অমরনাথ যাত্রা করে এসে হায়দরাবাদের প্রৌঢ় চান আরও তীর্থস্থান দর্শন করতে। —ফাইল চিত্র।
নির্মীয়মাণ আবাসনের একটা অংশ ভেঙে পড়েছিল তাঁর উপর। বাঁচার কোনও আশা ছিল না। দীর্ঘ ক্ষণ ইট-সিমেন্টের নীচে চাপা পড়ে ছিলেন তিনি। ৫৩ বছরের শ্রীনিবাস রেড্ডিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তিনি যে বেঁচে যাবেন, এটাই অনেকে বিশ্বাস করতে পারেননি। যেমন অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য ঠেকছে শ্রীনিবাসের কোমা থেকে উঠে অমরনাথ যাত্রা সেরে আসার কথা। হ্যাঁ, প্রায় দু’বছর বিছানায় পড়ে থাকার পর অমরনাথ যাত্রা শেষ করে এসেছেন ওই প্রৌঢ়। তাঁর ইচ্ছা, একের পর এক তীর্থস্থান ভ্রমণ করে আসবেন।
২০২১ সালে দৌলতাবাদে নিজের বাড়ি সংস্কারের কাজ করাচ্ছিলেন শ্রীনিবাস। সে বছরের ১৭ মে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে কর্মীদের নির্দেশ দিচ্ছিলেন। ঠিক তখনই দুর্ঘটনা। বাড়ির একাংশের চাঙড় ভেঙে পড়ে হুড়মুড় করে। তার পর একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন শ্রীনিবাস। কোমায় ছিলেন দীর্ঘ দিন। সেই তিনিই অমরনাথ যাত্রা সেরে এসেছেন কয়েক দিন আগে। শ্রীনিবাসের নিজের কথায়, ‘‘হঠাৎ কংক্রিটের চাঙড় ভেঙে পড়ে আমার উপর। সংজ্ঞা হারাই আমি। রক্তাক্ত অবস্থায় আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। মেরুদণ্ডে আঘাত লাগে। অনেক দিন কোমায় ছিলাম।’’
দীর্ঘ দিন কোমায় থাকা সেই শ্রীনিবাস মাস কয়েক হল সুস্থ হয়েছেন। হাঁটতেও পারেন দিব্যি। এখন তিনি নিয়ম করে রোজ আট কিলোমিটার হাঁটেন। লাফঝাঁপও দেন। শ্রীনিবাসের কথায়, ‘‘চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, আমার আর এক শতাংশও বাঁচার সম্ভাবনা নেই। সেই আমি এখন নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে আছি। হাঁটছি। এ তো অলৌকিক!’’ শ্রীনিবাসের দাবি, ঈশ্বরের ইচ্ছায় তিনি বেঁচে উঠেছেন। তাই সুস্থ হয়ে অমরনাথ যাত্রায় বার হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বারাণসী, শ্রীশৈলম-সহ পাঁচটি জ্যোতির্লিঙ্গ ক্ষেত্র দর্শন করে এসেছেন শ্রীনিবাস। তাঁর ইচ্ছা, আরও বেশ কিছু তীর্থক্ষেত্র ঘুরে আসবেন। সংবাদমাধ্যমকে প্রৌঢ় বলেন, ‘‘যখন প্রথম উঠে দাঁড়ালাম, বাচ্চাদের মতো হাঁটতাম। এক পা-দু’পা করে এগিয়েছি। ফিজিয়োথেরাপি রুটিন মেনে চলেছি। ভগবানের ইচ্ছায় দু’মাস আগে অমরনাথ ঘুরে এসেছি। এখন আমার স্বপ্ন সমস্ত তীর্থক্ষেত্র ঘুরে দেখা।’’
শ্রীনিবাসের চিকিৎসকের জানান, হাঁটাচলা তো দূরের কথা, নড়াচড়ারও শক্তি ছিল না ওঁর। তবে বলতেই হবে, বাঁচার প্রবল ইচ্ছা ছিল ওঁর। চিকিৎসায় সাড়া দিয়েছেন। দীর্ঘ সময় কোমায় ছিলেন। সংজ্ঞা ফিরে আসার পর খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠেছেন উনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy