মঙ্গলবার শিলঙে রাজনৈতিক সমাবেশে এক সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
মেঘালয়ের কর্মী সম্মেলনে দলের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন মেঘালয়ের নেতৃত্ব তৈরি। তাই দল মেঘালয়ে ক্ষমতায় এলে তিনি ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল সরকারকে পরামর্শ দেবেন। মঙ্গলবার শিলঙের সেন্ট্রাল লাইব্রেরি হলে আয়োজিত কর্মিসভায় সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই মেঘালয় নিয়ে তাঁর ভাবনার কথা খোলসা করেন উপস্থিত তৃণমূল কর্মীদের সামনে।
মমতা বলেছেন, ‘‘মেঘালয়ের মানুষ মেঘালয় শাসন করবে। আমি ও অভিষেক আপনাদের পরামর্শ দেব। ক্ষমতা থাকবে মেঘালয়ের মানুষের হাতে। অভিষেক আপনাদের সঙ্গে থেকেই কাজ করবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিজেপিকে প্রশ্ন করছি, উত্তর পূর্বাঞ্চল ও মেঘালয়ের উন্নয়ন হয়নি কেন? দিল্লি বা অসমের কোনও বাইরের লোক এসে মেঘালয় চালাবে না। মেঘালয় চালাবেন মেঘালয়ের মানুষ।’’ প্রসঙ্গত, বাংলায় বসে বিজেপির গুজরাতি নেতৃত্বের দেশশাসনের বিরুদ্ধে একাধিক বার আক্রমণ শানিয়েছেন তিনি। এ বার মেঘালয়ে গিয়ে নিজের কৌশলে বদল আনলেন মমতা।
বিজেপি নেতৃত্ব উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজনীতিতে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার মতামতকে বিশেষ গুরুত্ব দেন। জাতীয় রাজনীতিতে এ কথা কারও অজানা নয়। সেই বিষয়টি মেঘালয়বাসীকে স্মরণ করিয়ে দিতে চেয়েছেন মমতা। তাই তিনি তাঁর বক্তৃতায় যেমন মেঘালয়ের রাজনীতিতে বিজেপির দিল্লি ও অসম নেতৃত্বকে নাক না গলানোর কথা বলেছেন, তেমনই তৃণমূল নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় এলে তিনি বা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক যে কেবল মাত্র নিজেকে পরামর্শের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখবেন, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা।
এমন কথা বলেই গোয়ায় তৃণমূলের ভরাডুবির কথা উল্লেখ করেছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘গোয়ায় আমাদের নেতৃত্ব তৈরি ছিল না। কিন্তু মেঘালয়ে আমাদের নেতৃত্ব তৈরি। মুকুল সাংমা আছেন, চার্লস আছেন। কে বলতে পারে আগামী দিনে এরাই মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী হবেন না।’’ তাঁর দল ক্ষমতায় এলেই যে লক্ষ্মীর ভান্ডারের ধাঁচে প্রকল্প শুরু করবে সেই ঘোষণাও সভামঞ্চ থেকেই করে দিলেন মমতা। জানালেন, আমার রাজ্যে লক্ষ্মীর ভান্ডার চালু করেছি। ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। তফসিলি জাতি ও জনজাতির লোকেদের ১০০০ টাকা ও সাধারণদের ৫০০ টাকা করে দেওয়া হয়। মেঘালয়ে ক্ষমতায় এলেও এই প্রকল্প চালু করা হবে। ১০০০ টাকা করে মহিলাদের দেওয়া হবে।’’
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে মহিলাদের ভূমিকাই বেশি। সে কথা উল্লেখ করে মমতা বলেছেন, ‘‘উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে মহিলাদের ভূমিকা বেশি। আমরা ক্ষমতায় এলে মহিলা ক্ষমতায়নে কাজ করব।’’
তাঁর বা তৃণমূলের বাঙালি পরিচিতি খণ্ডন করতে আবার বিশেষ কৌশল নেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলকে বাঙালিদের দল বলে প্রচার করা হচ্ছে। তা হলে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের গান গাও কেন? রবীন্দ্রনাথ অনেক বার মেঘালয়ে এসেছিলেন। তাঁর লেখা গান জাতীয় সঙ্গীত। সবাই সেই গান করেন, তখন কী বলেন তিনি বাঙালি। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু বাঙালি ছিলেন, তাঁর দেওয়া স্লোগান জয় হিন্দ সবাই দেন। তাই কেন আমাকে বা আমার দলকে বাংলার বলা হচ্ছে।’’ বিজেপিকে আক্রমণ করে তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘সবাইকে ভাষা ও জাতি নিয়ে ভাগ করবেন না। বিজেপিকে হারিয়ে দেখিয়ে দিয়েছি। বিজেপিকে কী ভাবে হারাতে হয় তা আমরা জানি। কারণ বাংলায় এমন হারিয়েছিল কখনও ভুলবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy