১ টাকার কয়েনে ১০ হাজার টাকা চাঁদা তুলে জামানত জমা শ্রমিকের। — প্রতীকী ছবি।
উন্নয়নের ঝাপটায় দু’বার বাস্তুচ্যুত হতে হয়েছে। গুজরাতের রাজধানী গান্ধীনগরের বস্তিবাসী মহেন্দ্র পাটনি ভোটে লড়ছেন সরকারি অবিচারের জবাব দিতে। আর ভোটে লড়ার প্রথম ধাপ জামানত জমা দেওয়ার সময় সে আর এক কাণ্ড! ১ টাকার কয়েনে ১০ হাজার টাকা জমা দেন পেশায় দিনমজুর মহেন্দ্র। আর সেই টাকা চাঁদা হিসেবে দিয়েছেন তাঁর পড়শি বস্তিবাসীরা।
গান্ধীনগর উত্তর আসনে নির্দল হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মহেন্দ্র। এ সপ্তাহের গোড়াতেই পড়শিদের চাঁদা মিলিয়ে তিনি ১০ হাজার টাকা জামানত হিসাবে জমা দিয়ে প্রার্থী হয়েছেন। সেই ১০ হাজারে রয়েছে ১০ হাজারটি ১ টাকার কয়েন। তাঁর বক্তব্য, তিনি যে বস্তিতে থাকেন, সেখানে মোট ৫২১টি কুঁড়েঘর। ঠিকানা, মহাত্মা মন্দিরের সামনে। এলাকাবাসীই মহেন্দ্রকে রাজি করিয়েছেন ভোটে লড়তে।
মহেন্দ্র যে বস্তিতে থাকেন, সেখানকার বাসিন্দারা গত কয়েক বছরের মধ্যে দু’বার উৎখাত হয়েছেন। প্রতি বারই উন্নয়নের দোহাই দিয়ে। প্রথম বার ২০১০-এ। গান্ধীজিকে উৎসর্গ করা ডান্ডি কুটির মিউজিয়াম তৈরির জন্য ঘর ভেঙে দেওয়া হয় মহেন্দ্রদের। পরের বার, ২০১৯-এ। সে বার একটি বিলাসবহুল হোটেলের জন্য ঘর ছেড়ে দিতে হয় তাঁদের।
মহেন্দ্র বলছেন, ‘‘আমি একজন নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়াই করছি। আমি এমন একটি পরিবার থেকে উঠে এসেছি, যেখানে সবাই শ্রমিক এবং দিন আনি দিন খাই। আমাদের বস্তিতে মোট ৫২১টি কুঁড়ে আছে। একটি বড় হোটেল তৈরির জন্য আমাদের বাস্তুহারা হতে হয়েছিল। তাতে বহু লোকের কাজ চলে যায়। আমরা প্রাণ বাঁচাতে কাছের একটি জায়গায় উঠে যাই। কিন্তু সেখানে না আছে জল, না আছে বিদ্যুতের ব্যবস্থা।’’
গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় উৎসব ভোট। আর সেই উৎসবের প্রহরকেই তাঁদের উপর হওয়া ‘অবিচারের’ জবাব দেওয়ার মঞ্চ হিসাবে বেছে নিয়েছেন মহেন্দ্র। এ জন্য বস্তিবাসীরা প্রত্যেকে ১ টাকা করে অনুদান দিয়েছেন। ১ টাকার কয়েনে মোট ১০ হাজার টাকা নিয়ে মহেন্দ্র গিয়েছেন মনোনয়ন জমা দিতে।
মহেন্দ্রর কথায়, ‘‘প্রতি বছর ভোটের আগে কর্তারা আসেন। জল, বিদ্যুতের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান। কিন্তু ভোট মিটতেই যে কে সেই। এ বার সেই বঞ্চনার জবাব দিতেই আমি লড়ছি। তারই প্রতীক ১ টাকার কয়েনে জামানত জমা দেওয়া।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy