দিল্লিতে অরুণ জেটলিকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন অমিত শাহ। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ জেটলি প্রয়াত। শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে গত ৯ অগস্ট দিল্লির এমসে ভর্তি হন তিনি। ১৭ অগস্ট থেকে সেখানে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল তাঁকে।চিকিৎসকদের একটি দল সর্বক্ষণ নজর রাখছিলেন তাঁর উপর। সেই অবস্থাতেই শনিবার দুপুর ১২টা ৭ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে ৬৬ বছর বয়স হয়েছিল অরুণ জেটলির।
ইতিমধ্যেই এমস থেকে দিল্লির বাসভবনে অরুণ জেটলির দেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে ভিড় জমিয়েছেন বিজেপি নেতা ও সমর্থকরা। রয়েছেন অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা, হর্ষবর্ধন-সহ দলের একাধিক শীর্ষ নেতা। পরে বিজেপির সদর দফতরেও জেটলির মরদেহ নিয়ে যাওয়ার কথা, যাকে দলের সমর্থকরাও তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে পারেন। রবিবার দুপুরে দিল্লির নিগমবোধ ঘাটে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
দীর্ঘ দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন অরুণ জেটলি। ডায়াবিটিসের সমস্যায় ভুগছিলেন। অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন গতবছর কিডনি প্রতিস্থাপনও হয় তাঁর।যে কারণে ফেব্রুয়ারি মাসে অন্তর্বর্তী বাজেটের সময় সংসদে উপস্থিত থাকতে পারেননি। শারীরিক অসুস্থতার জেরে মে মাসেও এক বার এমসে ভর্তি হন জেটলি। সেই থেকে সক্রিয় রাজনীতিতে সে ভাবে আর দেখা যায়নি তাঁকে।
এ বছর লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদী দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় ফিরলেও, মন্ত্রিত্ব নিতে রাজি হননি জেটলি। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, বেশ কিছু দিন ধরে অসুস্থ তিনি। চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাই এ বার নিজের জন্য একটু সময় চান। নতুন সরকারে তাঁকে কোনও দায়িত্ব না দিলেই ভাল। তবে সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে গেলেও, সোশ্যাল মিডিয়ায় বরাবরই সক্রিয়ছিলেন অরুণ জেটলি। মোদী সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের পক্ষে নিয়মিত সওয়ালও করেন তিনি।
আরও পড়ুন: দৃপ্ত আইনজীবী থেকে দূরদর্শী নেতা, রাজনৈতিক সহবতের উজ্জ্বল মাইলফলক
এর আগে, গত ৬ অগস্ট জীবনাবসান হয় বিজেপির আরেক শীর্ষস্থানীয় নেত্রী তথা প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের। তার পরই প্রবীণ নেতার প্রয়াণে শোকের ছায়া রাজনৈতিক মহলে। অরুণ জেটলির প্রয়াণে ইতিমধ্যেই শোকপ্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘অরুণ জেটলির প্রয়াণে শোকাহত আমি। দীর্ঘদিন শারীরিক অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করছিলেন। এক জন বুদ্ধিদীপ্ত আইনজীবী এবং অভিজ্ঞ সাংসদ ছিলেন উনি। দেশে গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল ওঁর।’
Extremely saddened by the passing of Shri Arun Jaitley after battling a long illness with fortitude and dignity. A brilliant lawyer, a seasoned parliamentarian, and a distinguished Minister, he contributed immensely to nation building.
— President of India (@rashtrapatibhvn) August 24, 2019
এই মুহূর্তে দেশের বাইরে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘অরুণ জেটলিজির প্রয়াণে এক জন বন্ধু হারালাম আমি। ওঁকে জানার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। ওঁর মতো দূরদর্শিতা এবং উপলব্ধি খুব কম জনের রয়েছে। বহু সুখস্মৃতি রেখে গেলেন। আমরা ওঁর অভাব অনুভব করব।’
With the demise of Arun Jaitley Ji, I have lost a valued friend, whom I have had the honour of knowing for decades. His insight on issues and nuanced understanding of matters had very few parallels. He lived well, leaving us all with innumerable happy memories. We will miss him!
— Narendra Modi (@narendramodi) August 24, 2019
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটারে লেখেন, ‘অরুণ জেটলিজির প্রয়াণে মর্মাহত আমি। অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করেছেন উনি। এক জন অসাধারণ সাংসদ এবং বুদ্ধিদীপ্ত আইনজীবী ছিলেন। সব রাজনৈতিক দল ওঁকে শ্রদ্ধা করত। ভারতীয় রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন উনি। ওঁর স্ত্রী, সন্তান, বন্ধু এবং সমর্থকদের সমবেদনা জানাই।’
Extremely saddened at the passing away of Arun Jaitley Ji, after a battle bravely borne. An outstanding Parliamentarian & a brilliant lawyer, appreciated across parties. His contribution to Indian polity will be remembered. My condolences to his wife, children, friends & admirers
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) August 24, 2019
অরুণ জেটলির মৃত্যুর খবর পেয়ে হায়দরাবাদ থেকে দিল্লি ফিরেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘অরুণ জেটলিজির প্রয়াণে শোকাহত আমি। এটা আমার কাছে ব্যক্তিগত ক্ষতি। শুধুমাত্র দলের এক জন শীর্ষ নেতাকেই হারাইনি, পরিবারের এক সদস্যকে হারিয়েছি, আমার কাছে যিনি চিরকাল পথপ্রদর্শক হয়ে থাকবেন।’
अरुण जेटली जी के निधन से अत्यंत दुःखी हूँ, जेटली जी का जाना मेरे लिये एक व्यक्तिगत क्षति है।
— Amit Shah (@AmitShah) August 24, 2019
उनके रूप में मैंने न सिर्फ संगठन का एक वरिष्ठ नेता खोया है बल्कि परिवार का एक ऐसा अभिन्न सदस्य भी खोया है जिनका साथ और मार्गदर्शन मुझे वर्षो तक प्राप्त होता रहा।
আরও পড়ুন: ৯ বিরোধী দলের ১১ নেতাকে নিয়ে শ্রীনগর রওনা হলেন রাহুল গাঁধী
১৯৭৭ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি পাশ করেন অরুণ জেটলি। দীর্ঘদিন সুপ্রিম কোর্টে প্র্যাকটিসও করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের দিনগুলিতেই অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের(এবিভিপি) নেতা নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৭৫ সালে জরুরি অবস্থার সময় দীর্ঘ ১৯ মাস জেলবন্দি ছিলেন। সেইসময়ই জয়প্রকাশ নারায়ণের সংস্পর্শে আসেন। জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর জন সঙ্ঘে যোগদান করেন। বিজেপিতে যোগ দেন ১৯৯১ সালে।
দীর্ঘ রাজনৈতিক কেরিয়ারে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদ সামলেছেন অরুণ জেটলি। ১৯৯৯ সালে অটলবিহারী সরকারের প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন। পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাতেও জায়গা করে নেন। তবে ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর, তাঁর সরকারের অন্যতম কারিগর হয়ে ওঠেন অরুণ জেটলি। প্রথম দফায় মোদী সরকারের অর্থ এবং প্রতিরক্ষা, দুই বিভাগই সামলান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy