ওয়াং ই-র সঙ্গে এস জয়শঙ্কর। শুক্রবার হায়দরাবাদ হাউসে। ছবি পিটিআই।
এক দিকে আমেরিকার চাপের কাছে নতি স্বীকার না করে রাষ্ট্রপুঞ্জে রাশিয়া বিরোধী প্রস্তাবে বারবার ভোটদান থেকে বিরত থাকা। অন্য দিকে, বিভিন্ন মঞ্চে অবিলম্বে হিংসা বন্ধের আবেদন করে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতার জয়গান করা। শ্যাম এবং কুল রাখতে চাওয়া বিদেশনীতি এখনও পর্যন্ত চালিয়ে যাচ্ছে নয়াদিল্লি।
শুক্রবার নিউ ইয়র্কে ফ্রান্স এবং মেক্সিকোর যৌথ ভাবে আনা রাশিয়া বিরোধী এবং ইউক্রেনের ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সংক্রান্ত প্রস্তাবে ভোটাভুটি থেকে সরে দাঁড়াল ভারত। রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করার পর দু’বার মস্কো বিরোধী প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি হয়েছে। দু’বারই ভোটদানে বিরত থেকেছে নয়াদিল্লি। পাশাপাশি চিনের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর নয়াদিল্লি জানিয়েছে, কূটনীতির রাস্তায় ফেরাকেই অগ্রাধিকার দিক মস্কো। জানানো হয়েছে, এই নিয়ে
বেজিং-ও সহমত।
রাষ্ট্রপুঞ্জের ১৪০টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলেও, রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি বিরোধিতার রাস্তায় এখনও যেতে চাইছে না সাউথ ব্লক। আমেরিকার প্রবল চাপ সত্ত্বেও নয়। কিন্তু ভারতও যে নিজের যুদ্ধবিরোধী অবস্থান লঘু করছে না, সেই বার্তাও আন্তর্জাতিক শিবিরে পৌঁছে দেওয়ার দায় থেকে যাচ্ছে মোদী সরকারের। এর আগে বিষয়টি নিয়ে বারবার রাষ্ট্রপুঞ্জে মুখ খুলেছেন ভারতের স্থায়ী মিশনের প্রতিনিধি টি তিরুমূর্তি। আজ চিনের বিদেশমন্ত্রীর ওয়াং ই-র সঙ্গে বৈঠকেও বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সরব হয়েছেন। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেছেন, “চিনা বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে বিভিন্ন চলতি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমি জানিয়েছি, ভারতের বিদেশনীতির ভিত তৈরি হয়েছে আন্তর্জাতিক আইন, রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদ এবং রাষ্ট্রগুলির ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি সম্মানবোধে। বল প্রয়োগ করে বা হুমকি দিয়ে মতবিরোধ মেটানো উচিত নয়। একতরফা ভাবে স্থিতাবস্থার পরিবর্তনও করা যায় না।” তাঁর কথায়, “আমরা বিশেষ আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে চিন তার বক্তব্য জানিয়েছে। আমরাও জানিয়েছি। তবে আমরা একমত, কূটনীতি এবং সংলাপকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে।”
রাশিয়ার সঙ্গে চিনের ঘনিষ্ঠ অক্ষের কথা মাথায় রেখেই ভারত আজ ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছে বলে কূটনৈতিক শিবিরের মতামত। এখনও পর্যন্ত রাশিয়া যে ভাবে এগোচ্ছে, তাতে পিছন থেকে বেজিংয়ের পরোক্ষ মদত আছে বলেই মনে করছে আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দুনিয়া। এই অবস্থায় রাশিয়াকে হিংসা ত্যাগ করে কূটনীতির রাস্তায় ফেরানোর প্রশ্নে বেজিং অত্যম্ত গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্য ভারতের এক কথায় বেজিং মস্কোকে অস্ত্রত্যাগ করতে বলবে, বিষয়টি আদৌ সে রকম নয়। এ ক্ষেত্রে কে কার সঙ্গে কতটা দরকষাকষি করতে পারে, তার উপরেই গোটা বিষয়টি নির্ভর করছে বলে মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy