এলএসিতে মোতায়েন বাহিনীর কম্যান্ডাররা যে রকম প্রয়োজন বুঝবেন, সে রকম ভাবেই পরিস্থিতির মোকাবিলা করবেন। কোনও নিষেধাজ্ঞা তাঁদের উপরে আপাতত থাকছে না।
সমঝোতা যখন মানছে না বেজিং, তখন দিল্লির আর কোনও বাধ্যবাধকতা থাকছে না। এই বাক্যটাই আপাতত শোনা যাচ্ছে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের আনাচে কানাচে। কী মানার বাধ্যবাধকতা থাকছে না? কোন সমঝোতার কথা বলা হচ্ছে? মন্ত্রকের তরফে স্পষ্ট ভাবে এই সব প্রশ্নের কোনও উত্তর কোনও কর্তাই দিচ্ছেন না। দেশের সামরিক বাহিনীর কর্তারাও উদ্ধৃত হতে নারাজ। কিন্তু প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) আপাতত বাহিনীকে ‘ফ্রি হ্যান্ড’ দেওয়া হচ্ছে— এ কথা স্বীকার করে নিচ্ছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের একাধিক সূত্র। ‘ফ্রি হ্যান্ড’ কথার অর্থ কী? অর্থ হল— বাহিনীর হাত-পা আর বাঁধা নয়, প্রয়োজন পড়লে আগ্নেয়াস্ত্রের গর্জনও শোনানো যেতে পারে ড্রাগনকে। সীমান্তে কখন কী পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে, তা দেখে সংশ্লিষ্ট কম্যান্ডারই ঠিক করবেন প্রত্যাঘাতের মাত্রা— অঘোষিত ভাবে এই রকম অনুমতিই দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর।
ভারত ও চিনের সীমান্তে অনেক দশক ধরে একটাও গুলি চলেনি। দু’দেশের মধ্যে তেমনই সমঝোতা রয়েছে। সীমান্তে যদি সঙ্ঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়, তা হলে কী ভাবে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তার সমাধান করা হবে, সে সব বিশদে নির্ধারিত হয়েছে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতার মাধ্যমেই। কিন্তু তাতে কি কোনও লাভ হয়েছে? সীমান্তে গুলি না চলুক, ভারত-চিন সীমান্ত কি আদৌ শান্ত থেকেছে? প্রশ্ন তুলছেন সেনাকর্তারাই।
ভারতীয় সেনার অবসরপ্রাপ্ত কর্তা মেজর জেনারেল অরুণ রায়ের কথায়, ‘‘অনেকে বলছেন, ৪৫ বছর ধরে ওখানে একটাও গুলি চলেনি। কিন্তু তাতে কী লাভ হল? প্রাণহানি কি ঠেকানো গেল? এত বড় সংঘর্ষ যেখানে ঘটে যাচ্ছে, এতগুলো প্রাণ যেখানে একরাতে চলে যাচ্ছে, সেখানে গুলি না চালানোর সমঝোতার কী মূল্য রয়েছে!’’
আরও পড়ুন: ছক কষে হামলা, চিনা বিদেশমন্ত্রীকে অভিযোগ জয়শঙ্করের
ঠিক এই কথাটাই বলছেন সেনায় কর্মরতরাও। সোমবার রাতে লাদাখের গলওয়ান উপত্যকায় যে ঘটনা ঘটে গিয়েছে, তার প্রেক্ষিতে বাহিনীর মধ্যে আক্রোশ বেশ তীব্র। চিনা বাহিনী বার বার সীমা লঙ্ঘন করছে, আদর্শ আচরণবিধিও (এসওপি) অনেক ক্ষেত্রেই তারা মানছে না। তা হলে সমঝোতা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলার দায় ভারতেরই বা থাকবে কেন? প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন সেনা আধিকারিকরা। সে প্রশ্ন প্রতিরক্ষা মন্ত্রক পর্যন্তও পৌঁছে গিয়েছে বাহিনীর সর্বোচ্চ মহলের মাধ্যমে, খবর সাউথ ব্লক সূত্রের। এবং তার প্রেক্ষিতে সাউথ ব্লকও এলএসি নীতি নতুন করে বিবেচনা করছে বলে খবর।
নতুন করে বিবেচনা বলতে কী? প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও একটা বা একাধিক সমঝোতা ভারত এখন থেকে আর মানবে না, এমন কোনও কথা ঘোষণা করা হবে না। কিন্তু বাহিনীকে আপাতত ‘ফ্রি হ্যান্ড’ দিয়ে দেওয়া হবে। অর্থাৎ এলএসিতে মোতায়েন বাহিনীর কম্যান্ডাররা যে রকম প্রয়োজন বুঝবেন, সে রকম ভাবেই পরিস্থিতির মোকাবিলা করবেন। কোনও নিষেধাজ্ঞা তাঁদের উপরে আপাতত থাকছে না। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে নিয়ে প্রত্যাঘাতের মাত্রা বাহিনীই স্থির করবে, দিল্লির মুখের দিকে তাকিয়ে বসে থাকতে হবে না।
সীমান্তে গুলি না চলুক, ভারত-চিন সীমান্ত কি আদৌ শান্ত থেকেছে? প্রশ্ন তুলছেন সেনাকর্তারাই।
ঘোষিত ভাবে না হলেও, এই ‘ছাড়পত্র’ কিন্তু অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। মন্ত্রকের দেওয়া এই ‘ছাড়পত্র’ বাহিনীর মনোবল লহমায় বাড়িয়ে দিতে সক্ষম বলে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। মেজর জেনারেল অরুণ রায়ের কথায়, ‘‘সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে লড়াই করার। লাঠালাঠি করার বা কুস্তির আখড়ায় যাওয়ার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় না। সুতরাং গোলমাল বাধলেও কুস্তি ছাড়া আর কিছু করা যাবে না, এমন যদি বলে দেওয়া হয়, তা হলে অবশ্যই বাহিনীর সক্ষমতাকে কমিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সেই সব বিধিনিষেধ যদি আজ কেউ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, তা হলে অবশ্যই তা বাহিনীর পক্ষে সুবিধাজনক। সেনা জানে, সেনাকে কোন পরিস্থিতিতে কী করতে হবে।’’
এলএসি নীতিতে এই পরিবর্তন কি এখনই জরুরি ছিল? বেজিং থেকে তো বার বার উত্তেজনা প্রশমনের বার্তা আসছে। গলওয়ান উপত্যকার যে অঞ্চলে সংঘর্ষ হয়েছে সোমবার রাতে, সেখান থেকে চিনা বাহিনী ফিরে গিয়েছে বলে খবর। প্যাংগং তটের ফিঙ্গার-৪-এ এখনও বসে রয়েছে লালফৌজ। কিন্তু সীমান্তে আর উত্তেজনা বাড়াতে চায় না চিন— এমন বার্তা ইতিমধ্যেই একাধিক বার প্রকাশ্যে দেওয়া হয়েছে বেজিঙের তরফ থেকে। এতে কি উত্তেজনা প্রশমনের ইঙ্গিত নেই? এখনই ড্রাগনকে আগ্নেয়াস্ত্রের গর্জন শোনানোর কি প্রয়োজন রয়েছে?
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ তথা ভারতীয় সেনার আর এক অবসরপ্রাপ্ত কর্তা কর্নেল সৌমিত্র রায় বলছেন, অবশ্যই গর্জন শোনানোর প্রয়োজন রয়েছে। চিন একেবারেই বিশ্বাসযোগ্য নয় বলে কর্নেল রায়ের দাবি। তাঁর কথায়, ‘‘হাঁস যখন জলের উপরে স্থির ভাসে, তখন তাকে দেখে খুব শান্ত মনে হয়। কিন্তু জলের নীচে ডুব দিয়ে যদি কেউ দেখেন, তা হলে দেখতে পাবেন, হাঁসটা মোটেই শান্ত নেই। তার পা দুটো অত্যন্ত চঞ্চল হয়ে নড়াচড়া করছে। চিন হল ঠিক ওই রকম। সীমান্তে উত্তেজনা কমাতে চায় বলে এখন বার বার জানাচ্ছে চিন। কিন্তু চিনকে বিশ্বাস করার কোনও অবকাশ আর নেই।’’ অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্তার মতে— ভারতীয় বাহিনী এই মুহূর্তে বড়সড় পদক্ষেপ নিতে পারে বলে চিন আশঙ্কা করছে, তাই বার বার প্রশমনের বার্তা দিচ্ছে, কিন্তু পরিস্থিতি থিতিয়ে গেলেই চিন আবার সীমান্ত লঙ্ঘন করবে।
আরও পড়ুন: গলওয়ান থেকে শিক্ষা, চিন সীমান্তে রণকৌশল বদলাচ্ছে সেনা
ভারতপন্থী প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিন একটা সম্প্রসারণবাদী রাষ্ট্র। সীমান্তে যে তারা কিছুতেই স্থিতিশীলতা বহাল থাকতে দেবে না, তা বছরের পর বছর ধরে তাদের আচরণে স্পষ্ট। মেজর জেনারেল অরুণ রায় এবং কর্নেল সৌমিত্র রায়, দু’জনেই বলছেন যে, সীমান্তটাকে স্পষ্ট ভাবে চিহ্নিত করতে চিন কিছুতেই চায় না, কারণ তাতেই চিনের সুবিধা। মেজর জেনারেল অরুণ রায়ের কথায়, ‘‘আমরা বহু বার সীমান্ত স্থায়ী ভাবে চিহ্নিত করার কথা বলেছি। বার বার চিনকে বলেছি, কত দূর পর্যন্ত তোমরা নিজেদের এলাকা বলে মনে কর জানাও, তোমাদের ম্যাপ নিয়ে এস। কিন্তু চিন কিছুতেই কোনও ম্যাপ নিয়ে আসেনি।’’ তাতে কী সুবিধা চিনের? কর্নেল সৌমিত্র রায়ের ব্যাখ্যা, ‘‘সীমান্ত চিহ্নিত করা নেই বলে চিন বার বার সীমান্ত সম্পর্কে নিজেদের বক্তব্য বদলাতে পারে। বার বার সীমা লঙ্ঘন করে ভারতীয় এলাকায় ঢুকে পড়তে পারে। সীমা লঙ্ঘন করে যত দূর এগিয়ে এল চিনা টহলদার বাহিনী, মাঝে-মধ্যে সেখানেই স্থায়ী ভাবে শিবিরও বানিয়ে ফেলে তারা। কিছুতেই পিছু হঠতে চায় না।’’
ভারতপন্থী প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিন একটা সম্প্রসারণবাদী রাষ্ট্র। সীমান্তে যে তারা কিছুতেই স্থিতিশীলতা বহাল থাকতে দেবে না, তা বছরের পর বছর ধরে তাদের আচরণে স্পষ্ট।
এই অভিযোগ কিন্তু মিথ্যা নয়। এই পরম্পরা বছরের পর বছর ধরে চলছে। কিন্তু বেজিং-এর এই প্রবণতা এবং ক্রমশ এগিয়ে আসার চেষ্টাকে রুখতে দিল্লি এখন বদ্ধপরিকর— বলছেন ভারতীয় প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। ২০১৭ সালে ডোকলামে সেই ‘সঙ্কল্পেরই প্রমাণ’ রেখেছিল ভারত, মত তাঁদের। সে বারের মতো চিন রণে ভঙ্গ দেয়। কিন্তু তার পরে আবার সীমান্তে সমস্যা শুরু হয়। কখনও উত্তরাখণ্ড, কখনও লাদাখ, কখনও সিকিম থেকে সীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ আসতে শুরু করে। বিভিন্ন এলাকায় দু’দেশের বাহিনীর মধ্যে হাতাহাতি, ধস্তাধস্তি, পাথর ছোড়াছুড়ির ঘটনাও ঘটতে থাকে। সেই সব সঙ্ঘাতেরই রক্তক্ষয়ী রূপ এ বার দেখা গেল লাদাখের গলওয়ান উপত্যকায়।
কর্নেল সৌমিত্র রায় বলছেন, ‘‘এ কথা ঠিক যে, অনেক দশক পরে সীমান্তে এমন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়াল ভারত-চিন। কিন্তু ডোকলামের পর থেকে বছর তিনেক ধরে ছোটখাটো লঙ্ঘনের আড়ালে চিন যে বড় পরিকল্পনা করছিল, তা-ও খুব স্পষ্ট হয়ে গেল। ছোটখাটো ঘটনা ঘটাতে ঘটাতে আচমকা এই ভাবে বড় কিছু ঘটানোই চিনের বরাবরের নীতি।
চিন সীমান্তে যাঁরা কাজ করেছেন কখনও না কখনও, সেই সব সেনাকর্তারা বলছেন, সীমান্তে স্থিতাবস্থা বহাল থাকতে না দেওয়ার এই চিনা নীতি কিছুতেই সফল হতে পারত না, যদি সীমান্তে আদর্শ আচরণবিধি বলবৎ না থাকত। সীমান্তে রক্তপাত ঘটতে না দেওয়ার জন্য ওই আদর্শ আচরণবিধি বা এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর) নির্ধারিত হয়েছিল। দু’দেশের সমঝোতার ভিত্তিতেই তা নির্ধারিত হয়েছিল। তাই চিন জানে, যত বারই সীমা লঙ্ঘন হোক, ভারত গুলি চালাবে না। অতএব বার বার সীমা লঙ্ঘন করতে করতে মাঝেমধ্যে কিছুটা এগিয়ে নেওয়া হবে নিজেদের এলাকা— এই নীতির রূপায়ণ মন দিয়ে করছিল চিন।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের একাধিক কর্তার মতে, চিনকে বিশ্বাস করা কঠিন। তাই গোটা এলএসি জুড়েই ক্রমশ বাড়ানো হচ্ছে সৈন্য সমাবেশ।
কিন্তু প্রশ্ন হল, সমঝোতার কারণে ভারত যেমন গুলি চালাতে পারছিল না, তেমনই চিনের উপরেও তো একই রকম বিধিনিষেধ ছিল। তা হলে ভারত কেন তার সুযোগ নিতে পারল না? চিন যে পদ্ধতিতে ভারতকে চাপে ফেলছে, ভারতও তো সেই একই পদ্ধতি অনুসরণ করে চিনকে পাল্টা চাপে ফেলতে পারত। এর উত্তরে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন— চিনের মতো সম্প্রসারণবাদী রাষ্ট্র ভারত নয়। সীমান্তে ভারত শান্তিই চায়। তাই ভারত শুধুমাত্র নিজেদের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকাকে সুরক্ষিত রাখার উপরেই জোর দিয়ে এসেছে এত দিন। কখনও চিনা এলাকা কব্জা করার কথা ভাবেনি।
এ বার কি তা হলে সে রকমও ভাববে দিল্লি? সেনাবাহিনীর প্রাক্তন উপ-প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল অভয় কৃষ্ণ বলছেন, চিনকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য রক্ষণাত্মক নীতি ছেড়ে এ বার এলএসিতে আক্রমণাত্মক নীতিই নেওয়া উচিত ভারতের। লেফটেন্যান্ট জেনারেল কৃষ্ণর কথায়, ‘‘লাদাখ হোক বা উত্তরাখণ্ড, সিকিম হোক বা অরুণাচল, এমন অনেকগুলো সেক্টর রয়েছে, যেখানে ভারতীয় বাহিনী যদি আগ্রাসন দেখাতে শুরু করে, তা হলে কিন্তু চিনকে কাঁদতে হবে। সুতরাং গলওয়ান উপত্যকা বা ফিঙ্গার-৪ ছেড়ে চিনা বাহিনী যদি ফিরতে রাজি না হয়, তা হলে ওখানে আমাদের বাহিনী যেমন মুখোমুখি দাঁড়িয়ে রয়েছে, তেমনই থাক। তার পরে অন্যান্য এলাকায় ভারত আগ্রাসন শুরু করুক, বেশ কিছু চিনা এলাকা কব্জা করুক। তার পরে দেখা যাবে, কে কোন এলাকা ছেড়ে পিছু হঠে।’’
বাহিনীর প্রাক্তন উপ-প্রধানের দ্বারা প্রস্তাবিত এই নীতি দিল্লি অনুসরণ করতে চলেছে, এমন কোনও খবর নেই। বরং কূটনৈতিক এবং সামরিক পর্যায়ে বিভিন্ন স্তরের আলোচনার পথ খোলা রাখা হচ্ছে। কিন্তু প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের একাধিক কর্তার মতে, চিনকে বিশ্বাস করা কঠিন। তাই গোটা এলএসি জুড়েই ক্রমশ বাড়ানো হচ্ছে সৈন্য সমাবেশ। মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই সাম্প্রতিক সঙ্ঘাতটা শুরু হয়েছিল। জুনের প্রথম সপ্তাহে কোর কম্যান্ডার পর্যায়ের বৈঠকে স্থির হয়, দু’দেশই বাহনী সরিয়ে নেবে সঙ্ঘাতের এলাকাগুলো থেকে। তার পরেও দু’দেশের সামরিক কর্তারা পরস্পরের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন। কিন্তু সে সবের মাঝেই সোমবার রাতে গলওয়ান উপত্যকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটে গেল। চিনের অভিযোগ, ভারতই চিনা এলাকায় ঢুকে হামলা করেছে। কিন্তু নয়াদিল্লির কর্তারা বলছেন, হামলা চিনই করেছে এবং এই হামলা আচমকা তৈরি হওয়া কোনও পরিস্থিতির ফসল নয়, বরং সুপরিকল্পিত। সুতরাং এখন চিন উত্তেজনা প্রশমনের বার্তা দিলেও সামরিক প্রস্তুতি শিথিল করতে রাজি নয় দিল্লি। উত্তেজনা প্রশমনের বার্তা দিয়েও সীমান্তের ও পারে চিন কী ভাবে সামরিক প্রস্তুতি বাড়াচ্ছে, সে দিকেই বরং দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন দিল্লির কর্তারা। যে কোনও পরিস্থিতিতে ‘যথোচিত জবাব’ দিতে ভারত প্রস্তুত— বুধবার খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই মন্তব্য করেছেন। অতএব রক্তক্ষয় এড়াতে এলএসিতে বাহিনীর উপর বিধিনিষেধর আরোপ করে রাখার নীতি যে আপাতত কার্যকরী নয়, দিল্লির নানা পদক্ষেপেই সে বার্তা স্পষ্ট।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল অভয় কৃষ্ণ যে নীতি নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন, ততটা আক্রমণাত্মক ভারত এখনই হবে কি না, স্পষ্ট নয়। কিন্তু এই মুহূর্তে সীমান্তে উত্তেজনা বাড়লে ভারতীয় বাহিনী যে চূড়ান্ত সংযম দেখাবে না, তা বেশ পরিষ্কার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy