Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
Justin Trudeau

ট্রুডোর সামনে খলিস্তানি স্লোগান! কানাডার রাষ্ট্রদূতকে তলব করে কড়া প্রতিক্রিয়া জানাল ভারত

এর আগে কানাডা সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের ভিত্তিতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর খলিস্তানি জঙ্গি নিজ্জরের খুনের জন্য সে দেশের পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে ভারতকে নিশানা করেছিলেন ট্রুডো।

নরেন্দ্র মোদী এবং জাস্টিন ট্রুডো।

নরেন্দ্র মোদী এবং জাস্টিন ট্রুডো। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ২২:৪৫
Share: Save:

খলিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জরের খুনের জন্য কানাডার পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে ভারতকে নিশানা করেছিলেন তিনি। সাত মাস আগে সেই ঘটনা নিয়ে নয়াদিল্লি-অটোয়া কূটনৈতিক টানাপড়েন তৈরি হয়েছিল। এ বার কানাডার সেই প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সামনেই ‘স্বাধীন ও সার্বভৌম খলিস্তান রাষ্ট্রে’র দাবিতে স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ উঠল!

ঘটনার জেরে সোমবার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। ভারতে কানাডার রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এ বিষয়ে ‘গভীর উদ্বেগ এবং কড়া প্রতিক্রিয়া’ জানানো হয়েছে বলে বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে। প্রসঙ্গত, রবিবার টরন্টোতে ‘খালসা দিবস’ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন ট্রুডো। সেখানে তাঁর বক্তৃতার সময়ই খলিস্তানের দাবিতে স্লোগান দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই ঘটনা ভারত-কানাডা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে’।

কানাডা সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের ভিত্তিতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর খলিস্তানি জঙ্গি নিজ্জরের খুনের জন্য সে দেশের পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে ভারতকে নিশানা করেছিলেন ট্রুডো। গত জুন মাসে খলিস্তানপন্থী সংগঠন ‘খলিস্তান টাইগার ফোর্স’ (কেটিএফ)-এর প্রধান তথা কানাডার সারের গুরু নানক শিখ গুরুদ্বার সাহিবের প্রধান নিজ্জরকে গুরুদ্বার চত্বরের মধ্যেই গুলি করে খুন করা হয়। সেই ঘটনার তদন্তে ভারতের গুপ্তচর সংস্থার ভূমিকা ছিল বলে জানিয়ে ট্রুডো বলেছিলেন, ‘‘আমাদের তদন্তকারী সংস্থাগুলি এ বিষয়ে আরও বিশদে তদন্ত করছে।”

ট্রুডোর ওই মন্তব্যের পরেই নয়াদিল্লি-অটোয়া কূটনৈতিক সংঘাত তুঙ্গে উঠেছিল। প্রথমে কানাডার এক ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করা হয়। সে দেশের বিদেশমন্ত্রী মেলানি জোলি জানিয়েছিলেন, ওই ব্যক্তি ‘র’-এর কানাডার প্রধান হিসাবে দায়িত্ব সামলাতেন। ওই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় নরেন্দ্র মোদী সরকার কানাডার এক শীর্ষ কূটনীতিককে পাঁচ দিনের মধ্যে দিল্লি ছাড়ার নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি, নিজ্জর খুনের ঘটনায় দায় অস্বীকার করে ভারত।

পরবর্তী পদক্ষেপে কানাডার নাগরিকদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ জারি করা হয়। যার প্রতিক্রিয়ায় ট্রুডো সরকার ভারতে অবস্থানকারী কানাডার নাগরিকদের উদ্দেশে ‘বিশেষ নিরাপত্তামূলক সতর্কতা’ জারি করেছিল। এর পরে ট্রুডো নয়াদিল্লির সঙ্গে সুসম্পর্কের পক্ষে সওয়াল করে সাময়িক ভাবে বিতর্কে ইতি টেনেছিলেন। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারিতে কানাডার সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবাল নিউজ়’ সে দেশের গুপ্তচর সংস্থা (সরকারি ভাষায়, ‘বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা’) ‘কানাডিয়ান সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস’-এর একটি রিপোর্ট ফাঁস হয়েছে। সেই রিপোর্টে দাবি, কানাডার নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ‘অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ’ করতে পারে ভারত! যা নিয়ে নতুন করে টানাপড়েন তৈরি হয়েছে দু’দেশের।

ঘটনাচক্রে, ট্রুডো সরকারের প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী তথা বর্তমান প্রিভি কাউন্সিল প্রেসিডেন্ট হরজিৎ সিংহ সজ্জন ‘খলিস্তানপন্থী’ হিসাবে পরিচিত। তাঁর বিরুদ্ধে খলিস্তানপন্থীদের মদত দেওয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের একটি সূত্র জানাচ্ছে, নয়াদিল্লির চাপ সত্ত্বেও ট্রুডোর পক্ষে খলিস্তানপন্থীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা কঠিন, কারণ, ট্রুডো একটি সংখ্যালঘু সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যে সরকার টিকিয়ে রাখার জন্য তাঁকে সমর্থন নিতে হচ্ছে নিউ ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা জগমীত সিংহের। জগমীত নিজেও ঘোষিত খলিস্তানপন্থী।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy