এএফপি-র ফাইল চিত্র।
ভয় দেখাচ্ছে চিন আর পাকিস্তান। এই দুই দেশের সাইবার হানার জেরে উদ্বিগ্ন মোদী সরকার। চিন-পাকিস্তানের নজর পড়েছে সরকারি কম্পিউটার ও ওয়েবসাইটেও।
কেন্দ্রীয় যোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রক সূত্রের মতে, ভারতের কম্পিউটার নেটওয়ার্কে ভাইরাস ছড়িয়ে বা হ্যাক করে বিভিন্ন নথি চুরি করে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। গোপন তথ্য হাতানোরও চেষ্টা হচ্ছে। গত বছর সরকারি কম্পিউটারে ভাইরাস হানা হয়েছে চার হাজারের বেশি। গত তিন বছরে ৭০০টি সরকারি ওয়েবসাইট হ্যাক করা হয়েছে। ভারতের কম্পিউটার নেটওয়ার্কে এ ধরনের হামলার সব চেয়ে বেশি ঘটনা ঘটছে পাকিস্তান, চিন, বাংলাদেশ থেকে। তালিকায় রয়েছে আমেরিকাও। বিশ্বের নানা প্রান্তে ভুয়ো সার্ভার থেকে লুকিয়ে এই সব হামলা হচ্ছে। মন্ত্রকের অধীনে ভারতের কম্পিউটার এমারজেন্সি রেসপন্স টিম এই হামলার হদিস পেতেই জরুরি ভিত্তিতে তা মোকাবিলার কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু হ্যাকিং রোখার তৎপরতার পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে নয়া কৌশলে ফের সাইবার-হামলা হচ্ছে।
সরকারি কম্পিউটার বা ওয়েবসাইটে হানার জেরে কোন কোন গুরুত্বপূর্ণ নথি এ যাবৎ বাইরে গিয়েছে সে ব্যাপারে সরকার অবশ্য এখনই কিছু খোলসা করতে চাইছে না সরকার। যোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘‘গত কয়েক বছর ধরেই সাইবার হানার সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এমন নয়, শুধু ভারতে এই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। যে ভাবে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে, ততই পাল্লা দিয়ে গোটা দুনিয়া জুড়ে এ ধরনের ঘটনা বাড়ছে।’’ মন্ত্রকের এক কর্তার মতে, ভারতের সাইবার-পরিসরে হামলার খবর পেলেই তা সংক্রমণ মুক্ত করা হয়। ভবিষ্যতে যাতে ফের সেই সাইট বা কম্পিউটারকে সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচানো যায়, সে ব্যাপারেও পদক্ষেপ করা হয়। সময়ে সময়ে সতর্কতা বা উপদেশও পাঠানো হয়।
সম্প্রতি আমেরিকার সরকারি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক হ্যাক করার খবরও সামনে এসেছে। এর পিছনে চিনা হ্যাকারদের হাত রয়েছে বলে আশঙ্কা মার্কিন প্রশাসনের। এফবিআই গোটা ঘটনার তদন্তও শুরু করে দিয়েছে। সরকারি নেটওয়ার্কে ঢুকে সামাজিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য, ব্যক্তিগত তথ্য ও কিছু ফিঙ্গারপ্রিন্ট চুরি করা হয়েছে বলে তারা মনে করছে। বিভিন্ন সরকারি কর্মীদের সম্পর্কে তথ্যও হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। ২০১২ সালে এ দেশে বিভিন্ন হ্যাকার গোষ্ঠী ২৭,৬০৫টি এবং তার পরের বছর ২৮,৪৮১টি ওয়েবসাইটে হানা দিয়েছে। ২০১৪ সালে সংখ্যাটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২,৩২৩-এ। আর এ বছর সেই সংখ্যাটি এখনও পর্যন্ত পেরিয়ে গিয়েছে দশ হাজারের গন্ডি।
হ্যাকারদের হাত থেকে বাঁচতে এ দেশে একটি নিরাপদ ব্যবস্থা শীঘ্র চালু করতে চাইছে সরকার। যেটি কেবল মন্ত্রী, সরকারি অফিসার ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলির ব্যবহারের জন্যই দেওয়া হবে। যাতে বিভিন্ন অফিসার ও সরকারি সংস্থাগুলির মধ্যে গোপন তথ্য আদানপ্রদানের প্রক্রিয়া নিরাপদ থাকে। সেই ব্যবস্থার সাহায্যে সহজে কিছু হ্যাক করা যাবে না। আর কোনও ভাবে আড়ি পাতাও যাবে না।
প্রথম দফায় দিল্লিতে এই ব্যবস্থা চালু করা হবে। এর জন্য ফাইবার নেটওয়ার্ক বসানোর কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। মন্ত্রী, আমলা, গোয়েন্দা সংস্থার অফিসারদের তালিকাও তৈরি। শুধু গুরুত্বপূর্ণ অফিসারদের দফতরে নয়, তাঁদের বাড়িতেও এই নতুন ওয়্যারলেস ব্যবস্থা চালু করা হবে। মন্ত্রকের এক কর্তার মতে, এক বার দিল্লিতে এর প্রয়োগ সফল হলে তার পর গোটা দেশে সেটিকে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy