Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

অযোধ্যার জমির অধিকার চেয়ে হলফনামা হিন্দুদের

শীর্ষ আদালতে হলফনামা জমা দিয়ে রামলালা বিরাজমানের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, রাম মন্দির নির্মাণের জন্য ওই বিতর্কিত জমি তাদের হাতেই তুলে দেওয়া হোক।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৯ ০২:৫১
Share: Save:

অযোধ্যা মামলায় জমির দাবি ছাড়ায় তাদের সম্মতি নেই বলে শুক্রবারই জানিয়ে দিয়েছে মুসলিম পক্ষের একাংশ। আর শনিবার সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া একাধিক হলফনামায় আর্জি জানানো হয়েছে, অযোধ্যার বিতর্কিত ওই জমির ভাগ মুসলিমদের যেন না দেওয়া হয়।

এ দিন শীর্ষ আদালতে হলফনামা জমা দিয়ে রামলালা বিরাজমানের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, রাম মন্দির নির্মাণের জন্য ওই বিতর্কিত জমি তাদের হাতেই তুলে দেওয়া হোক। তাদের যুক্তি, ওই জায়গায় বাবরি মসজিদের আর কোনও অস্তিত্ব নেই। তাই মুসলিম আবেদনকারীদের ওই জমির ভাগ দেওয়া উচিত নয়।

রামলালা বিরাজমানের আইনজীবীদের জমা দেওয়া হলফনামায় বলা হয়েছে, ‘‘অযোধ্যা পবিত্র তীর্থস্থান। মন্দির বা বিগ্রহ না থাকলেও হিন্দুদের বিশ্বাস অনুযায়ী অযোধ্যার ঐশ্বরিক এবং আধ্যাত্মিক তাৎপর্য রয়েছে। বিতর্কিত ওই জায়গায় মসজিদ পুনর্নির্মাণের দাবি অন্যায় এবং অনুচিত। এটা হিন্দু ধর্ম, ইসলামি আইন এবং ন্যায় বিচারের পরিপন্থী। ওই স্থান অখণ্ড ও অবিভাজ্য। তাই গোটা অঞ্চল রামের জন্মস্থান হিসেবে পুজো করার জন্যই দেওয়া উচিত।’’ রামলালার আইনজীবীরা আরও জানিয়েছেন বিতর্কিত জমিটি নির্মোহী আখড়াকে দেওয়া উচিত নয়। কারণ রামের জন্মস্থানকে একটি আইনি সত্ত্বা হিসেবে বিবেচনা করা যায় কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল।

মুসলিমদের জমির ভাগ না দেওয়ার আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে এ দিন হলফনামা জমা দিয়েছে রাম জন্মভূমি পুনরুদ্ধার সমিতিও। মন্দির নির্মাণ হলে সেখানে একটি ট্রাস্ট গড়ারও প্রস্তাব দিয়েছে তারা।

অন্য দিকে এ দিন নির্মোহী আখড়া আদালতে একটি হলফনামা জমা দিয়ে আর্জি জানিয়েছে, ওই বিতর্কিত জমির মালিকানা যে হিন্দু সংগঠনই পাক না কেন, পুজো করার অধিকার যেন তাদেরই থাকে।

এ দিনই হিন্দু মহাসভা এবং মুসলিম পক্ষ সুপ্রিম কোর্টে লিখিত ভাবে ‘মোল্ডিং অব রিলিফ’ জমা দিয়েছে। অর্থাৎ রায় যার পক্ষে যাবে, তার বিরোধী পক্ষ বিকল্প হিসেবে কী দাবি করছে, তা জানিয়ে রাখা। দু’পক্ষই এ দিন সেই মতো মুখ বন্ধ খামে তাদের লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছে।

এই টানাপড়েনের মধ্যেই কয়েক জন মুসলিম মামলাকারী জানিয়েছেন, যদি সুপ্রিম কোর্টের রায় তাঁদের পক্ষে যায়, তা হলে অযোধ্যায় সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য বিতর্কিত জমিতে মসজিদ নির্মাণের কাজ পিছিয়ে দেওয়া উচিত। হাজি মেহবুব নামে এক মামলাকারীর কথায়, ‘‘দেশের পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আমাদের প্রথম কাজ হওয়া উচিত শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখা। রায় আমাদের পক্ষে গেলে ওই জমিতে আমাদের এখনই মসজিদ নির্মাণ করা উচিত নয়। শুধু একটি সীমানা প্রাচীর গড়েই ছেড়ে দেওয়া উচিত।’’ তবে হাজি জানিয়েছেন, এটি তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। বিষয়টি নিয়ে তিনি অন্য মামলাকারীদের সঙ্গেও কথা বলবেন। হাজির সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন আর এক মামলাকারী মুফতি হাসবুল্লাহ বাদশা খান। তিনি বলেছেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে প্রবীণ ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলব।’’

২০১০-এ ইলাহাবাদ হাইকোর্ট রায় দিয়েছিল, অযোধ্যার বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমি সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া এবং রামলালা বিরাজমানের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করে দিতে হবে। রায়ের বিরুদ্ধে ১৪টি আবেদন জমা পড়ে সুপ্রিম কোর্টে। মধ্যস্থতায় সুরাহা না-হওয়ায় গত ৬ অগস্ট থেকে প্রতিদিন শুনানি শুরু হয়। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে সেই মামলার শুনানি শেষ হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Ayodhya Ram Temple Ram Mandir
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy