বিবিসির তথ্যচিত্র নিয়ে মোদীর পাশেই শাহ। — ফাইল ছবি।
যতই ষড়যন্ত্র করুন, সত্যকে দীর্ঘ দিন ধামাচাপা দিয়ে রাখা যায় না। সত্য বেরোবেই। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিবিসির তথ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’ প্রসঙ্গে এমনই প্রতিক্রিয়া দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর দাবি, ২০০২ সাল থেকেই নরেন্দ্র মোদীর পিছনে লেগে আছে ইংল্যান্ডের ওই সংবাদমাধ্যম।
সাক্ষাৎকারে শাহ বলেন, ‘‘হাজারো ষড়যন্ত্র করেও সত্যকে চাপা রাখা যায় না। ওরা তো মোদীর পিছনে ২০০২ সাল থেকে লেগে আছে। কিন্তু প্রতি বারই মোদীজি আরও শক্তিশালী, আরও জনপ্রিয় হয়ে বেরিয়ে এসেছেন।’’
২০০২ সালে গুজরাতে সাম্প্রদায়িক হিংসার সময় মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অভিযোগ, সেই সময় হিংসা রুখতে না পারার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তা। যে নিষ্ক্রিয়তার পিছনে বিশেষ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য খুঁজে পান বিরোধীরা। ‘ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন’ (বিবিসি)-এর সাম্প্রতিক তথ্যচিত্রেও তেমনই কাহিনি ধরা আছে। যা নিয়ে দেশে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। তার আঁচ গিয়ে পড়ে বিদেশেও। ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ আখ্যা দিয়ে ওই বিতর্কিত তথ্যচিত্র যাতে কেউ না দেখতে পান, তা নিশ্চিত করতে মোদী সরকার সমস্ত সমাজমাধ্যমে ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’ তথ্যচিত্রটি মুছে দেওয়ার ফরমান জারি করে। টুইটারকে সেই সংক্রান্ত সমস্ত টুইট মুছে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ইউটিউবকে নির্দেশ দেওয়া হয় ভিডিয়োটি মুছে ফেলার।
যদিও সরকারের এই কার্যকলাপের তীব্র বিরোধিতা আসে বিরোধীদের কাছ থেকে। একাধিক বিরোধী সংগঠন সেই তথ্যচিত্রের প্রদর্শন করে। দেশের নামী বিশ্ববিদ্যালয়গুলির চত্বরেও দেখানো হয় ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’। তা নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কয়েক জায়গায় ঝামেলাতেও জড়িয়ে পড়েন প্রতিবাদী পড়ুয়ারা। তথ্যচিত্র দেখানো আটকানো যায়নি।
বিজেপির দাবি, বিবিসি ‘বিশেষ উদ্দেশ্যে’ মোদীকে কলঙ্কিত করতে চাইছে। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, এই প্রক্রিয়া আজ নয়, শুরু হয়েছে ২০০২ সাল থেকেই। ঠিক যে কথা সংবাদ সংস্থাকে সাক্ষাৎকারে জানালেন শাহ। শুধু বিজেপির নেতানেত্রীরাই নয়, তথ্যচিত্রটিকে মুছে দেওয়ার কথা জানায় কেন্দ্রীয় সরকারও। কিন্তু এ ভাবে ডিজিটাল দুনিয়ায় কোনও তথ্যচিত্রকে মুছে দেওয়ার ফরমানের জেরে তাকে বাড়তি জনপ্রিয়তা দিয়ে দেওয়া হল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিরোধী শিবিরের অনেকেরই মত, যে ভাবে মরিয়া হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে মোদী সরকার তথ্যচিত্রটির প্রদর্শন বন্ধ করতে লেগেছিল, তাতে আখেরে হিতে বিপরীত হয়েছে। যে মানুষ তথ্যচিত্র সম্পর্কে আপাত উদাসীন ছিলেন, তাঁকেও তা দেখার জন্য প্রলুব্ধ করা হয়েছে।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে শাহের এই সাক্ষাৎকার যে দিন সম্প্রচারিত হল, সে দিনই বিবিসির দিল্লি এবং মুম্বইয়ের কার্যালয়ে তল্লাশি অভিযান চালায় আয়কর দফতর। কংগ্রেসের প্রশ্ন, মোদীকে নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরি করার ‘অপরাধে’ই কি সংবাদমাধ্যমের দফতরে পৌঁছে গেল আয়কর দফতর?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy