আরমিত্রার উদ্বোধনে রেলমন্ত্রী। ছবি: পিটিআই।
‘মা’কে সম্মান জানাতে বৃহস্পতিবারেই মাতৃভূমি লোকালের অধিকার মহিলাদের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। চলন্ত ট্রেনে মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য শুক্রবার মোবাইল ফোনে একটি বিশেষ ‘অ্যাপ’ চালু করে দিলেন তিনি। নাম দেওয়া হয়েছে ‘আর-মিত্র’ (রেল মিত্র)।
যাত্রী-নিরাপত্তায় ঘাটতি নিয়ে রেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে হামেশাই। মহিলাদের নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দ সফর নিশ্চিত করতেই মাতৃভূমি লোকালের মতো ‘লেডিজ স্পেশ্যাল’ ট্রেনের ব্যবস্থা হয়েছে। সেই ট্রেনের কিছু কামরায় পুরুষদের উঠতে দেওয়ার ছাড়পত্রকে ঘিরেই ধুন্ধুমার কাণ্ড চলল কয়েক দিন।
এই পরিস্থিতিতে রেল-সফরে মহিলারা যাতে সুরক্ষার অভাবে না-ভোগেন, সেটা নিশ্চিত করা দরকার বলে মনে করছেন রেলমন্ত্রী। এ দিন পূর্ব রেলের সদর দফতরে একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘‘বাড়িতেও মহিলাদের নিরাপত্তা দিতে এখন আইন তৈরি হচ্ছে। চলন্ত ট্রেনে তাঁদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা তো করতেই হবে।’’ তার পরেই মহিলা যাত্রীদের নিরাপত্তায় রেলের ‘অ্যাপ’ নেট-দুনিয়ায় চালু করে দেন রেলমন্ত্রী। এ দিন থেকেই ‘গুগ্ল প্লে-স্টোর’ থেকে সেটি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন মহিলারা। আপাতত সারা দেশে অ্যানড্রয়েড ফোনের মাধ্যমে এই সুযোগ মিলবে। তবে আগামী দিনে সাধারণ ফোন থেকেও যাত্রীরা ওই অ্যাপের সুযোগ-সুবিধা নিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী।
কী ভাবে কাজ করবে ওই অ্যাপ?
ধরা যাক, কোনও মহিলা চলন্ত ট্রেনে বিপদে পড়েছেন। মহিলা তাঁর অ্যানড্রয়েড ফোনে ওই অ্যাপ-এ ক্লিক করে তিনি কী সমস্যায় পড়েছেন এবং কোন ধরনের সাহায্য চান, তা জানাতে পারবেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর মোবাইল থেকে বার্তা পৌঁছে যাবে রেলের সিকিওরিটি কন্ট্রোলে। চাইলে সরাসরি ফোন করেও কথা বলতে পারবেন তিনি। সে-ক্ষেত্রে কন্ট্রোলের নম্বরও টাইপ করতে হবে না। অ্যাপ-এ ক্লিক করে ‘ফোন’ অপশনে ক্লিক করলেই হবে। রেলকর্তারা জানান, ওই অ্যাপ-এ ক্লিক করেই জিপিএস-এর মাধ্যমে সিকিওরিটি কন্ট্রোল জেনে যাবে, ওই মহিলা কোথায় আছেন। সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় সাহায্য করতে পারবে তারা। মহিলা যাত্রী যদি কোনও ভাবে আক্রান্ত হন, তিনি চাইলে সেই দুষ্কৃতীর ছবিও পাঠাতে পারেন অ্যাপ-এর মাধ্যমে।
রেলের অনুষ্ঠান ছাড়াও এ দিন কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেলে বণিকসভা ভারত চেম্বার অব কমার্সের আলোচনাসভায় উপস্থিত হয়েছিলেন প্রভু। রেলে নিরাপত্তা এবং যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়টি সেখানেও তোলেন তিনি। সমালোচনার সুরে বলেন, ‘‘ছোট ছোট বিষয়। কিন্তু সেগুলি ঠিকঠাক না-রাখলে যাত্রী-পরিষেবায় স্বাচ্ছন্দ্য আসে না।’’ তাই যাত্রী-পরিষেবার বিষয়টি ঢেলে সাজার চেষ্টা চলছে বলে জানান রেলমন্ত্রী।
ভারতীয় রেল বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম রেলপথ হলেও চিন এখন অনেকে এগিয়ে। নানা ক্ষেত্রে ভারতীয় রেলের ঘাটতির সমালোচনা প্রসঙ্গে চিনা রেলের সাফল্যের তুলনা টানেন অনেকে। প্রভুর প্রশ্ন, ‘‘আইসিসিইউ-এর রোগীকে ওষুধ খাইয়েই যদি ম্যারাথন দৌড়ে সামিল করা হয়, সে কি পারবে?’’ উত্তরটা তিনিই দিয়েছেন ওই সভায়। মন্ত্রী বলেন, ‘‘চিনের সঙ্গে আমাদের রেলের তুলনা করা মোটেই ঠিক হবে না। আমরা চিনের রেলকে সামনে রেখে এগিয়ে যেতে চাই।’’ একই সঙ্গে প্রভু জানিয়ে দেন, রেলকে চাঙ্গা করতে কিছু সময় লাগবে।
গত ৩০ বছরে রেলের কোনও খাতেই কোনও অর্থ লগ্নি করা হয়নি। তার ফলেই রেল পিছিয়ে পড়েছে বলে মনে করেন প্রভু। এ বার রেলে বিনিয়োগ বাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। রেলমন্ত্রী বলেন, ‘‘এই উদ্যোগে রাজ্য সরকারগুলিকেও সামিল করা হচ্ছে। রেলের বিভিন্ন প্রকল্পে রাজ্যও যাতে বিনিয়োগ করে, সেই চেষ্টা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy