নিয়ন্ত্রণ রেখায় তৎপর ভারতীয় বাহিনী। —ফাইল চিত্র।
দাবি আর পাল্টা দাবিতে আজও দিনভর উত্তপ্ত থাকল সীমান্তের দুই প্রান্ত। এক দিকে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) দাবি করল, তাদের হামলায় এখনও পর্যন্ত মোট ১৫ জন পাকিস্তানি রেঞ্জার্সের মৃত্যু হয়েছে। উল্টো দিকে ও-পার থেকে স্পষ্ট জানানো হল, বিএসএফের এই দাবি সম্পূর্ণ ভুয়ো।
তবে সীমান্তের ও-পারের হামলায় আজ পুঞ্চ ও পাল্লানওয়ালা সেক্টরে মৃত্যু হয়েছে দুই ভারতীয় নাগরিকের। মচিল সেক্টরে আবার পাক বাহিনীর হামলায় মারা গিয়েছেন এক সেনা জওয়ান।
গত কয়েক দিন ধরেই সংঘর্ষ-বিরতি লঙ্ঘন করে জম্মু-কাশ্মীরের বিভিন্ন সেক্টরে হামলা চালাচ্ছে পাক সেনা বাহিনী। বিএসএফের অভিযোগ, পাক সেনাকে যোগ্য সঙ্গত দিচ্ছে রেঞ্জার্সরা। বিএসএফের অতিরিক্ত ডিজি অরুণ কুমার জানিয়েছেন, ও-পারে যে ধরনের অস্ত্র ব্যবহার হচ্ছে, তাতে পাক সেনা আর রেঞ্জার্সদের যোগসাজশ স্পষ্ট। জম্মু-কাশ্মীরের কাঠুয়া, পুঞ্চ আর রাজৌরি জেলায় আন্তর্জাতিক সীমান্ত ও নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর যে সেনা চৌকিগুলি রয়েছে, গত কাল রাত থেকে আজ রাত পর্যন্ত সেখানে অজস্র বার মর্টার হামলা চালিয়েছে পাক বাহিনী। ধেয়ে আসছে আধুনিক স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে গুলিও। সেনার দাবি, তার যোগ্য জবাব দিচ্ছে ভারতও। এরই মধ্যে বিএসএফ ১৫ জন পাক রেঞ্জার্সের মৃত্যুর দাবি করেছে। সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের মতো এ বারও যা অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। অরুণ কুমারের বক্তব্য, ‘‘২১ অক্টোবর কনস্টেবল গুরনাম সিংহের মৃত্যুর পর থেকেই একের পর এক পাক চেকপোস্টে হামলা চালিয়েছি আমরা। যাতে অন্তত ১৫ জন রেঞ্জার্সের মৃত্যু হয়েছে। ওরা (পাক রেঞ্জার্স) প্রকাশ্যে সেই ক্ষতি দেখাতে ভয় পাচ্ছে। কাল রাতেই ওদের বেশ কয়েকটি ওপি (অবজারভেশন পোস্ট) ধ্বংস করেছে আমাদের বাহিনী।’’
বিএসএফের আরও দাবি, গত কয়েক দিন ধরেই নিরাপত্তা বাহিনীর থেকে বেশি সাধারণ মানুষকে নিশানা করছে পাকিস্তান। আজ সকালেই কাশ্মীরের পাল্লানওয়ালা সেক্টরের খৌর বেল্টে মর্টার হামলায় মারা যান এক সাধারণ নাগরিক, আহত হন এক জন। পুঞ্চের মেন্ধার তহসিলের গোহলাদ গ্রামে মৃত্যু হয় উসমা বি নামে বছর পঞ্চাশের এক মহিলার।
পাক গোলায় বিধ্বস্ত বাড়ি। জম্মুতে। ছবি: পিটিআই।
রাতের দিকে কুপওয়ারার মছিল সেক্টরের সেনা চেকপোস্টে হামলা চালায় জঙ্গিরা। গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয়েছে এক ভারতীয় সেনা জওয়ানের। নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে ওই সেনার দেহ ছিন্নভিন্ন করে দিয়ে পালায় জঙ্গিরা। আজ সন্ধে থেকে রাতের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাদের ডজনখানেক চেকপোস্ট নিশানা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনা। এ-পার থেকেও যোগ্য জবাব দেওয়া হচ্ছে। এক জঙ্গি মারা গিয়েছে বলে জানিয়েছে সেনা।
নিয়ন্ত্রণ রেখার ও পার থেকে ছুটে আসা মর্টারের শেল দেখাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ছবি: পিটিআই।
তবে এত কিছুর মধ্যেও খাস শ্রীনগর শহরে বড়সড় জঙ্গি হামলার ছক আজ বানচাল করে দিয়েছে পুলিশ। আজই কাশ্মীরের দুই জায়গায় অভিযান চালিয়ে মোট ছয় জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শ্রীনগর থেকে গ্রেফতার করা হয় পাঁচ জনকে। আর কুলগাম থেকে ধরা পড়েছে এক জন। ধৃতদের মধ্যে এক জন আবার পুলিশ কর্মী। নাম খুরশিদ আহমেদ। সে কুপওয়ারার কারনাহ এলাকার বাসিন্দা। বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে শ্রীনগরের বাটামালু থানা এলাকার একটি গোপন ডেরায় আজ হানা দিয়েছিল পুলিশ। সেখান থেকেই পাঁচ লস্কর-ই-তইবা জঙ্গিকে ধরা হয়। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র ও বিস্ফোরক। কুলগাম জেলার ওয়ামপোরা থেকেও এক হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গি আজ গ্রেফতার হয়েছে।
আজ সন্ধেতেই আবার পুলওয়ামা জেলার নাইয়ানা বাতপোরা এলাকার একটি বাড়িতে ঢুকে পড়ে কয়েক জন সশস্ত্র জঙ্গি। ওই বাড়িরই বছর পঁয়তাল্লিশের এক মহিলাকে তারা গুলি করে পালায়। হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তাঁর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy