প্রতীকী ছবি।
করোনা সংক্রমণের মোকাবিলা করতে গিয়ে অর্থনীতির দরজা বন্ধ করেছিল সরকার। যার বিরূপ প্রভাব পড়েছিল রোজগেরে মানুষের রুজি-রুটির উপরে। বিভিন্ন পরিসংখ্যানে পরিষ্কার হয়েছিল, অত্যাবশ্যক নয় এমন সমস্ত পণ্য কেনা কমাচ্ছেন তাঁরা। তার উপরে গত কয়েক মাসে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি দুঃসহ করে তুলেছে সাধারণ মানুষের জীবন। এই অবস্থায় মঙ্গলবার দেশের বৃহত্তম ব্যাঙ্ক স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার অর্থনৈতিক শাখার রিপোর্টে জানিয়ে দেওয়া হল, চড়া দামে তেল কিনতে গিয়ে মানুষ এ বার বহু দরকারি পণ্য ও পরিষেবার খরচও কাটছাঁট করা শুরু করেছেন। এই তালিকায় মুদিখানার দ্রব্য, এমনকি স্বাস্থ্যখাতের খরচও রয়েছে। এই অবস্থায় কর ছাঁটাই করে জ্বালানির দাম কমিয়ে মানুষকে সুরাহা দেওয়ার জন্যও সরকারকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে রিপোর্টে।
তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে এ দিন ফের কেন্দ্রকে আক্রমণ করেছে কংগ্রেস। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের অভিযোগ, সরকার মানুষের অসহায়তার সুযোগ নিচ্ছে।
২ মে পাঁচ রাজ্যের নির্বাচন-পর্ব শেষ হওয়ার পর থেকেই পেট্রল-ডিজেলের দাম বাড়তে থাকে। ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ-সহ অন্তত ১৬টি রাজ্যে পেট্রলের দর লিটার প্রতি ১০০ টাকা পার করেছে। ডিজেল সেঞ্চুরি করেছে ৩টি রাজ্যে। পাশাপাশি, গৃহস্থের রান্নার গ্যাসের ভর্তুকিও কমতে কমতে চলে এসেছে শূন্যের কাছাকাছি। জ্বালানির দামে যে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে, তা মেনে নিয়েছে কেন্দ্র, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সমস্ত মহলই। যদিও সেই সমস্যা সমাধানের কোনও পদক্ষেপ এখনও পর্যন্ত করেনি সরকার। উল্টে কয়েক মাস আগে আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম কমলেও কর বাড়িয়ে তা একই জায়গায় রেখে দেওয়া হয়েছিল।
রিপোর্টে স্টেট ব্যাঙ্ক গোষ্ঠীর মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা সৌম্যকান্তি ঘোষ লিখেছেন, ‘‘তেল কেনার খরচ বাড়ানোর পাশাপাশি ক্রেতারা স্বাস্থ্য খাতের খরচ কমিয়েছেন। এসবিআই কার্ডের মাধ্যমে খরচের তথ্য বিশ্লেষণ করতে গিয়েই এই ছবি উঠে এসেছে। এমনকি তেলের দাম মেটাতে গিয়ে মুদিখানার খরচ-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খরচও কমিয়েছেন মানুষ।’’ সৌম্যকান্তি জানিয়েছেন, তেলের এই চড়া দাম ঠেলে তুলছে মূল্যবৃদ্ধির হারকে। এই অবস্থায় দুই পরিবহণ জ্বালানির কর না-কমলে বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা আরও কমবে। বস্তুত, গত দু’মাস ধরে খুচরো বাজারের মূল্যবৃদ্ধির হার রয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক নির্ধারিত সহনসীমার উপরে। মে এবং জুনে তা ছিল যথাক্রমে ৬.৩% এবং ৬.২৬%। আর জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির হার পৌঁছে গিয়েছে ১২.৬৫ শতাংশে। এই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি বিশেষজ্ঞদের অনেকে অবশ্য বলেছেন, সংখ্যার বিচারে মূল্যবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের কিছুটা উপরে থাকলেও বাজারে গেলে পণ্যমূল্যের জ্বলুনি এর চেয়ে অনেকটা বেশিই টের পাওয়া যাচ্ছে। স্টেট ব্যাঙ্কের রিপোর্টেও সেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাব কিন্তু এখনও পর্যন্ত পুরোপুরি যায়নি। সংক্রমণ বাড়ছে মহারাষ্ট্র এবং কেরলের মতো রাজ্যে। প্রতিষেধক প্রয়োগের গতি আরও বাড়াতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy