পিনারাই বিজয়ন এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের জাতীয় সম্পাদক জি দেবরাজন। ছবি সংগৃহীত।
বাম দলের এক ‘হেভিওয়েট’ নেতার বিরুদ্ধে প্রার্থী অন্য বাম দলের প্রতিষ্ঠিত মুখ, কেরলের জোট রাজনীতিতে এমন ঘটনা ঘটেছে বহু বার। কিন্তু সেই চেনা ছবির পুনরাবৃত্তি এ বার আটকে গেল ফরওয়ার্ড ব্লকের জাতীয় সম্পাদক জি দেবরাজনের আপত্তিতে।
এ বারের বিধানসভা ভোটে কেরলের বাম-শাসিত সরকারের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের বিরুদ্ধে দেবরাজনকে প্রার্থী করতে চেয়েছিলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। দক্ষিণী ওই রাজ্যে আরএসপি-র মতো ফ ব-ও এখন কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ফ্রন্ট ইউডিএফের সঙ্গে আছে। কিন্তু বৃহত্তর বাম ঐক্যে ‘নেতিবাচক প্রভাব’ পড়ার যুক্তি দেখিয়ে সেই প্রস্তাব প্রথমেই খারিজ করে দিয়েছেন দেবরাজন। তার পরেও কংগ্রেস নেতৃত্ব ওই প্রস্তাব নিয়ে দরবার চালিয়ে যাওয়ায় ফ ব-র কেন্দ্রীয় কমিটি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে শেষমেশ দেবরাজনেরই পক্ষে দাঁড়িয়েছে।
কেরলের ১৪০ আসনের মধ্যে ইউডিএফের বৃহত্তম শরিক কংগ্রেস এ বার লড়ছে ৯২টি আসনে। তিরুঅনন্তপুরমে রবিবার তারা ৮৬ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। তার মধ্যে সব চেয়ে উল্লেখযোগ্য রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উম্মেন চান্ডির নাম তালিকায় থাকা। বাকি ৬টি আসনের প্রার্থীর নাম এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে কংগ্রেসের ৯২ আসনের মধ্যে বিজয়নের কেন্দ্র ধর্মাদম নেই। ওই আসন কংগ্রেস ছেড়ে রেখেছে তাদের শরিকদের জন্যই।
বাংলায় টানা সাড়ে চার দশক বামফ্রন্টের শরিক হিসেবে সিপিএমের সঙ্গে আছে আরএসপি, ফ ব। কিন্তু কেরলে তাদের সম্পর্কের চিড় অনেক দিনের। কংগ্রেসের সমর্থনে ইউডিএফের প্রার্থী হিসেবে আরএসপি নেতা এন কে প্রেমচন্দ্রন কোল্লম লোকসভা আসনে এর আগে পরাস্ত করেছিলেন সিপিএমের পলিটবুরো সদস্য এম এ বেবিকে। রাজ্য সিপিএমের সঙ্গে বিরোধের জেরেই ফ ব-ও বেশ কয়েক বছর ধরে ইউডিএফের সঙ্গী হওয়ার আবেদন জানিয়ে আসছিল। এ বার তারা দক্ষিণ কেরলে কোল্লম বা চাতান্নুরের মধ্যে কোনও একটি বিধানসভা আসন ইউডিএফের কাছে চেয়েছিল দেবরাজনের কথা মাথায় রেখেই। কিন্তু ইউডিএফ মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিএম প্রার্থী বিজয়নের বিরুদ্ধে দেবরাজনকে লড়িয়ে দিতে তৎপর হয়। দেবরাজনের কথায়, ‘‘প্রস্তাব পেয়েই আমি বলেছিলাম, এটা সম্ভব নয়। জাতীয় স্তরে বৃহত্তর বাম ঐক্যে আমরা শরিক। বাংলাতেও বামফ্রন্ট ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াই করছে। এই পরিস্থিতিতে আমি প্রার্থী হলে ভুল বার্তা যাবে।’’ ইউডিএফ ‘চাপ’ বাড়ানোয় ফ ব-র কেন্দ্রীয় কমিটি আলোচনা করে একই যুক্তি দিয়েছে। ফ ব নেতৃত্বের যুক্তি, দলের জাতীয় সম্পাদক দেবরাজন প্রার্থী হলে গোটা দেশের সংবাদমাধ্যমে বাম ঐক্যে ‘বিভাজনের’ তত্ত্ব প্রচার হবে। তাতে বাংলাতেও প্রভাব পড়বে।
কেরল প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি মুল্লাপল্লি রামচন্দ্রন অবশ্য বলছেন, ‘‘ইউডিএফের সঙ্গী বা শরিক দলের কারা প্রার্থী হবেন, সেটা সেই দলের নেতৃত্ব ঠিক করবেন। তবে কোন আসন কাকে দেওয়া হবে, তা ইউডিএফে আলোচনার ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy