প্রতীকী ছবি।
করোনার ধাক্কায় তলিয়ে গিয়েছে অর্থনীতি। আর তার জেরে এক বছরের মাথায় ব্রিটেনের কাছে ফের বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির তকমা হারানোর মুখে ভারত। শুধু তাই নয়, শনিবার বার্ষিক রিপোর্টে থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সেন্টার ফর ইকনমিক অ্যান্ড বিজ়নেস রিসার্চ (সিইবিআর) জানিয়েছে, ছ’নম্বরে পিছলে যাওয়া ভারতের আবার ওই একটি মাত্র ধাপ ফিরে পেতেই লেগে যাবে পাঁচ পাঁচটা বছর। তা-ও যদি সব কিছু ঠিকঠাক চলে তবে। যার মানে, দেশের অর্থনীতি তার দুঃসময় কাটাতে পারলে ২০২৫ সালে ফের ভারত উঠে আসতে পারে পঞ্চম স্থানে। আর ধাপে ধাপে জার্মানি ও জাপানকে টপকে ২০৩০ সালে হতে পারে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। তখন সামনে থাকবে শুধু চিন ও আমেরিকা। যদিও সিইবিআর-এর এই পূর্বাভাসেও ভারতের এগোনোর শর্ত হিসেবে কৃষি সংস্কার এবং পরিকাঠামোর মতো ক্ষেত্রে সেই সরকারি ব্যয়ের সওয়ালই করা হয়েছে। যে খরচের কথা বলছেন শিল্পকর্তা থেকে অর্থনীতিবিদ পর্যন্ত প্রায় সকলেই।
অতিমারির কারণে সঙ্কোচনের মুখ দেখেছে সারা বিশ্বের অর্থনীতি। কিন্তু তার মধ্যেই চিনের অবস্থা তুলনায় ভাল। রিপোর্ট বলছে, সব থেকে আগে সে দেশেই করোনা হানা দিলেও, তাকে কবলে এনে দ্রুত অর্থনীতিকে খুলে দিতে পেরেছে চিন। যার ফলে বিশ্বের প্রথম বৃহত্তম অর্থনীতি হওয়ার দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে বেজিং। এমনকি ২০২৮ সালে তারা টপকে যেতে পারে আমেরিকাকেও। যা হবে প্রত্যাশার চেয়ে পাঁচ বছর আগেই।
ভারতেও লকডাউনের ফলে চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে (এপ্রিল-জুন) জিডিপি কমেছে ২৩.৯%। দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) অর্থনীতি কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও, সঙ্কোচনের হার ৭.৫%। থিঙ্ক ট্যাঙ্কটির বক্তব্য, করোনার আগে থেকেই ধুঁকছিল ভারত। বিশেষত দুর্বল ব্যাঙ্কিং শিল্প, সংস্কারের অভাব এবং বিশ্ব বাণিজ্যে ভাটার টান পড়েছিল বৃদ্ধিতে। ফলে গত বছরে তা নাগাড়ে কমে দাঁড়ায় এক দশকের সব চেয়ে নীচে (৪.২%)। যা তার আগের বছরের ৬.১ শতাংশের চেয়ে কম তো বটেই, ২০১৬ সালের ৮.৩ শতাংশের প্রায় অর্ধেক।
রিপোর্টে দাবি, এই পরিস্থিতিতে চলতি করোনার হানার জেরে একেবারে মুখ থুবড়ে পড়েছে আর্থিক কর্মকাণ্ড। তলানিতে নেমেছে চাহিদা। আনলক পর্বে দেশে কাজ কিছুটা শুরু হলেও, বিদেশে চাহিদা সে ভাবে মাথা না-তোলায় তার প্রায় এক তৃতীয়াংশ এখনও ফেরেনি। অতিমারির আগের জায়গায় পৌঁছয়নি কল-কারখানার উৎপাদন। এগুলির সঙ্গেই বিভিন্ন দেশের মুদ্রার সাপেক্ষে টাকার দামের টানা পতন ব্রিটেনের পিছনে ঠেলে দিয়েছে ভারতকে।
সিইবিআর-এর মতে, এই পুরো সময়ে একমাত্র মুখরক্ষা করেছে কৃষি। সেখানে উৎপাদনের হাল তুলনায় অনেকটাই ভাল। আর তাই এই ক্ষেত্রকে জ্বালানি জোগাতে সংস্কার জরুরি। তবে কৃষকদের প্রতিবাদ-আন্দোলনের কথা মাথায় রেখে তা ধাপে ধাপে করারই পরামর্শ দিয়েছে তারা। পাশাপাশি, কেন্দ্রের ত্রাণের হার অন্যান্য দেশের তুলনায় কম হলেও, ইতিমধ্যেই জিডিপির সাপেক্ষে সরকারি ঋণ পৌঁছেছে ৮৯ শতাংশে। এই পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতে করোনার সংক্রমণ রুখতে সাফল্য এবং প্রতিষেধক অর্থনীতির দিশা ঠিক করবে বলেও মনে করে সিইবিআর। আর তাতে সফল হলে ২০২১ এবং ২০২২ সালে বৃদ্ধির হার দাঁড়াতে পারে যথাক্রমে ৯% এবং ৭%।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy