ফাইল চিত্র।
চিনের সামরিক বাড়বৃদ্ধি, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের উগ্র একাধিপত্যের বিষয়গুলি উদ্বেগে রেখেছে ওয়াশিংটনকে। সোমবার রাতে ভারতের সঙ্গে বিদেশমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে চিনকে ঠেকানোর বিষয়টি সবিস্তার উঠে এসেছে বলেই জানাচ্ছে কূটনৈতিক সূত্র। সূত্রের বক্তব্য, ‘টু প্লাস টু’ বৈঠকের অন্যতম অভিমুখ ছিল, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়ানো।
গত কাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কথার পরেই বৈঠকে বসে দু’দেশ। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, দু’দেশের মধ্যে আলোচনা শুরুর আগেই আমেরিকার প্রতিরক্ষাসচিব লয়েড অস্টিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে স্বাগত জানিয়ে স্পষ্ট বলেছেন, চিন তার প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির সার্বভৌমত্ব খর্ব করার চেষ্টা করছে। লয়েডের কথায়, “ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তাকে নষ্ট করছে বেজিং। তারা দক্ষিণ চিন সাগরে বেআইনি দাবি জানিয়েছে এবং সীমান্তবর্তী এলাকায় দ্বিমুখী পরিকাঠামো বানিয়েছে। আমরা এ ব্যাপারে ভারতের সার্বভৌম অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে তাদের পাশে রয়েছি।” সূত্রের বক্তব্য, রাজনাথ-লয়েডের আলোচনায় সবচেয়ে গুরুত্ব পেয়েছে চিনের সামরিক কৌশল এবং তার সঙ্গে পাল্লা দেওয়া নিয়ে যৌথ পরিকল্পনা তৈরির মতো বিষয়।
মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, “এই বিষয়টি অস্বীকার করার কোনও জায়গাই নেই যে, ঘরের ভিতরে একটি মস্ত হাতির মতো ঘোরাফেরা করছে চিন। তাকে এড়িয়ে যাওয়া যায় না। চিনকে রুখতে ভারত এবং আমেরিকার আলোচনায় তথ্য ভাগ করে নেওয়া, সামরিক প্রযুক্তি বিনিময়, মহাকাশে নজরদারির মতো বিষয়গুলি নিয়ে কথা হয়েছে।”
এর আগেও চিন সম্পর্কে যখন কড়া অবস্থান নিয়েছে আমেরিকা, সুরে সুর মেলায়নি ভারত। চিন ভারতের নিকটবর্তী প্রতিবেশী রাষ্ট্র। তার সঙ্গে কার্যকরী সম্পর্ক রাখা অত্যন্ত জরুরি নয়াদিল্লির জন্য। কিন্তু গত প্রায় দু’বছর ধরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন এলাকায় থানা গেড়ে বসে রয়েছে চিনা সেনা। কূটনৈতিক, সামরিক, রাজনৈতিক, বিভিন্ন স্তরের আলোচনা এবং চাপেও তাদের পিছু হটার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এটা স্পষ্ট যে, ক্রমশ ধৈর্যচ্যুতি হচ্ছে মোদী সরকারের। বিষয়টি নিয়ে সাম্প্রতিক কালে প্রকাশ্যেই কড়া অবস্থান নিতে দেখা যাচ্ছে বিদেশ মন্ত্রককে। আজ আমেরিকার সঙ্গে বৈঠকের পরে কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, ‘‘চিনের প্রসঙ্গ উঠলেই কড়া ভাষায় কথা বলছে আমেরিকা। কিন্তু চিন আমাদের নিকটবর্তী প্রতিবেশী দেশ। আমরা সমস্ত প্রতিবেশী দেশের সঙ্গেই সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চাই। সেই সঙ্গে নিজের সেনাকে শক্তিশালী করাটাও আমাদের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।’’
আমেরিকার সঙ্গে বৈঠকের পরে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেন, “ভারত-প্রশান্ত মহাসাগর এবং ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সুস্থিতি, সমৃদ্ধি এবং শান্তি বজায় রাখতে আমেরিকার সঙ্গে আমাদের অংশীদারির বিষয়টি খুবই জরুরি। বৈঠকে আমরা আমাদের প্রতিবেশী বলয় এবং ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল নিয়ে আমাদের মতামত ওয়াশিংটনকে জানিয়েছি।”
‘টু প্লাস টু’ বৈঠকের পরে যে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানে চতুর্দেশীয় অক্ষ বা কোয়াড-এর তাৎপর্যের কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই চিন-বিরোধী জোটটি ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে স্বাধীন, উদার এবং সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এগোনোর মতো জায়গায় নিয়ে যেতে পারবে বলেই উল্লেখ করা হয়েছে যৌথ বিবৃতিতে। বলা হয়েছে, ‘ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে বিশ্বের সবার মঙ্গলের জন্য শক্তিশালী করতে কোয়াড যে সিদ্ধান্তগুলি নিয়েছে, তাকে এগিয়ে নিয়ে েযতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভারত ও আমেরিকা। এ ছাড়া সাইবার নিরাপত্তা, প্রতিষেধক, মহাকাশ, পরিকাঠামো, পরিবেশের মতো বিষয় নিয়ে কোয়াডের কার্যনির্বাহী গোষ্ঠীর চলতি আলোচনাকে স্বাগত জানানো হয়েছে।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy