সারা দেশে সম্ভাব্য সব জায়গায় সৌর বিদ্যুতের প্যানেল বসাচ্ছে রেল। প্রতীকী ছবি।
পরিবেশ বাঁচাতে কয়লা পোড়ানো তাপবিদ্যুতের উৎপাদন বন্ধ করা ছাড়া পথ নেই। সে-ক্ষেত্রে অচিরাচরিত উৎস থেকে দৈনিক প্রায় ৩০ গিগাওয়াট বা ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করাই রেলের লক্ষ্য। কিন্তু সেই লক্ষ্য অভিমুখে এখনও পর্যন্ত তাদের অগ্রগতি মাত্র এক শতাংশের মতো বলে অভিযোগ। তবু ট্রেন চলাচল থেকে স্টেশন রক্ষণাবেক্ষণ— নিজেদের বিদ্যুতের চাহিদার সবটুকুই ২০৩০ সালের মধ্যে অচিরাচরিত উৎস থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে রেল। এটাকে তারা বলছে ‘নেট জ়িরো’। ওই লক্ষ্য পূরণে সারা দেশেই সম্ভাব্য সব জায়গায় সৌর বিদ্যুতের প্যানেল বসাচ্ছে রেল।
রেলের লক্ষ্য, আগামী বছরের মধ্যে দেশের সব লাইনে বিদ্যুদয়নের কাজ শেষ করা। চলতি বছরে প্রায় ৪১০০ কিলোমিটার রেলপথে বিদ্যুদয়নের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি জ়োন তাদের ক্ষেত্রে ট্র্যাক বিদ্যুদয়ন শেষ করেছে। পূর্ব, দক্ষিণ-পূর্ব, পূর্ব উপকূল, উত্তর-মধ্য এবং পশ্চিম মধ্য রেলে এই কাজ ইতিমধ্যে সম্পূর্ণ হয়েছে বলে রেলের খবর।
বিকল্প উৎস থেকে গত অগস্ট পর্যন্ত ১৪২ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ এবং বায়ুশক্তির মাধ্যমে ১০৩ মেগাওয়াটের কিছু বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে রেল। ‘নেট জ়িরো’র লক্ষ্যে ২০৩০ সালের বিদ্যুতের সম্ভাব্য সামগ্রিক চাহিদা ৩০ গিগাওয়াটের নিরিখে ওই উৎপাদন এক শতাংশের কাছাকাছি বলে জানান রেলকর্তারাই।
রেল সূত্রের খবর, বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়াতে তারা দু’টি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেছে। ওই দুই সংস্থার মাধ্যমে ২০২৪-২৫ সাল নাগাদ রেল আরও ৯০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। সেই সঙ্গে আরও ১৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বরাত দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। পাশাপাশি বিদ্যুতের খরচ কমাতে এলইডি আলো, আধুনিক রি-জেনারেটিভ ব্রেকিং-সহ উন্নত মানের যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম ব্যবহার করা হচ্ছে। বন্ধ করা হচ্ছে বাতানুকূল ট্রেনে জেনারেটর কারের ব্যবহারও।
রেলকর্তাদের দাবি, বিভিন্ন জ়োনের আওতায় থাকা বিপুল অব্যবহৃত জমিতে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব। সেই সঙ্গে হাইড্রোজ়েনকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারের উদ্যোগ শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে লক্ষ্যমাত্রা পূরণের সম্ভাবনা আছে। এখন রেলে জ্বালানি খাতে বছরে খরচ হয় ৪০ হাজার কোটি টাকা। রেলের চাহিদার ৭০ শতাংশ বিদ্যুৎ আসে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে এবং সেই বিদ্যুৎ মেলে কয়লা পুড়িয়ে। একই ভাবে পণ্য পরিবহণে আয়ের অধিকাংশ আসে কয়লা বহন করে।
এই অবস্থায় দেশের কয়লা ভান্ডারের ব্যবহার এত অল্প সময়ের মধ্যে বন্ধ করা সম্ভব কি না, তা নিয়ে রেল আধিকারিকদের একাংশেরই সংশয় রয়েছে। এক রেলকর্তা বলেন, ‘‘পরিবেশের স্বার্থে লক্ষ্যপূরণে দৌড় অব্যাহত রাখা খুব জরুরি। তবে নির্দিষ্ট সময়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে কি না, সেটা এখনই বলা মুশকিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy