Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
India-China Clash

চিন প্রশ্নে ভারতীয় নেতৃত্ব কি হতাশ

মোদী সরকারের লক্ষ্য ছিল, শীত পড়ার আগেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা লাগোয়া ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে চিনা সেনাকে পিছু হটানো এবং পিএলএ-র সমাবেশ কমানো।

ক্রমশ খারাপ হতে শুরু করেছে লাদাখের আবহাওয়া। ছবি এএফপি।

ক্রমশ খারাপ হতে শুরু করেছে লাদাখের আবহাওয়া। ছবি এএফপি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:২৯
Share: Save:

লাদাখে আবহাওয়া ক্রমশ খারাপ হতে শুরু করেছে। চিন প্রশ্নে যেন একই রকম কুয়াশা ও হতাশা দেখা যাচ্ছে ভারতীয় নেতৃত্বের মধ্যে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের মুখে এখন সংযমের কথা। আশার কথা শোনাতে পারছেন না বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি চিন প্রশ্নে হতাশ হয়ে পড়ছে সাউথ ব্লক?

মোদী সরকারের লক্ষ্য ছিল, শীত পড়ার আগেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা লাগোয়া ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে চিনা সেনাকে পিছু হটানো এবং পিএলএ-র সমাবেশ কমানো। কিন্তু কূটনৈতিক এবং সামরিক পর্যায়ে প্রায় এক ডজনেরও বেশি দৌত্যের পরেও পরিস্থিতি যে সেই তিমিরেই, তা কার্যত স্বীকার করে নিচ্ছে সাউথ ব্লক। পাশাপাশি এটাও বলা হচ্ছে, ভারত-চিন সীমান্ত পরিস্থিতি আবার আগের মতো করে তোলা খুবই কঠিন।

সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার একটি থিংক ট্যাঙ্ককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, “আজ আমরা সম্ভবত চিনের সঙ্গে সবচেয়ে কঠিন জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছি। গত ৩০-৪০ বছর বা তারও বেশি সময়ে এতটা সমস্যাসঙ্কুল হয়নি সম্পর্ক। বেজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ককে পুরনো জায়গায় নিয়ে যাওয়া এখন খুবই বড় ব্যাপার।” তাঁর বক্তব্য, “প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর শান্তি এবং সুস্থিতি সংক্রান্ত যে-সব চুক্তি ছিল, সেগুলিকে লঙ্ঘন করার প্রশ্নে পাঁচটি আলাদা আলাদা কারণ দেখিয়েছে চিন। ফলে সব মিলিয়ে সম্পর্ক অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে চিন নিয়ে সাম্প্রতিক অতীতে সর্বদাই চড়া স্বরে কথা বলা প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ আজ আসিয়ানভুক্ত রাষ্ট্রগুলির প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে কোনও দেশের নাম না-করে, সংযত থাকার প্রস্তাবই দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “আমরা পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস এবং আস্থা যত বাড়াব, সমস্ত কাজে আত্মসংযম অভ্যাস করব, ভবিষ্যতে জটিলতা তৈরি হবে এমন কার্যকলাপ পরিহার করে চলতে পারব গোটা অঞ্চলে তত স্থায়ী হবে শান্তি।” সরকারি সূত্রের বক্তব্য, প্রতিরক্ষমন্ত্রী এই মন্তব্যের মাধ্যমে চিনের উদ্দেশে বার্তা দিতে চেয়েছেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, এর আগে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ধারাবাহিক ভাবে চিনের বিরুদ্ধে কড়া স্বরেই কথা বলতে দেখা গিয়েছে রাজনাথকে। আপাতত পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গিয়েছে বলেই কি সাউথ ব্লক কিছুটা হতাশ‒ উঠছে এই প্রশ্ন।

এত দিন বিদেশ মন্ত্রকের বিভিন্ন বিবৃতিতে চিন সম্পর্কে সরাসরি দোষারোপ করতেও শোনা যায়নি। বরং ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সীমান্ত চুক্তিগুলিকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে বারবার। আমেরিকা, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কোয়াড বৈঠকে বা সম্প্রতি দিল্লিতে আমেরিকার সঙ্গে টু-প্লাস-টু বৈঠকে চিনের নাম করে আক্রমণ করতে দেখা গিয়েছে ওয়াশিংটনকে। নয়াদিল্লি তার ধারকাছ দিয়েও হাঁটেনি। বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য ছিল, যেহেতু আলোচনার মাধ্যমে জট ছাড়ানোর চেষ্টা চলছে, বাড়তি কথায় তা ভেস্তে যেতে পারে। কিন্তু জয়শঙ্করকে গত কালের ওই সাক্ষাৎকারে বলতে শোনা গিয়েছে, “চিন আক্ষরিক অর্থেই হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করেছে সীমান্তে। স্বাভাবিক ভাবেই তাতে সম্পর্ক প্রবল ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

India-China Clash India China Ladakh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy