— প্রতীকী চিত্র।
রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের আলোচনাসভায় নাম না করে পাকিস্তানকে তুলোধনা করল ভারত। বিশ্ব-শান্তিতে মহিলাদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা চলছিল নিরাপত্তা পরিষদে। সেখানে আলোচ্য বিষয় থেকে ঘুরে গিয়ে কাশ্মীর প্রসঙ্গ তুলে ধরার চেষ্টা করেন পাকিস্তানের প্রতিনিধি। এর পরেই প্রত্যুত্তর দেয় ভারতও। আলোচনার অভিমুখ আবার মহিলাদের ভূমিকার দিকে ফিরিয়ে আনেন ভারতের কূটনীতিক পর্বতনেনি হরিশ। পাকিস্তানেরই মানবাধিকার কমিশনের পরিসংখ্যান তুলে ধরে বুঝিয়ে দেন, সে দেশে হিন্দু, শিখ, খ্রিস্টান ও অন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মহিলারা কী পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন।
বিতর্কসভায় আলোচ্য বিষয় কাশ্মীর ছিল না। তার পরেও কাশ্মীর-প্রসঙ্গকে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের বিতর্কসভায় টেনে আনায় পাকিস্তানের সমালোচনা করেন হরিশ। অকারণে কাশ্মীর প্রসঙ্গ টেনে আনাকে ‘রাজনৈতিক অপপ্রচার’ হিসাবেই দেখছেন তিনি। ভারতের ক্ষতি করার উদ্দেশ্য নিয়েই কাশ্মীর প্রসঙ্গে উস্কানি দেওয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন হরিশ।
যদিও সরাসরি কারও নাম নেননি ভারতীয় কূটনীতিক। ‘বিতর্কসভায় উপস্থিত এক প্রতিনিধি’— এই ভাষ্যেই পাকিস্তানকে বিঁধেছেন তিনি। হরিশ বলেন, “বিতর্কসভায় উপস্থিত এক প্রতিনিধি রাষ্ট্র (ভারতের) ক্ষতি করার উদ্দেশে উস্কানি দিচ্ছে। এই ভূমিকা অতি জঘন্য। যদিও তাদের এই ভূমিকা অপ্রত্যাশিত নয়। ভুল তথ্য ছড়ানোর জন্য এটাই তাদের পরীক্ষিত পন্থা। একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা চলছে। এই মঞ্চকে ব্যবহার করে তাদের রাজনৈতিক অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা কাম্য নয়।”
কাশ্মীর প্রসঙ্গে ইসলামাবাদের খোঁচার জবাব দিয়েই আলোচনার মূল প্রসঙ্গে ফিরে আসেন হরিশ। পাকিস্তানকে মনে করিয়ে দেন, সে দেশে সংখ্যালঘু মহিলাদের পরিস্থিতির কথা। তিনি বলেন, “সে দেশে (পাকিস্তানে) হিন্দু, শিখ, খ্রিস্টান এবং অন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মহিলারা কতটা শোচনীয় অবস্থায় রয়েছেন, তা সকলেরই জানা।”
পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশনের তথ্য তুলে ধরেন ভারতীয় কূটনীতিক। হরিশ জানান, প্রতি বছর প্রায় এক হাজার সংখ্যালঘু মহিলাকে অপহরণ করে জোর করে ধর্মান্তকরণ করানো হয়। এর পর তাঁদের জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু, এ সব বন্ধ করতে পাকিস্তানের কোনও হেলদোল নেই বলেই রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের বিতর্কসভায় জানান তিনি।
সম্প্রতি কাশ্মীর উপত্যকায় বার বার রক্ত ঝরেছে। গত বৃহস্পতিবার ভারতীয় সেনার গাড়িতে হামলা হয়েছে। জঙ্গিদের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে দুই জওয়ান ও বাহিনীর দুই মালবাহকের। শুধু তা-ই নয়, নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের উপরেও হামলা চালাচ্ছে জঙ্গিরা। গত রবিবারই সোনমার্গের কাছে জঙ্গিদের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে ছ’জন শ্রমিক এবং এক চিকিৎসকের। বৃহস্পতিবার পুলওয়ামায় জঙ্গিহানায় মৃত্যু হয়েছে আরও এক শ্রমিকের। এর মধ্যে রবিবারের হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ নামে এক জঙ্গিগোষ্ঠী। উল্লেখ্য, পাকিস্তানের লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গি সংগঠন থেকেই এই নতুন জঙ্গিগোষ্ঠীর জন্ম।
উপত্যকায় জঙ্গি কার্যকলাপের আবহে চলতি সপ্তাহেই দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। প্রায় আধ ঘণ্টার বৈঠক হয়েছে উভয়ের। ওমরের পিতা তথা ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ফারুক আবদুল্লাও শুক্রবার কড়া সমালোচনা করেছেন পাকিস্তানের ভূমিকার। তাঁর মতে, দেশভাগের সময়ে কাশ্মীর পাকিস্তানের সঙ্গে না যাওয়ার কারণেই ‘বদলা’ নিচ্ছে ইসলামাবাদ। সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়া বন্ধ না করলে পাকিস্তানকে ‘মারাত্মক পরিণতি’-র জন্য প্রস্তুত থাকতেও বলেছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy