ফাইল চিত্র।
চলতি অগস্ট মাসে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে ভারত। এই মাসেই নিয়মের পালা মেনে ফ্রান্সের কাছ থেকে রাষ্ট্রপুঞ্জের সভাপতিত্বের দায়িত্ব এসেছে ভারতের হাতে। সেই কারণেই কূটনৈতিক মহলে গুঞ্জন রয়েছে, অগস্টে নিরাপত্তা পরিষদের সভা পরিচালনার ভার নিতে পারেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সূত্রের খবর, সমুদ্র নিরাপত্তা এবং সন্ত্রাস বিরোধিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের মঞ্চে সরব হতে চলেছে নয়াদিল্লি। উপমহাদেশে নয়াদিল্লির আশু উদ্বেগগুলিকেই সামনে নিয়ে আসবে সাউথ ব্লক। কোভিডের কারণে এ বারের বেশির ভাগ বৈঠকই হবে ভিডিয়ো মাধ্যমে।
নিরাপত্তা পরিষদের পরবর্তী বৈঠক হবে ৯ অগস্ট। রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের প্রাক্তন দূত সৈয়দ আকবরউদ্দিন আজ সকালে একটি টুইট করে জানিয়েছেন, ওই বৈঠকের সভাপতিত্ব করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আকবরউদ্দিন টুইটে আরও জানিয়েছেন, নিরাপত্তা পরিষদের ৭৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম বার ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এর আগে একাধিক বার রাষ্ট্রপুঞ্জের বৈঠক পরিচালনার ভার ভারতের হাতে পড়লেও একবারও সভাপতিত্ব করেননি ভারতের কোনও প্রধানমন্ত্রী। ১৯৯২ সালে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসিংহ রাও। তবে প্রাক্তন কূটনীতিক এই বিষয়ে টুইট করলেও এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে সাউথ ব্লকের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে ভারত স্থায়ী সদস্য না হলেও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে উঠে এসেছে বারবার। আন্তর্জাতিক নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে বারবার ভূমিকা নিয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী যদি নিজে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন, সে ক্ষেত্রে তা হবে প্রথম দৃষ্টান্ত।
সভাপতিত্বের দায়িত্ব পাওয়ার পরে রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টি এস তিরুমূর্তি বলেছিলেন, ‘যে মাসে আমরা আমাদের ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস পালন করব, সেই মাসেই রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পেলাম। এটি খুবই গর্বের বিষয়।’ তাঁর কথায়, ‘সমুদ্র পথে নিরাপত্তা বজায় রাখা আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে ঐকমত্য গড়ে তোলা খুব জরুরি।’
রাজনৈতিক সূত্রের মতে, এই মঞ্চে নিজেকে সামনে নিয়ে এসে, ভূকৌশলগত রাজনীতিতে বার্তা দিতে চান প্রধানমন্ত্রী। ভারত তার বিদেশ নীতিতে নিরাপত্তার বিষয়টিকে যে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, তা পাকিস্তানকে বোঝানোর একটি চেষ্টা হিসাবেও একে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি গত দেড় বছর পূর্ব লাদাখে চিনের সঙ্গে চলছে সংঘাতের আবহাওয়া। এখনও পিছু হঠেনি লালফৌজ। আফগানিস্তানে তালিবানি হিংসার বাতাবরণে, ভারতকে একের পর এক কনস্যুলেট বন্ধ করতে হচ্ছে সে দেশে। সব মিলিয়ে এই উত্তপ্ত ভূকৌশলগত পরিস্থিতিতে, নিরাপত্তা পরিষদে নেতৃত্ব দিতে মোদী পুরোভাগে থাকতে চাইছেন বলে মনে করা হচ্ছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে সন্ত্রাস বিরোধিতাকে আলোচনার কেন্দ্রে রাখার বিষয়টি নিঃসন্দেহে চাপ বাড়িয়েছে পাকিস্তানের। তাই কিছুটা স্বর চড়িয়ে সে দেশের বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘আশা করছি, নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতিত্ব করার সময় ভারত প্রাসঙ্গিক সমস্ত আইনকানুন মেনে চলবে।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy