এখানেই চলেছিল গুলি। । শুক্রবার। পিটিআই
কুখ্যাত দুষ্কৃতী বিকাশ দুবেকে গ্রেফতার করতে গিয়ে তার সহযোগীদের গুলিতে নিহত হলেন আট পুলিশকর্মী। বৃহস্পতিবার রাতে উত্তরপ্রদেশের কানপুরে বিকারু গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন এক জন ডেপুটি পুলিশ সুপার, তিন জন সাব ইনস্পেক্টর এবং চার জন কনস্টেবল। আহত আরও চার পুলিশকর্মী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আহতদের মধ্যে এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পুলিশের পাল্টা গুলিতে নিহত হয়েছে দুই দুষ্কৃতী।
সম্প্রতি একটি খুনের মামলায় ফের নাম জড়ায় বিকাশের। সেই সূত্রেই কাল রাতে বিকাশকে গ্রেফতার করতে চৌবেপুর থানার বিকারু গ্রামে যায় পুলিশ। রাস্তা আটকায় দুষ্কৃতীরা। গাড়ি থেকে নেমে পুলিশবাহিনী
গ্রামের দিকে ঢুকতেই দুষ্কৃতী দলটি ঘিরে ফেলে তাদের। তার পরেই বিকাশের নেতৃত্বে দুষ্কৃতীরা একটি বাড়ির ছাদ থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি চালায়। দুষ্কৃতীদের প্রত্যেকের কাছে একে-৪৭ ছিল বলে জানা গিয়েছে। তাতে ডেপুটি সুপার দেবেন্দ্র মিশ্র, সাব ইনস্পেক্টর মহেশ যাদব, অনুপ কুমার, কনস্টেবল সুলতান সিংহ, রাহুল, জিতেন্দ্র ও বাবুল গুরুতর আহত হন।
খবর পেয়েই ওই পুলিশকর্মীদের উদ্ধারে কানপুরের এডিজি জয় নারায়ণ সিংহ এবং কানপুরের আইজি মোহিত আগরওয়ালের নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। আসরে নামে স্পেশাল টাস্ক ফোর্সও। তত ক্ষণে অবশ্য চম্পট দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। গুরুতর আহতদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে আট জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ফরেন্সিক দলও।
আরও পড়ুন: ‘ট্রোজান হর্স’! বিদ্যুৎক্ষেত্রে চিনা সরঞ্জাম আমদানি নয়
আরও পড়ুন: আবার ফিরল সেই টাকা ফেরানোর দৃশ্য, ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হচ্ছে কি? ধন্দ তৃণমূলেই
ঘণ্টাখানেক পরে কানপুর পুলিশ জানায়, পুলিশের পাল্টা গুলিতে দু’জন দুষ্কৃতী নিহত হয়েছে। এই ঘটনায় দুবের আত্মীয় প্রেমপ্রকাশ পান্ডে ও তার সহকারী অতুল দুবেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে পুলিশের একটি পিস্তল এবং দেশি বন্দুক উদ্ধার হয়েছে।
এই ঘটনায় ফের শিরোনামে কুখ্যাত দুষ্কৃতী বিকাশ দুবে। নব্বইয়ের দশকে অপরাধ জগতে প্রবেশ বিকাশের। খুন, ডাকাতি, অপহরণ, গোষ্ঠী সংঘর্ষে মদত-সহ ৬০টিরও বেশি মামলা রয়েছে তার নামে। ২০০০ সালে তারাচাঁদ ইন্টার কলেজের প্রিন্সিপাল সিদ্ধেশ্বর পাণ্ডেকে খুনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ২০০১ সালে থানায় ঢুকে রাজনাথ সিংহ সরকারের মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা সন্তোষ শুক্লকে খুনের ঘটনায় তার নাম জড়ানোর পর থেকেই বিকাশ হয়ে ওঠে কানপুরের অপরাধ জগতের কর্ণধার। ২০০২ সালে মায়াবতী মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে বিএসপি-তে যোগ দেয় সে। তার রাজনীতিতে যোগদানের পরে বিলহারম, শিররাজপুরী, রানিয়ার মতো এলাকা হয়ে ওঠে অপরাধীদের মুক্তাঞ্চল। পরে পঞ্চায়েত ভোটেও জেতে বিকাশ।
পুলিশকর্মীদের মৃত্যুতে আজ শোকপ্রকাশ করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। গোটা ঘটনার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তলব করে ডিজিপি এইচ সি অবস্তীকে কড়া পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এই ঘটনায় ফের বিরোধীদের তোপের মুখে যোগী সরকার। ২০২২-এর নির্বাচনকে সামনে রেখে দিল্লির বদলে লখনউয়ে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। উত্তরপ্রদেশের মাটিতে পা রাখার আগেই এই ঘটনা নয়া অস্ত্র তুলে দিল প্রিয়ঙ্কার হাতে। আজ তিনি টুইটারে জানান, আমজনতা ও পুলিশ কেউই সুরক্ষিত নন। পাশাপাশি যোগীকে নিশানা করে জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। এই ভয়াবহ ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ করা প্রয়োজন। নিহতদের উদ্দেশে শোক জানিয়ে রাহুল গাঁধীও আঙুল তুলেছেন রাজ্য সরকারের দিকে। তাঁর টুইট, ‘‘উত্তরপ্রদেশে গুন্ডারাজের আরও এক প্রমাণ এই ঘটনা। পুলিশই যখন সুরক্ষিত নন, সেখানে আমজনতার অবস্থা কী?’’
পুলিশকর্মীদের মৃত্যুর ঘটনাকে সবচেয়ে লজ্জাজনক হিসেবে চিহ্নিত করে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা এসপি প্রধান অখিলেশ যাদব জানান, শাসক দল এবং অপরাধীদের যোগসাজশের ফল ভুগতে হল কর্তব্যনিষ্ঠ পুলিশকর্মীদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy