Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
National News

হারানো বা চুরি যাওয়া মোবাইল ব্লক করতে দিল্লিতে চালু সরকারি ওয়েবসাইট

গোটা দেশেই কেন এই ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ মানুষের একাংশ।

সিইআইআর-এর সূচনা অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ ও অন্যান্যরা। ছবি: পিটিআই

সিইআইআর-এর সূচনা অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ ও অন্যান্যরা। ছবি: পিটিআই

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৬:২০
Share: Save:

প্রযুক্তি যত এগোচ্ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে স্মার্ট হয়ে উঠছে প্রতারকরাও। মোবাইল ফোন হাতিয়ে ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি বা আইএমইআই পাল্টে ফেলা এখন চোর-পকেটমারদের কাছে জলভাত। ফলে সাইবার ক্রাইম বিশেষজ্ঞরাও হারানো বা চুরি যাওয়া মোবাইল উদ্ধার করতে পারছেন না। সারা দেশে না হোক, দিল্লি ও ন্যাশনাল ক্যাপিট্যাল রিজিওন (এনসিআর) এলাকায় এই অবস্থা থেকে কিছুটা সুরাহা দিতে চালু হল নতুন ওয়েবসাইট।

সেন্ট্রাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (সিইআইআর) নামে গতকাল সোমবার এই ওয়েব পোর্টালের সূচনা করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। কেন্দ্রীয় টেলিকম দফতরের অধীন এই পোর্টাল নিরাপত্তা, ফোন হারিয়ে বা চুরি হয়ে গেলে সেই ফোনকে ব্লক করা এবং খুঁজে পাওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে। মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা যেমন উন্নয়নের জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার করি, অপরাধীরাও সেই রকমই স্মার্ট এবং তাঁরাও নিজেদের স্বার্থসিদ্ধিতে প্রযুক্তিকে কাজে লাগায়। আমাদের চাই এমন একটি প্রযুক্তি, যাতে সাধারণ মানুষের স্বার্থ সুরক্ষিত হয়।’’

কী কী সুবিধা পাওয়া যাবে এই পোর্টালে। জানা গিয়েছে, কোনও ব্যক্তি তাঁর মোবাইল হারিয়ে বা চুরি হয়ে গেলে এই পোর্টালের মাধ্যমে ওই মোবাইল ফোনটি ‘ব্লক’ করার অনুরোধ জানাতে পারেন। সেই অনুরোধ পাঠালে আর কোনও মোবাইল পরিষেবা সংস্থায় সেটি ব্যবহার করা যাবে না। তবে খোয়া যাওয়া মোবাইল উদ্ধার হলে ফের তা ‘আনব্লক’ করা যাবে।

ওই অনুষ্ঠানেই হাজির ছিলেন দিল্লির উপ-রাজ্যপাল অনিল বৈজল। তিনি তথ্য দিয়ে বলেন, ‘‘দিল্লি-এনসিআর এলাকায় প্রতি বছর ৪০ হাজার মোবাইল চুরি বা হারানোর অভিযোগ দায়ের হয়। এই সমস্যার সমাধানের কোনও উপায় অবশ্যই বার করা উচিত।’’ মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদকে তাঁর পরামর্শ, এই পোর্টালের সঙ্গে জোনাল ইন্টিগ্রেটেড পুলিশ নেটওয়ার্ক (জিপনেট)-কে যুক্ত করা উচিত। তাতে সমন্বয় আরও ভাল এবং কার্যকরী হবে।

আর আইএমইআই পাল্টে ফেলা বা ক্লোন করে নেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন টেলিকম দফতরের সচিব এবং ডিজিটাল কমিউনিকেশনসে চেয়ারম্যান অনসু প্রকাশ। তিনি বলেন, ‘‘বর্তমানে মোবাইল হ্যান্ডসেটের ব্যবহার ব্যাপক হারে বেড়েছে। ১০০ জন লোক পিছু ২৪২টি হ্যান্ডসেট রয়েছে দেশে। মানুষের দৈনন্দিন কাজে মোবাইল এখন অপরিহার্য। আইএমইআই নম্বর ফের প্রোগ্রামিং করা যায়। কিছু দুষ্কৃতী সেই সুযোগ নিচ্ছে। আবার আইএমইআই নম্বর ক্লোনিংও (হুবহু নকল) করা হচ্ছে। তার ফলে একই আইএমইআই নম্বরে একাধিক হ্যান্ডেসেটের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে এমন ক্লোন করা হ্যান্ডসেটের বহু নজির রয়েছে।’’

কিন্তু শুধু দিল্লি-এনসিআর এলাকার জন্য কেন? গোটা দেশেই কেন এই ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ মানুষের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, সারা দেশেই মোবাইল চুরি দিন দিন বেড়েই চলেছে। কিন্তু সেই তুলনায় পুলিশি সক্রিয়তা অত্যন্ত কম। ফলে মোবাইল ফোন হারালে বা চুরি গেলে, সেটা আর ফেরত পাওয়ার আশা প্রায় থাকেই না। কলকাতা-সহ গোটা দেশেই পুলিশ মাঝেমধ্যে উদ্ধার হওয়া চোরাই মোবাইল তাদের মালিকদের ফেরত দেয় বটে, কিন্তু সেই সংখ্যাটা হারানো বা চুরি যাওয়া মোবাইলের সংখ্যার তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

আবার অনেকে এই প্রশ্নও তুলছেন যে, পুলিশি সক্রিয়তা বাড়ানোর পরিবর্তে সরকার কি গ্রাহকদের ‘করণীয়’র উপরেই জোর দিতে চাইছে। ওই পোর্টালে গিয়ে মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্লক করে দিলে চোর বা প্রাপক হয়তো সেই সেটা আর ব্যবহার করতে পারবে না। কিন্তু আসল মালিক সেই মোবাইল ফেরত পাবেন, এমন নিশ্চয়তা বা আশ্বাস সরকার দিচ্ছে না। ফলে এই পোর্টালে প্রকৃতপক্ষে সাধারণ মানুষ কতটা উপকৃত হবেন, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Mobile Theft Ravi Shankar Prasad Delhi NCR
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy