বন্যা প্রতিরোধে ভারতের সীমান্তবর্তী জেলাগুলির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণে চুক্তি করল ভুটান সরকার। জলপাইগুড়ির চালসাতে রাজ্যের সীমান্তবর্তী জেলাগুলির সঙ্গে ভুটান সরকারের দু’দিনের সমন্বয় বৈঠক শেষ হল শুক্রবার। শেষ দিনে দুই প্রশাসনের মধ্যে বেশ কিছু চুক্তি হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হল, বন্যা প্রতিরোধে যৌথ উদ্যোগের চুক্তি।
জলঢাকা, রায়ডাক থেকে শুরু করে শীলতোর্সা, বেসরা, পাগলি-সহ একাধিক নদীতে ভূটান থেকে নেমে আসা জলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। উত্তরবঙ্গের প্রশাসনের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, ভুটানে বৃষ্টিপাতের সঠিক তথ্য মেলে না এবং ভুটানে নদীগুলি ডলোমাইট সহ নানা কারণে ভরাট হয়েছে। যার ফলে হড়পা বানের আশঙ্কা বেড়েছে। ওপারে নদীতে জলধারণ ক্ষমতাও কমেছে। তাতেও বাড়ে বন্যার আশঙ্কা।
এ দিন হওয়া চুক্তিতে যৌথ ভাবে বন্যা মোকাবিলার পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভুটানে বৃষ্টিপাতের সরাসরি (রিয়েল টাইম) তথ্যও উত্তরবঙ্গের সেচ বিভাগকে দেওয়া হবে বলে চুক্তি হয়েছে সে দেশের সঙ্গে। এ ছাড়াও অপরাধ সংক্রান্ত তথ্য বিনিময়ের চুক্তিও হয়েছে। চালসার একটি অভিজাত হোটেলে এই বৈঠক চলেছে দু দিন ধরে।
উত্তরবঙ্গের বিভাগীয় কমিশনার সহ জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারের জেলাশাসক বৈঠকে ছিলেন। বন, সেচ এবং এসএসবির প্রতিনিধিরাও ছিলেন। উত্তরবঙ্গে কোনওএ অপরাধ করে অভিযুক্ত সে দেশে পালিয়ে গিয়েছে অথবা ভুটান থেকে এসে উত্তরবঙ্গে কেউ আত্মগোপন করেছে এমন আকছার হয়। অপরাধ দমনে এবং অভিযুক্তদের খুঁজতে অপরাধ তথ্য বিনিময়ের
চুক্তি হয়েছে।
আবার ভূটান হয়ে বন্যপ্রাণীর দেহাংশ উত্তরবঙ্গে ঢোকে, সাপের বিষ সহ নানা প্রাণীজ সামগ্রী ভুটানে যায়। বন্যপ্রাণীর দেহাংশ পাচার রুখতে যৌথ নজরদারি হবে সে জন্য এই সংক্রান্ত তথ্য বিনিময়ও হবে।
গাঁজা সহ মাদক চোরাচারাল রোধেও যৌথ অভিযান হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জলপাইগুড়ির জেলা পুলিশ সুপার উমেশ খন্ডবহালে বলেছেন, “অপরাধ সংক্রান্ত তথ্য বিনিমনয় থেকে বন্যা প্রতিরোধ সব বিষয় নিয়েই আলোচনবা হয়েছে, চুক্তিও হয়েছে। আশা করছি আলোচনবার ফলাফল দ্রুত মিলবে।” ভুটানে সরকারি স্তরের পুলিশ প্রশাসনিক আধিকারিকেরা বৈঠকে ছিলেন। বৈঠকের পরে সংবাদমাধ্যমে যৌথ বিবৃতি অবশ্য দেওয়া হয়নি।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)