সমাজবাদী পার্টির ফৈজ়াবাদের সাংসদ অবধেশ প্রসাদ। —ফাইল চিত্র।
বিরোধীদের ডেপুটি স্পিকার প্রার্থী হিসাবে আজ সিলমোহর পড়ল সমাজবাদী পার্টির ফৈজ়াবাদের সাংসদ অবধেশ প্রসাদের নামে।
রবিবার সকাল থেকে চলল ‘ইন্ডিয়া’র বিভিন্ন দলনেতাদের মধ্যে ফোনে কথোপকথন। প্রাথমিক ভাবে আগেই কংগ্রেস, তৃণমূল এবং এসপি-র নেতাদের মধ্যে ডেপুটি স্পিকার পদে প্রার্থী হিসাবে ফৈজ়াবাদের সাংসদ অবধেশ প্রসাদের নাম স্থির হয়েছিল। তৃণমূলের দাবি, নামটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রস্তাবিত এবং তৃণমূলই এসপি ও কংগ্রেসকে অবধেশকে দাঁড় করিয়ে বিজেপি-র বিরুদ্ধে জোরালো বার্তা দেওয়া দেওয়ার কথা বলে। রাজনৈতিক শিবিরের খবর, আজ শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে দফায় দফায় ডেপুটি স্পিকার পদটি নিয়ে প্রায় তিন ঘণ্টা আলোচনা হয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বের। পাশাপাশি কথা হয়েছে এনসিপি, ডিএমকে, আপ, সিপিআই (এমএল)-এর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গেও। সূত্রের খবর, প্রত্যেকেই এই নামটিতে সিলমোহর তো দিয়েছেনই, সাধুবাদ জানিয়েছেন অবধেশকে দাঁড় করানোর চিন্তাকে। সিপিআইএমএল-এর দীপঙ্কর ভট্টাচার্য-সহ প্রত্যেক বিরোধী নেতাই বিষয়টিকে ‘দুর্দান্ত’ হিসেবে অভিহিত করেছেন বলে দাবি তৃণমূলের।
‘ইন্ডিয়া’র পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে, নাম বাছাইয়ের ক্ষেত্রে চারটি বিষয়কে মাথায় রাখা হয়েছিল। এক, তা যেন গড়পরতা নামের বাইরে অর্থাৎ ‘আউট অব দ্য বক্স’ হয়। দুই, সমাজের অনগ্রসর শ্রেণির প্রতি স্পষ্ট বার্তা দেওয়া যায়। তিন, যে হেতু স্পিকার পদে কংগ্রেসের প্রার্থী (কে সুরেশ) দেওয়া হয়েছিল, ডেপুটি স্পিকার পদের প্রার্থী জোটের কমবেশি কুড়িটি দলের যে কোনও একটি থেকে দেওয়া বাঞ্ছনীয়। চার, প্রার্থীর নামে যেন বিজেপির হৃদকম্প হয়।
মঞ্চের দাবি, অবধেশের নাম বাছাই করায় এই সবক’টি শর্তই পূরণ হয়েছে। আগামিকাল অধিবেশন বসলে নিজেদের মধ্যে আরও আলোচনা হবে, কিন্তু সেই আলোচনা হবে মূলত কবে ডেপুটি স্পিকার পদে নির্বাচন চেয়ে স্পিকারকে চিঠি দেওয়া যায়, কী ভাবে চাপ বাড়ানো যায় সে সব নিয়ে। সূত্রের দাবি, অবধেশের নামে ঐকমত্য হওয়ার আর বাকি নেই। প্রত্যেকেই স্বাগত জানিযেছেন তাঁকে। তবে প্রায় সব বড় দলের সঙ্গে কথা বললেও সিপিএম বা সিপিআই-এর সঙ্গে এখনও কথা হয়নি তৃণমূল নেতৃত্বের। তবে তাঁরা আশা করছেন, বাম দলগুলিও এই নামকে সমর্থনই করবেন। বিরোধীরা মনে করছেন, অবধেশ বিজেপির মেরুকরণ তথা উগ্র হিন্দুত্বের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতীক হয়ে গিয়েছেন। তাঁকে এ ভাবে সামনে নিয়ে এলে তা বিজেপির অস্বস্তি অনেকটাই বাড়াবে।
তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার জন্য রামমন্দির নির্মাণ ও রামলালার মূর্তি প্রতিষ্ঠাকে নির্বাচনী বৈতরণী পারের কড়ি হিসেবে ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর দলের নেতারা। কিন্তু অযোধ্যা যে লোকসভার অন্তর্গত, সেই ফৈজ়াবাদ কেন্দ্রেই সমাজবাদী পার্টির এই দলিত প্রার্থীর কাছে পরাজিত হতে হয়েছে বিজেপিকে। অযোধ্যার হার এখনও হজম করতে পারেনি বিজেপি। চলছে দলীয় ময়নাতদন্ত। ইন্ডিয়া জোট শিবিরের বক্তব্য, ডেপুটি স্পিকার নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থী যাঁকেই করা হোক, লোকসভায় সংখ্যার হিসাবে পরাজয় অনিবার্য। কিন্তু জয়-পরাজয়টা এখানে বিবেচ্য নয়। অবধেশকে দাঁড় করিয়ে একটি জোরালো বার্তা দেওয়া যাবে বলেই মনে করছেন বিরোধীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy