কুপওয়ারায় ভারতীয় সেনার টহল। ফাইল চিত্র।
এক দিকে কড়া নিষেধাজ্ঞার কবলে কাশ্মীর। অন্য দিকে কুপওয়ারায় নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে বিপুল সেনা সমাবেশ করেছে ভারত। কম্যান্ডো বাহিনীও মোতায়েন হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে খবর। দিল্লি যুদ্ধ ‘চাপিয়ে দিলে’ উপযুক্ত জবাব দেওয়ার হুমকি দিয়েছে ইসলামাবাদ।
টাংধর ও কেরন সেক্টরে মোতায়েন ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইউনিটগুলির গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি কুপওয়ারার চৌকিবাল। স্থানীয়দের দাবি, গত দু’মাস ধরে চৌকিবাল থেকে সেনার গাড়ির দীর্ঘ কনভয় যেতে দেখা গিয়েছে টাংধর ও কেরনের দিকে। চৌকিবালের বাসিন্দা ছাড়া অন্য কাউকে সে দিকে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছে না সেনা। এমনকি বাসিন্দাদের উপরেও চলছে নজরদারি।
চৌকিবাল বাজারে মুদির দোকান আছে মাংতা চিচির। ফোনে বললেন, ‘‘দু’মাস ধরে কেবল সেনার কনভয় যেতে দেখছি। আগে সেনারা জিনিস কিনতে বাজারে আসতেন। কিন্তু গত দু’মাস ধরে কেউ আসছেন না।’’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, নিয়ন্ত্রণরেখায় দু’পক্ষের গোলার লড়াই এখন প্রায় প্রাত্যহিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। চৌকিবালে ভারতীয় সেনার গোলন্দাজ বাহিনীর বিশাল ময়দান রয়েছে। সেখান থেকেই নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে পাক সেনাকে লক্ষ্য করে পাল্টা হামলা চালায় ভারতীয় সেনা। চৌকিবালের টুমনা গ্রামের বাসিন্দা আসাদ বাজাদ ফোনে বললেন, ‘‘গোলার শব্দে আমরা ঘুমোতে পারছি না।’’
বাজাদ জানাচ্ছেন, বফর্স কামান আর গোলাবারুদ নিয়ে সেনার অনেক গাড়িকে নিয়ন্ত্রণরেখার দিকে যেতে দেখা গিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘জানি না কী হচ্ছে। গত দু’মাস ধরে আমাদের সেনার ক্যান্টিনেও যেতে দেওয়া হচ্ছে না।’’
চৌকিবাল ও আশপাশের এলাকার অনেকেই সেনার মালবাহক, মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসের অস্থায়ী কর্মী ও সেনার অন্যান্য বিভাগের কাজকর্ম করেন। কিন্তু দু’মাস ধরে তাঁদের বাড়িতেই থাকতে নির্দেশ দিয়েছে সেনা। টাংধরের বাসিন্দারা প্রায়ই নানা কাজে চৌকিবালে আসেন। বাজাদের মতে, সম্ভবত টাংধরেও চলাফেরার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। তাই সেখানকার বাসিন্দারা আসতে পারছেন না।
কুপওয়ারার ডেপুটি কমিশনারের দফতর সূত্রে খবর, ওই এলাকায় উপত্যকার বাইরে থেকে প্যারা কম্যান্ডো বাহিনীর একাধিক ইউনিটকে মোতায়েন করা হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের স্পেশ্যাল অপারেশনস গ্রুপের কর্তারা জানিয়েছেন, জঙ্গি অনুপ্রবেশ রুখতেই কম্যান্ডোদের আনা হয়েছে বলে তাঁদের জানিয়েছে সেনা। সেনাবাহিনী এ নিয়ে মুখ খুলতে রাজি নয়।
এ দিনই ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে পাকিস্তান। পরমাণু অস্ত্র প্রথমে ব্যবহার না করার নীতিতে পরিবর্তন না করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। তা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিশেষ সহকারী ফিরদৌস আশিক আওয়ান বলেন, ‘‘পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু করবে না। আন্তর্জাতিক আইনও ভাঙবে না। কিন্তু ভারত যুদ্ধ চাপিয়ে দিলে সেটা আমরা শেষ করব। সেনাবাহিনীর পাশে দাঁড়িয়ে যুদ্ধ করতে সব পাকিস্তানি নাগরিক প্রস্তুত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy