লাদাখের বিভিন্ন এলাকা থেকে সেনা সরাচ্ছে ভারত-চিন দু’দেশই। ছবি: সংগৃহীত।
সঙ্ঘাত বহালই। তবে, কমতে শুরু করল উত্তাপ। লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) বরাবর যে পরিমাণ সৈন্য সমাবেশ করেছিল ভারত ও চিন, তা কমতে শুরু করল। গলওয়ান উপত্যকা-সহ যে সব এলাকায় সঙ্ঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, সেগুলির অধিকাংশ থেকেই বাহিনী প্রত্যাহার করে নিল দু’পক্ষই— খবর সেনা সূত্রের। চিনের বাহিনী সঙ্ঘাতের এলাকা থেকে বেশ কয়েক কিলোমিটার পিছিয়ে গিয়েছে বলে মঙ্গলবার খবর এসেছে। ভারতীয় বাহিনীকেও পিছিয়ে আনা হয়েছে একই ভাবে।
গলওয়ান উপত্যকা, প্যাংগং তট-সহ একাধিক এলাকায় মুখোমুখি সৈন্য সমাবেশ করেছিল ভারত ও চিন। মে মাসের শুরুর দিকে উত্তর সিকিম থেকে পূর্ব লাদাখের মধ্যে বেশ কয়েকটি জায়গায় চিনা বাহিনীর বিরুদ্ধে এলএসি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে। যে সব এলাকা থেকে লঙ্ঘনের অভিযোগ এসেছিল, সেই সব এলাকায় ভারতী বাহিনী বাধাও দিয়েছিল চিনকে। ফলে দুই বাহিনীর মধ্যে হাতাহাতি বা মারামারির খবরও আসছিল।
মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়। কারণ গলওয়ান উপত্যকা, প্যাংগং তট সংলগ্ন এলাকা-সহ একাধিক জায়গায় এলএসি লঙ্ঘন করে চিনা বাহিনী এগিয়ে এসেছিল এবং অস্থায়ী ছাউনি বানিয়ে ফেলেছিল বলে খবর। কোন এলাকায় চিন ঠিক কতটা ঢুকেছে, সে বিষয়ে সরকার বা সেনার তরফে স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। কিন্তু যেখানে যেখানে আগ্রাসনের চেষ্টা হয়েছে, সেই প্রতিটি এলাকাতেই পাল্টা সৈন্য সমাবেশ ভারত করেছে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণেই করেছে— এমন জানা যাচ্ছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে।
আরও পড়ুন: ‘করোনা এক্সপ্রেসেই’ মমতার প্রস্থান: ভোট-দামামা বাজিয়ে দিয়ে চ্যালেঞ্জ শাহের
এলএসি-তে এই উত্তেজনা কমাতে অবশ্য দু’পক্ষই সক্রিয় হয়। নয়াদিল্লি এবং বেজিঙের মধ্যে কূটনৈতিক প্রক্রিয়া তো চলছিলই। তার পাশাপাশি গত শনিবার অর্থাৎ ৬ মে কোর কম্যান্ডার পর্যায়ের বৈঠকেও বসে দুই বাহিনী। সেই বৈঠক যাতে উপযুক্ত পরিবেশে হতে পারে, তা নিশ্চিত করতে লাদাখের একটি এলাকায় এলএসি থেকে বাহিনী প্রত্যাহার করেছিল দু’দেশই। আগামী কাল অর্থাৎ বুধবার, দুই বাহিনীর মধ্যে আবার বড় বৈঠক হওয়ার কথা। তার আগের দিনই দুই দেশ ফের কিছুটা বাহিনী প্রত্যাহার করেছে বলে খবর।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, গলওয়ান উপত্যকা-সহ যতগুলি এলাকায় সঙ্ঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, এই মুহূর্তে সেগুলির প্রায় সব ক’টি থেকেই ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে বাহিনী। ভারত এবং চিন, দু’পক্ষের বাহিনীই সঙ্ঘাতের এলাকাগুলি থেকে ৩-৪ কিলোমিটার করে পিছিয়ে গিয়েছে বলে এ দিন জানা গিয়েছে।
আলোচনা যে ফল দিচ্ছে এবং কোনও দেশই যে সামরিক সঙ্ঘাত চাইছে না, ধীরে ধীরে বাহিনী প্রত্যাহার তারই ইঙ্গিত বলে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মত। বুধবার দুই বাহিনীর মধ্যে যে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হওয়ার কথা, তার পরিবেশ আরও অনুকূল হল বলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। তবে প্যাংগং তট কিন্তু এখনও পুরোপুরি শান্ত নয়। প্যাংগং-এর উত্তরে ফিঙ্গার ফোর এলাকায় চিনা বাহিনী যে অস্থায়ী শিবির তৈরি করেছিল, তা এখনও বহাল বলে জানা যাচ্ছে। ফলে মুখোমুখি অবস্থানে মোতায়েন রয়েছে ভারতীয় বাহিনীও। অতএব বুধবারের বৈঠকের দিকেই এখন নজর সব পক্ষের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy