স্টেশনে বসে সারা দিন ৪ ভাইবোন মিলে কমলালেবু বিক্রি করতেন। পড়াশোনার কথা কল্পনাতেও আসেনি। যা আয় হত সেই দিয়েই সংসারের খরচ উঠে আসত।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২১ ০৯:৩১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
স্টেশনে বসে সারা দিন ৪ ভাইবোন মিলে কমলালেবু বিক্রি করতেন। পড়াশোনার কথা কল্পনাতেও আসেনি। যা আয় হত সেই দিয়েই সংসারের খরচ উঠে আসত।
০২১৭
মা-ও দিনভর ব্যস্ত থাকতেন টুকিটাকি কাজ করে উপার্জন করতে। সন্ধ্যায় কাজ থেকে ফেরার পথে ছেলেমেয়েদের স্টেশন থেকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফিরতেন।
০৩১৭
ওই ৪ ভাইবোনের মধ্যে এক জন আজ কোটিপতি! সামান্য কমলালেবু বিক্রেতা থেকে ৪০০ কোটি টাকার সংস্থার মালিক হয়ে উঠেছেন!
০৪১৭
তিনি প্যায়ারে খান। শুধু কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে নিজের ব্যাঙ্ক ব্যালান্স বাড়াননি তিনি, এই অতিমারি পরিস্থিতিতে অক্সিজেন দান করে নাগপুরের বাইরে এবং ভিতরে একাধিক হাসপাতালে সাহায্যও করেছেন।
০৫১৭
ইতিমধ্যে ৮৫ লাখ টাকার ৪০০ মেট্রিক টন তরল অক্সিজেন দিয়ে সাহায্য করেছেন তিনি।
০৬১৭
প্যায়ারে খানের জন্ম নাগপুরের তাজবাগের বস্তিতে। ১৯৯৫ সাল থেকেই তিনি নাগপুর রেল স্টেশনের বাইরে কমলালেবুর ঝুড়ি নিযে বসতেন। যাতায়াতের পথে যাত্রীরা তাঁর থেকে কমলালেবু কিনতেন।
০৭১৭
১৮ বছর বয়স হলে গাড়ি চালানো শিখে কমলালেবু বিক্রির পাশাপাশি একটি কুরিয়ার সংস্থায় গাড়ি চালানোর কাজ পান।
০৮১৭
কিন্তু এই কাজ বেশি দিন করতে পারেননি তিনি। কারণ কয়েক দিনের মধ্যেই ওড়িশায় এক গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। ওই সংস্থার কাজ হারান তিনি।
০৯১৭
পরে একটি অটো নিয়ে চালাতে শুরু করেন। সঙ্গীতের প্রতিও তাঁর ঝোঁক ছিল। তাই কিবোর্ড বাজাতে শিখেছিলেন। নাগপুর মেলোডি মেকারস নামে একটি ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্তও হয়েছিলেন।
১০১৭
এ ভাবেই দিন চলছিল তাঁর। কিন্তু মাথায় মাঝে মধ্যেই নড়েচড়ে বসল ব্যবসায়িক বুদ্ধি। প্রথমে নিজের গানের সরঞ্জাম বেচে এবং টাকা ধার করে একটি ছোট বাস কেনেন। কিন্তু সে ব্যবসা টেকেনি।
১১১৭
২০০৪ সালে তিনি ট্রাক কেনার মনস্থির করেন। তখন তাঁর বয়স ২৪ বছর। ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পাওয়ার জন্য কম চেষ্টা করেননি। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি। নাগপুরের বিশ্ব ব্যাঙ্কের তত্কালীন ম্যানেজার তাঁকে ফিরিয়ে দেন।
১২১৭
অবশেষে অন্য একটি ব্যাঙ্ক থেকে তিনি ১১ লাখ টাকা ঋণ পান। সেই টাকায় একটি ট্রাক কেনেন। মাত্র দু’বছরের মধ্যেই ঋণ পরিশোধও করে দেন।
১৩১৭
সেই একটি ট্রাক থেকে আজ ১২৫টি ট্রাকের মালিক তিনি। এ ছাড়াও আরও ৩ হাজার ট্রাক ভাড়া নিযে চালান তিনি।
১৪১৭
অসমি রোড ট্রান্সপোর্ট প্রাইভেট লিমিটেড নামে সংস্থাও খুলে ফেলেছেন প্যায়ারে। দেশের ১০টি জায়গায় অফিস রয়েছে তাঁর।
১৫১৭
তাঁর সংস্থায় কাজ করেন অন্তত ৫০০ জন। দেশের বাইরেও যাতায়াত করে তাঁর ট্রাক।
১৬১৭
কিন্তু কোটি কোটি টাকার মালিক হলেও মাটির কাছাকাছি থাকতেই পছন্দ করেন প্যায়ারে। সাহায্য করার চেষ্টা করেন দুঃস্থদের।
১৭১৭
দেশ জুড়ে করোনা রোগীদের জন্য অক্সিজেন সঙ্কট দেখে চোখ বুজে থাকতে পারেননি তিনি। ইতিমধ্যেই ৮৫ লাখ টাকার অক্সিজেন পৌঁছে দিয়েছেন। বিনা ভাড়ায় গাড়ি পরিষেবাও দিয়ে চলেছেন তিনি।