কাফিল খান। ফাইল চিত্র।
যোগী আদিত্যনাথের সরকার এ বার সরাসরি বরখাস্তই করল গোরক্ষপুরের বাবা রাঘব দাস মেডিক্যাল কলেজের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ কাফিল খানকে। লড়াকু কাফিলও জানিয়েছেন, ‘এই সরকারের কাছ থেকে এর চেয়ে বেশি আর কী আশা করা যায়? আমি আদালতে যাব।’ টুইটে বরখাস্ত হওয়ার নোটিসটির ছবি দিয়ে কাফিল লিখেছেন, ‘সরকার অক্সিজেন সরবরাহকারীদের দাম না-মেটানোয় ৬৩টি শিশুর মৃত্যু হল। ৮ জন ডাক্তার ও স্থাস্থ্যকর্মীকে সাসপেন্ড করা হল। এদের মধ্যে ৭ জনকে পুনর্বহাল করা হল। অবহেলা ও দুর্নীতির অভিযোগ থেকে তদন্ত কমিটি সম্পূর্ণ রেহাই দেওয়ার পরেও আমাকে বরখাস্ত করা হল। ন্য়ায় না অন্যায়? আপনারাই বিচার করুন!’
চার বছর আগে ২০১৭-র অগস্টে বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথের কেন্দ্র গোরক্ষপুরের বিআরডি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি ৬৩টি শিশু অক্সিজেনের অভাবে মারা যায়। দীর্ঘদিন সরকার অক্সিজেন সরবরাহকারীদের বিল না-মেটানোয়, তারা সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য মন্ত্রককে বিপদের আশঙ্কা আগাম জানানো সত্ত্বেও সরকার কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। অক্সিজেনের অভাবে শিশুগুলির অবস্থা সঙ্কটজনক হয়ে পড়ছে, খবর পেয়ে ছুটির মধ্যেও হাসপাতালে ছুটে আসেন কাফিল খান। পরিচিত লোকের কাছ থেকে শিল্পে ব্যবহৃত অক্সিজেনের সিলিন্ডার নিয়ে এসে শিশুগুলিকে বাঁচাতে চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু তত ক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছে। বাঁচানো যায়নি কাউকে। এ খবর প্রকাশ হওয়ার পরে সে দিন ডিউটিতে থাকা সব ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীকে সাসপেন্ড করে তদন্তের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। অভিযোগ, ধর্মের কারণে বিশেষ ভাবে চিহ্নিত করা হয় কাফিলকে। সাসপেন্ড হয়েও হাসপাতালে ঢোকার অপরাধে আর এক দফা তাঁকে সাসপেন্ড করে সরকার, যা আদালত খারিজ করে দেয়। ২০২০-তে সিএএ-র বিরুদ্ধে বক্তৃতা দেওয়ায় তাঁকে গ্রেফতার করে জাতীয় সুরক্ষা আইনের ধারায় অভিযুক্ত করে বিজেপি সরকার। আট মাস জেলে থাকার পরে এলাহাবাদ হাই কোর্ট ওই সিদ্ধান্তের জন্য যোগী সরকারকে তুলোধোনা করে কাফিল খানকে ন্যাশনাল সিকিওরিটি অ্যাক্ট-এর ধারা থেকে মুক্তি দেন। সরকার নিযুক্ত তদন্ত কমিটিও দু’বছর আগে কাফিল খান-সহ সাসপেন্ড সকলের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতি এবং চক্রান্তের অভিযোগ খারিজ করে দেয়। এর পরে বাকি ৭ জনকে পুনর্বহাল করা হলেও কাফিলের বিষয়টি ঝুলিয়েই রাখা হয়। বৃহস্পতিবার তাঁকে বরখাস্তের চিঠি পাঠানো হল। সূত্রের খবর, স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে সরকারের এই সিদ্ধান্তের খবর এবং নির্দেশের কপি বেসরকারি ভাবে পেলেও কাফিলের কাছে এখনও সেই নোটিস আসেনি। তবে কাফিল জানিয়েছেন, আদালতের প্রতি তাঁর ভরসা আছে। বরখাস্তের নোটিস হাতে পেলেই তিনি আদালতে যাবেন।
কাফিলের বরখাস্ত হওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসা মাত্র উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা সরকারকে আক্রমণ করে টুইটে বলেছেন, ‘কুৎসিত মনোভাব এবং বিদ্বেষ’ থেকেই বিজেপি সরকার এই পদক্ষেপ করেছে। কংগ্রেস কাফিলের পাশে আছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy