Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

গরমে গলদ্‌ঘর্ম বর, দহন বিশ্বের ভবিষ্যৎ! 

মরু-জেলা চুরুতে তাপপ্রবাহ নতুন কিছু নয়। কিন্তু এ বার দহন যেন মাত্র ছাড়িয়ে যাচ্ছে। চুরুর এ বারের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সিকি শতাব্দীর রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। গত ১ জুন ওই জেলায় তাপমাত্রা ছিল ৫০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা 
চুরু (রাজস্থান) শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৯ ০৪:১৭
Share: Save:

বিয়ে করতে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেও মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়েছিল আকাশ কুমারকে! তপ্ত দুপুরে বর এবং তাঁর পরিজনেরা বাড়ির উঠোন ঠান্ডা করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জল ঢেলেছিলেন। শুধু তাই নয়, পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল বিয়ের শোভাযাত্রাও। রাজস্থানের চুরু জেলার কল্যাণপুরা গ্রামের আকাশকে গলদ্‌ঘর্ম হতে হয়েছিল, তাপপ্রবাহের সৌজন্যে।

মরু-জেলা চুরুতে তাপপ্রবাহ নতুন কিছু নয়। কিন্তু এ বার দহন যেন মাত্র ছাড়িয়ে যাচ্ছে। চুরুর এ বারের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সিকি শতাব্দীর রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। গত ১ জুন ওই জেলায় তাপমাত্রা ছিল ৫০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আকাশের বিয়ের দিন পারদ পৌঁছেছিল ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বাড়ির উঠোনে গাছের ছায়ায় বসে দরদর করে ঘামতে থাকা আকাশ বলেছিলেন, ‘‘দুপুর ২টো থেকে আমরা সকলে মিলে শুধু জল ঢেলেছি। অতিথিদের সুবিধার্থেই এই ব্যবস্থা।’’ আকাশদের বাড়ির ১০টি ঘরের দু’টিতে এসি-র ব্যবস্থা রয়েছে। বাকি ঘরগুলিতে অতিথিদের জন্য এয়ার কুলারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আকাশের কাকার কথায়, ‘‘তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়ালে এসি-তে কোনও কাজ হয় না। তাই মাটি বা মেঝেতে জলের ছিটে দিতে হয়। সেটাই অনেক আরামপ্রদ।’’ বরের কাকা গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে জানিয়ে এসেছিলেন, দুপুরে তীব্র দাবদাহের জন্য শোভাযাত্রা সম্ভব নয়। তা হবে সন্ধের পরে।

চুরুবাসীর দৈনন্দিন রুটিনও অনেকটাই পাল্টে গিয়েছে দহনের কারণে। বদল এসেছে খাদ্যাভ্যাসেও। চুরু শহরের বাসিন্দা রাজবীর সিংহের কথায়,‘‘ভারী খাবার কমিয়ে তরলের উপরেই জোর দিচ্ছি আমরা।’’

শুধু চুরু বা ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত নয়, গোটা বিশ্ব জুড়ে এ বছর তীব্র তাপপ্রবাহ। গত বছর উত্তর গোলার্ধের একটা বিরাট অংশ তাপপ্রবাহে ঝলসে গিয়েছিল। এ বার পৃথিবীর সর্বত্রই একই পরিস্থিতি। গত সোমবার নয়াদিল্লির তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। জুন মাসের প্রেক্ষিতে যা রেকর্ড। উত্তর গোলার্ধের তুলনায় পিছিয়ে নেই দক্ষিণ গোলার্ধও। গত সোমবার আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকোর তাপমাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত যা সর্বোচ্চ। গত মে মাসে শেষার্ধে জাপানের তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

আবহাওয়া সংক্রান্ত একটি জার্নালে সম্প্রতি তাপমাত্রা বৃদ্ধি সম্পর্কে বিস্তারিত লেখা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, মানুষের কৃতকর্মের ফলে জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে। তার ফলে দহন মহামারীর আকার নিয়েছে। ওই নিবন্ধটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আগামী বছরগুলিতে তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার বজায় থাকবে।

আবহ বিজ্ঞানীদের বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে ওই জার্নালে বলা হয়েছে, এটা জলবায়ুর ‘নতুন যুগ’-এর সূচনা। আগামিদিনে তাপপ্রবাহের প্রকোপ ও তীব্রতা আরও বাড়বে। ওই নিবন্ধে বলা হয়েছে, ‘‘এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির ভয়াবহ প্রভাব পড়বে বাস্তুতন্ত্র এবং সমাজ জীবনে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Weather Heat Wave Rajasthan Churu
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy