গরম হাঁসফাঁস উত্তরপ্রদেশের বালিয়া। — ফাইল চিত্র।
১৫ থেকে ১৮ জুন উত্তরপ্রদেশের বালিয়ার জেলা হাসপাতালে ভর্তি ৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, তাপপ্রবাহের কারণেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। যদিও প্রশাসন এ কথা মানতে চায়নি। এই মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখছেন লখনউ থেকে আসা সরকারি আধিকারিকেরা। তাঁরা জানিয়েছেন, তাপপ্রবাহ এবং এই মৃত্যুর মধ্যে ‘যোগসূত্র’ এখনও মেলেনি। প্রসঙ্গত, বালিয়া-সহ আশপাশের অঞ্চলে এখন দিনের তাপমাত্রা প্রায় ৪৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ভারতীয় আবহাওয়া দফতর (আইএমডি) রবিবার জানিয়েছিল, গত ১২ জুন থেকে পূর্ব উত্তরপ্রদেশে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি চলছে। আরও দু’দিন কিছু অংশে এই তাপপ্রবাহ চলবে। তার পর ধীরে ধীরে কমবে তাপমাত্রা। সোমবার বালিয়ার দিনের তাপমাত্রা ছিল ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। মঙ্গলবার দিনের তাপমাত্রা তার থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো কমতে পারে বলে পূ্র্বাভাস ছিল। ২২ জুনের পর থেকে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে মানতে পারে বলে জানিয়েছিল মৌসম ভবন।
তবে আবহবিদেরা জানিয়েছেন, তাপমাত্রার কারণে যতটা না মানুষ অসুস্থ হন, তার থেকে বেশি ভোগায় অস্বস্তি, প্যাচপ্যাচে আবহাওয়া। গত এপ্রিলে নবি মুম্বইয়ে একটি সরকারি কর্মসূচিতে গিয়ে মারা গিয়েছিলেন ১৩ জন। তাপপ্রবাহের কারণেই মৃত্যু হয়েছিল তাঁদের। যদিও সে সময় তাপমাত্রা ছিল ৩০ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে বাতাসে আর্দ্রতা খুব বেশি ছিল। অস্বস্তিকর আবহাওয়ার কারণেই ওই ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল বলে দাবি করেছেন আবহবিদেরা। একাংশ মনে করছেন, বালিয়াতেও এই অস্বস্তিকর আবহাওয়াই মৃত্যুর কারণ।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, ১৮ জুন বিকেল সাড়ে ৫টার সময় বালিয়ার আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৩১ শতাংশ। তাপমাত্রা ৪৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলেও মনে হচ্ছিল তা ৫১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর এই আবহাওয়ার প্রভাব পড়ে শরীরে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, শরীরের মধ্যে যে তাপ তৈরি হয়, তা ঘামের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। ত্বক থেকে ঘাম বাষ্পীভূত হলে ওই অংশ ঠান্ডা লাগে। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি হলে ঘাম বাষ্পীভূত হয় না। যে কারণে বর্ষাকালে ভিজে কাপড় শুকোতে চায় না। ঘাম বাষ্পীভূত হয় না বলে শরীরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয় না। সে কারণেই হয় হিট স্ট্রোক। শরীরের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে তবেই তা হয় সাধারণত। গরম বাড়লে শরীরে বিপাক ক্রিয়াও বেড়ে যায়। তার ফলে রক্তচাপ এবং অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়।
বালিয়ার জেলার বাঁশডিহ এবং গারওয়ার ব্লকে সব থেকে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তার কারণ সম্ভবত গরম। এই দুই ব্লক পরিদর্শনে গিয়েছেন উত্তরপ্রদেশর সরকার গঠিত কমিটির সদস্যেরা। মাথায় রয়েছে চিকিৎসক কেএন তিওয়ারি। মৃতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বসেছেন তাঁরা। বোঝার চেষ্টা করেছেন, এত জনের মৃত্যুর মধ্যে কোনও ‘যোগসূত্র’ রয়েছে কিনা। ওই দলের সদস্য চিকিৎসক একে সিংহ জানিয়েছেন, পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, মৃতেরা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। এক জনের টিবি হয়েছিল। তবে গ্রামে তাপমাত্রা এবং অস্বস্তি যে খুব বেশি, তা অস্বীকার করা যাবে না। এর আগে সিংহ একটি সংবাদ মাধ্যমের কাছে দাবি করেছিলেন, জল সংক্রান্ত সমস্যার কারণে মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে বলে বালিয়ায়। তাপপ্রবাহের কারণে মৃত্যু হলে যে উপসর্গ থাকে, তা মৃতদের মধ্যে নেই বলে দাবি করেছিন ওই চিকিৎসক। বালিয়ায় গরমের সঙ্গে ভোগান্তি বাড়িয়েছে লোডশেডিংও। স্থানীয়দের দাবি, দিনের বেশির ভাগ সময় থাকছে না বিদ্যুৎ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy