খাওয়াবে কী করে? জঙ্গিরা কী পেল?’’
জঙ্গিরা কী পেল, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন গোয়েন্দারাও। আজ গান্ধেরবালে ঘটনাস্থলে যায় এনআইএ-র একটি দল। গোয়েন্দাদের মতে, এই হত্যাকাণ্ড লাদাখ ও কাশ্মীরের মধ্যে সারা বছর যোগাযোগ রাখার পথ তৈরিকে আঘাত করার চেষ্টা। ঘটনার দায় স্বীকার করেছে লস্করের শাখা সংগঠন ‘দ্য রেজ়িস্ট্যান্স ফ্রন্ট’। সূত্রের খবর, ওই সংগঠনের নেতা শেখ সাজ্জাদ গুলের নির্দেশে স্থানীয় মডিউল এই হামলা চালিয়েছে। শশীর সংস্থা ‘অ্যাপকো’ গগনগিরে জ়েড-মোড় সুড়ঙ্গ তৈরির কাজে যুক্ত। জোজিলার পাশাপাশি জ়েড-মোড় সুড়ঙ্গের মাধ্যমে লাদাখের সঙ্গে শীতেও যোগাযোগ রাখতে পারবে কাশ্মীর। ওই সুড়ঙ্গের মধ্যে দিয়ে শ্রীনগর-লে সড়কের মাধ্যমে লাদাখে সেনা পাঠাতে বা সেখানে মোতায়েন বাহিনীকে রসদ সরবরাহ করতে পারবে ভারত সরকার।
জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের এক উচ্চপদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘লাদাখের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যাহত করতে এই হামলা চালানো হয়েছে। আমরা তা বরদাস্ত করব না।’’ জম্মু ও কাশ্মীরে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলায় বারবার আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা। কিন্তু তাঁর ছেলে ওমর মুখ্যমন্ত্রীর আসনে ফেরার পরে প্রথম হওয়া জঙ্গি হামলা নিয়ে ভিন্ন সুর শোনা গিয়েছে ফারুকের মুখে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি পাকিস্তানের নেতৃত্বকে বলতে চাই তাঁরা ভারতের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক চাইলে এমন ঘটনা বন্ধ করতে হবে। কাশ্মীর পাকিস্তান হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy