মধ্যমণি: মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর ৭১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে জনতার মধ্যে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। বুধবার রাজঘাটে। পিটিআই
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে ফ্রন্টফুটে লড়ার শপথ নিয়েছেন রাহুল গাঁধী। বুধবার রাফাল নিয়ে তাঁর লাগাতার আক্রমণের মুখে অসুস্থ মনোহর পর্রীকরের চিঠিকে পুঁজি করে বিজেপি। আবেগ আর সৌজন্যের অস্ত্রে বিঁধতে চায় রাহুলকে। রাতে জবাবি খোলা চিঠি লিখে সোজা ব্যাটেই খেললেন রাহুল। সৌজন্য আর রাজনীতিকে আলাদা রেখে বুঝিয়ে দিলেন, তাঁর লড়াই নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে, পর্রীকরের বিরুদ্ধে নয়।
সেই চিঠিটি টুইট করে তার সঙ্গে রাহুল লেখেন, প্রধানমন্ত্রীর চাপেই পর্রীকরকে চিঠি লিখতে হয়েছে। রাহুলের বিরুদ্ধে অসৌজন্যের অভিযোগ তুলতে হয়েছে। দিনের শেষে রাজধানীতে গুঞ্জন, বিপক্ষের গোল শোধ করে পাল্টা চালে এগিয়ে রাহুলই।
মঙ্গলবার পর্রীকরের সঙ্গে হঠাৎ দেখা করেই বিজেপি শিবিরের অস্বস্তি বাড়িয়েছিলেন রাহুল। আগামিকাল শুরু হচ্ছে সংসদে বাজেট অধিবেশন। সেখানে রাফাল নিয়ে সিএজির রিপোর্ট পেশ হওয়ার কথা। কংগ্রেসের দাবি, এই রিপোর্ট নিয়েই সুপ্রিম কোর্টে ভুল তথ্য দিয়েছিল সরকার। তার আগে আজ দিল্লিতে যুব কংগ্রেসের সম্মেলনে রাহুল ফের রাফাল নিয়ে সুর চড়ান। ফের বলেন, ‘‘পর্রীকর নিজেই বলেছিলেন, চুক্তি বদলের সময় তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়নি।’’ প্রধানমন্ত্রীকে বিঁধে কটাক্ষ করেন, ‘‘মোদী রাতে ঘুমোতে পারেন না। ঘুমোলেও অনিল অম্বানী আর রাফালের ছবি দেখেন। বায়ুসেনাকে বেচে দিয়েছেন উনি।’’
এই অবস্থায় খোদ পর্রীকর চিঠি লিখে বলেন, আগাম খবর না দিয়েই তাঁর স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে রাহুল গিয়েছিলেন। এই সৌজন্য তাঁর ভাল লেগেছে। কিন্তু পর্রীকরের দাবি, ৫ মিনিটের সেই সাক্ষাতে রাফাল প্রসঙ্গ ওঠেনি। রাফাল চুক্তিতে কোনও গরমিলও নেই। আজ যখন রাহুল বলছেন, রাফাল সিদ্ধান্ত নিয়ে পর্রীকরের কাছে খবর ছিল না, তখন নাকি পর্রীকর বুঝতে পারছেন, ‘নিম্নস্তরের রাজনৈতিক স্বার্থ’ চরিতার্থ করতেই কাল গিয়েছিলেন রাহুল। তাঁর পরামর্শ, আর কোনও অসুস্থ ব্যক্তিকে যেন এ ভাবে ঘুঁটি না করা হয়। একই সুরে অমিত শাহরাও এর পর রাহুলকে উদ্দেশ করে বললেন, ‘‘আপনি কতটা মমতাহীন! রোগের সঙ্গে পাঞ্জা লড়া এক ব্যক্তির নামে মিথ্যা বলছেন!’’
রাফাল তরজায় এ দিন এ ভাবেই রাহুলের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারে নেমেছিল বিজেপি। উত্তরে কংগ্রেসের বক্তব্য ছিল, রাহুল এ দিনের সভায় কোথাও দাবি করেননি যে, গত কাল তাঁর রাফাল নিয়ে কথা হয়েছে পর্রীকরের সঙ্গে। তিনি এ দিন যা বলেছেন, সেটা নতুন কথা নয়।
এর পর রাতে রাহুল নিজে পাল্টা খোলা চিঠি লিখলেন পর্রীকরের উদ্দেশে। সৌজন্য না ভুলে পর্রীকরের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন তিনি। লেখেন, তিনি আগেও পর্রীকরের স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছেন, ভবিষ্যতেও নেবেন। কৌশলে বিজেপির অস্ত্রই বিজেপিকে ফিরিয়ে দিয়ে দাবি করেন, তাঁর সঙ্গে দেখা করার পরে বিজেপির তরফে চাপ বাড়ছিল পর্রীকরের উপরে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আনুগত্য দেখানোর বাধ্যবাধকতা থেকেই পর্রীকরকে তাঁর ‘স্বভাববিরুদ্ধ’ ভাবে চিঠি লিখতে হয়েছে।
পর্রীকরের প্রতি কার্যত বিজেপিই অসংবেদনশীল আচরণ করছে, এই ছিল রাহুলের ইঙ্গিত। সেই সঙ্গে তিনি যোগ করেন, আগের দিন পর্রীকরের সঙ্গে তাঁর যে কথা হয়েছিল, সে কথা তিনি প্রকাশ্যে আনেননি। অর্থাৎ ঠিক কী কথা হয়েছিল, তাই নিয়ে ধোঁয়াশা রেখে বিজেপির উপরে স্নায়ুর চাপও জিইয়ে রাখলেন তিনি।
রাহুলের দাবি, ‘‘আমি আজ যা বলেছি, সে সব তথ্য দীর্ঘদিন ধরেই জনসমক্ষে আছে।’’ রাহুল মনে করান, ফ্রান্সে মোদী যখন রাফাল চুক্তি করছেন, পর্রীকার গোয়ার মাছের বাজারে দাঁড়ি়য়ে বলেছিলেন, তাঁর কিছু জানা নেই। রাজ্য ক্যাবিনেট বৈঠকে যে পর্রীকর বলেন, তাঁর বেডরুমে রাফালের ফাইল আছে, সে-ও মন্ত্রিসভার এক সদস্যের অডিয়ো টেপে আছে। কিছুই মনগড়া নয় বলে রাহুলের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy