ছবি: সংগৃহীত।
ভাঁড়ারের দুর্দশা ঘোচাতে বেসরকারি হাতে কিছু ট্রেন তুলে দেওয়া থেকে শুরু করে কিছু রুট বন্ধ করা, বিভিন্ন পদ ছাঁটাই, স্বেচ্ছাবসরের মতো নানাবিধ রাস্তা বেছে নিয়েছে রেল। কিন্তু এখনও বিশেষ সুরাহা না-হওয়ায় আয় ও ব্যয়ের মধ্যে সমতা রেখে লাভের রাস্তা খুঁজতে এ বার কর্মীদের মতামত নিতে উদ্যোগী হয়েছে তারা।
দেশের সব জ়োন ছাড়াও রেলের নিজস্ব উৎপাদন সংস্থা এবং ওয়ার্কশপের কর্মীদেরও ২০ অগস্টের মধ্যে প্রস্তাব জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ঝাড়াইবাছাইয়ের পরে ৩০ অগস্টের মধ্যে সেই প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়েছে রেল বোর্ডের কাছে।
দেশ জুড়ে রেলে বেসরকারিকরণ এবং কর্মী হ্রাসের পরিকল্পনার মধ্যে সংস্থার আর্থিক স্বাস্থ্য উদ্ধারে কর্মীদের মতামত নেওয়ার এই তৎপরতাকে ‘প্রহসন’, এবং ‘লোকদেখানো’ বলে কটাক্ষ করছেন রেলের বিভিন্ন কর্মী সংগঠনের নেতৃবর্গ। কর্মী সংগঠনের অভিযোগ, রেলের পরিচালন ব্যবস্থায় কর্মীদের মতামত নেওয়ার জন্য আগেই একটি যৌথ কমিটি ছিল, যার পোশাকি নাম ‘পার্মানেন্ট রেলওয়ে এমপ্লয়ি ইন ম্যানেজমেন্ট’ (প্রেম)। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সেই কমিটিকে কার্যত নিষ্ক্রিয় করে রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠছে। রেলের বিভিন্ন বিভাগে পদ ছাঁটাইয়ের পাশাপাশি সম্প্রতি ‘স্যালুট’ নামে একটি প্রকল্প চালু করে ৫৫ বছর বয়সি কর্মীদের স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প চালু করা হয়েছে। রেলের ট্র্যাক রক্ষণাবেক্ষণের সঙ্গে যুক্ত কর্মী ছাড়াও ছাড়াও লোকো পাইলট বা ইঞ্জিন চালকদের আনা হয়েছে ওই প্রকল্পের আওতায়। বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা কাটছাঁট করায় ওই প্রকল্প নিয়ে কর্মী সংগঠনগুলির বড় অংশ অসন্তুষ্ট। অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পেনশন নিয়ে সংশয় সেই ক্ষোভ বাড়িয়ে দিয়েছে।
ইস্টার্ন রেলওয়ে মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ বলেন, ‘‘এক দিকে রেলকে নিঃখরচায় সামাজিক দায়িত্ব পালন করতে বলা হচ্ছে, অন্য দিকে লাভের ক্ষেত্রগুলো ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে বেসরকারি হাতে। এ ভাবে কোনও সংস্থারই সামাজিক বা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য পূরণ হতে পারে না।’’ তাঁর বক্তব্য, সামাজিক কারণে এবং দেশের স্বার্থে
ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার খাদ্যসামগ্রী প্রায় নিঃখরচায় পরিবহণ করে রেল। সামরিক ক্ষেত্রে এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময়েও রেল একই ভাবে দায়িত্ব পালন করে। কিন্তু সেই দায়িত্বপালনকে ধর্তব্যের মধ্যে না-এনে রেলের আয়ের ক্ষেত্রগুলো বেসরকারি হাতে তুলে দিয়ে আর্থিক স্বাস্থ্য দুর্বল করা হচ্ছে। সারা দেশে রেলে ব্যাপক পদ ছাঁটাই এবং বেসরকারি ট্রেন চালানোর উদ্যোগের মধ্যে আচমকা এ ভাবে কর্মীদের মতামত নেওয়ার তৎপরতা নিছক লোকদেখানো বলে অভিযোগ করেছেন অমিতবাবু। ইস্টার্ন রেলওয়ে মেনস কংগ্রেসের সভাপতি বিনোদ শর্মা বলেন, ‘‘কর্মীদের মত নেওয়া হচ্ছে, কিন্তু কোনও রকম মত বিনিময় করা হচ্ছে না। এটা প্রহসন।’’ তাঁর অভিযোগ, সারা দেশে ১৩ লক্ষ রেলকর্মীকে স্বাস্থ্য বিমার আওতায় আনার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু ওই পরিকল্পনার মাধ্যমে রেলের নিজস্ব হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে ধ্বংসের পথে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy