বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ (বাঁ দিকে) এবং কাশী বিশ্বনাথ মন্দির। — ফাইল চিত্র।
আলোচনার প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেও বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদের বিতর্কিত জমির দাবি থেকে পিছু হটবে না হিন্দু সেনা। কট্টরপন্থী হিন্দু সংগঠনটির তরফে বৃহস্পতিবার জানানো হয়েছে, বিচারাধীন ওই বিষয় নিয়ে কোনও রকম আপসের পথে হাঁটা হবে না।
বিশ্ব বৈদিক সনাতন সংঘের (ভিভিএসএস) প্রধান জিতেন্দ্র সিং ভিসেন সম্প্রতি আদালতের বাইরে আলোচনার মাধ্যমে জ্ঞানবাপী মসজিদ এবং কাশী বিশ্বনাথ মন্দির নিয়ে মীমাংসার জন্য হিন্দু এবং মুসলিম পক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। তারই প্রেক্ষিতে এই অবস্থানের কথা জানিয়েছে হিন্দু সেনা। অন্য দিকে, ‘অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া (জ্ঞানবাপী) মসজিদ কমিটি’র তরফে জানানো হয়েছে, তারাও জিতেন্দ্রের চিঠির জবাব দিয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্ট ছাড়পত্র দেওয়ার পরে গত ৫ অগস্ট থেকে জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বরে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (আর্কিয়োলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই) ‘বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা’ শুরু করেছে। সপ্তদশ শতকে তৈরি জ্ঞানবাপী মসজিদটি আদতে কোনও হিন্দু মন্দির ভেঙে সেই ধ্বংসাবশেষের উপরে তৈরি করা হয়েছিল কি না, তা জানার জন্যই এই সমীক্ষা। রামমন্দির আন্দোলনের সময়েই সঙ্ঘ পরিবার এবং হিন্দুত্ববাদীরা হুমকি দিয়েছিল, ‘ইয়ে তো সির্ফ এক ঝাঁকি হ্যায়, কাশী-মথুরা বাকি হ্যায়’। সেই সুর মেনে রামমন্দির আন্দোলনের সাফল্যে উজ্জীবিত হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি নব্বইয়ের দশকেই জ্ঞানবাপী মসজিদের জমির মালিকানা দাবি করে ‘স্বয়ম্ভূ জ্যোতির্লিঙ্গ ভগবান বিশ্বেশ্বর’-এর তরফে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল। হিন্দু সেনা ছিল সেই সংগঠনগুলির তালিকায়।
এর পর ২০২১ সালের অগস্টে পাঁচ হিন্দু মহিলা জ্ঞানবাপীর ‘মা শৃঙ্গার গৌরী’ (ওজুখানা ও তহখানা) এবং মসজিদের অন্দরের পশ্চিমের দেওয়ালে দেব-দেবীর মূর্তির অস্তিত্বের দাবি করে তা পূজার্চনার অনুমতি চেয়ে মামলা দায়ের করেছিলেন। আবেদনকারী ওই মহিলাদের পরামর্শদাতা ছিলেন জিতেন্দ্র। সেই মামলার প্রেক্ষিতেই ‘ওজুখানা’ (ভূগর্ভস্থ জলাধার) বাদে বাকি এলাকায় এএসআই সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে বারাণসী আদালত। ইলাহাবাদ হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টও তা বহাল রেখেছে। হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, জ্ঞানবাপী মসজিদের ওজুখানার জলাধারে ‘শিবলিঙ্গ’ রয়েছে। যদিও মুসলিম পক্ষের দাবি, যে কাঠামোকে শিবলিঙ্গ বলা হচ্ছে, তা আসলে ফোয়ারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy