রীতি-প্রেম বজায় রাখল হিমাচল। রাজমুকুট এবার হিসাব মেনেই উঠল কংগ্রেসের মাথায়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
টানা ৩৭ বছর ধরে এক ভাবে একই ধারা! হিমাচল প্রদেশ আবারও দেখিয়ে দিল, ‘রেওয়াজ’ এ ভাবেই মানতে হয়।
১৯৮৫ সাল থেকে কংগ্রেস এবং বিজেপি এক নির্বাচন অন্তর সরকার গড়েছে হিমাচলে। সেই হিসাবে ২০১৭ সালে বিজেপির হিমাচল জয়ের পর ২০২২ সালে কংগ্রেসেরই জেতার ‘কথা’ ছিল হিমাচলে। দেখা গেল, সেই নিয়মের ব্যত্যয় হয়নি। হিমাচল রীতি মেনেই সরকার গড়ার অধিকার বিজেপির হাত থেকে নিয়ে তুলে দিয়েছে কংগ্রেসকে।
বৃহস্পতিবার হিমাচল প্রদেশে বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর ভোটারদের এই ‘অদ্ভুত ক্ষমতা’কে সমীহের চোখেই দেখছেন সকলে। দক্ষিণের রাজ্য কেরলের সঙ্গে তুলনা টেনে তাঁরা বলছেন, এ ভাবে দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে সরকার গড়ার ‘সমান অধিকার’ বণ্টনের নজির ছিল কেরলেও। ১৯৮৭ সাল থেকে কংগ্রেস আর বামফ্রন্টের মধ্যে একই ভাবে সামঞ্জস্য রেখে এসেছে কেরল।
কিন্তু সেই ধারা ২০২১ সালের পর থমকে যায় হঠাৎই। ২০১৬ সালে কেরলে বামফ্রন্ট সরকার গঠনের পর ২০২১-এও তারাই কেরলের সিংহাসনে বসে। বৃহস্পতিবার হিমাচলে কিন্তু তা হল না। যদিও বুথফেরত সমীক্ষায় ইঙ্গিত ছিল, এ বার দুই শিবিরেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। এমনকি, বিজেপি সামান্য ব্যবধানে হিমাচলের প্রাপ্ত আসনে কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে দিতে পারে বলেও উঠে এসেছিল কিছু সমীক্ষায়। হিমাচল অবশ্য দেখিয়ে দিল, তারা কেরল নয়। রেওয়াজ যখন তৈরি হয়েছে, তখন তা মেনেই ছাড়বে তারা।
১৯৮৫ সাল থেকে খাতায়কলমে ‘রাজ’ বদলানোর এই রেওয়াজ হিমাচলে। তার আগের নির্বাচনেই প্রথম হিমাচলে বিধানসভা ভোটের লড়াইয়ে নামে বিজেপি। তার আগে কংগ্রেসের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল জনতা পার্টি। যদিও ক্ষমতায় মূলত রাজ করেছে কংগ্রেসই। জনতা পার্টি সরকার গড়েছিল মাত্র দু’বার। ১৯৮২ সালে প্রথম বিজেপি আসে হিমাচলের বিধানসভা ভোটে লড়তে। প্রথম ভোটেই ২৯টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। পরের বছর অবশ্য সেই আসন সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৭-এ। তার পর থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত রেওয়াজ বিশেষ বদলায়নি। বস্তুত, ১৯৮৫ সাল থেকে কোনও রাজনৈতিক দলই ৫ বছরের বেশি রাজ করেনি হিমাচলে। ১৯৯৮ সালে শুধু হিসাব সামান্য গুলিয়ে গিয়েছিল। রেওয়াজ অনুযায়ী সে বার বিজেপির জেতার কথা কিন্তু ফল হয়েছিল ত্রিশঙ্কু। কংগ্রেস এবং বিজেপি— দু’দলই ৩১টি করে আসন জিতেছিল হিমাচলে। তবে শেষ পর্যন্ত বিজেপিই অন্য স্থানীয় দলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়ে। বৃহস্পতিবার সকালে গণনার যা ধারা ছিল, তাতে অনেকেই মনে করেছিলেন এ বার হয়তো কেরলের পথেই ‘রেওয়াজ’ বদলাতে চলেছে হিমাচলও। কিন্তু আদতে তা হয়নি। রেওয়াজ মেনে শেষ পর্যন্ত হিমাচলে সরকার গড়ার ‘জাদু সংখ্যা’ পেরিয়ে গিয়েছে কংগ্রেসই। ৬৮ আসনের বিধানসভায় ৪০টি আসনে জিতে ‘রেওয়াজ’ মেনে হিমাচলে ‘রাজ’ করার পথ আবার প্রশস্ত করেছে কংগ্রেস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy