প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিত। ফাইল চিত্র।
সোহরাবুদ্দিন ভুয়ো সংঘর্ষ মামলায় অমিত শাহের আইনজীবী হিসেবে কাজ করার কথা স্বীকার করলেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিত। সেই সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, ওই কাজের ‘পুরস্কার’ হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির পদ পাওয়ার প্রশ্ন নেই। কারণ তাঁকে বিচারপতি পদে নিয়োগের প্রক্রিয়া আগেই শুরু হয়ে গিয়েছিল। পাশাপাশি বিচারপতি নিয়োগের কলেজিয়াম পদ্ধতি নিয়ে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজুর বক্তব্য খারিজ করেছেন তিনি।
সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি পদে ললিতের নিয়োগের সময়ে কয়েকটি শিবির দাবি করে, তিনি সোহরাবুদ্দিন ভুয়ো সংঘর্ষ মামলায় অমিত শাহের আইনজীবী ছিলেন বলেই তাঁর নিয়োগে দ্রুত সম্মতি দেয় সরকার। ললিত অবশ্য বলেছেন, ‘‘বিচারপতি পদে আমাকে নিয়োগের প্রক্রিয়া মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার আগেই শুরু হয়েছিল। অমিত শাহের হয়ে আমি সওয়াল করেছি ঠিকই। কিন্তু মূল আইনজীবী ছিলেন রাম জেঠমলানী। আমার সওয়ালের আলাদা তাৎপর্য নেই। পুরস্কার হিসেবে বিচারপতির পদ পাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’’
পাশাপাশি ‘শহুরে নকশাল’ হিসেবে চিহ্নিত জি এন সাইবাবার জামিনের শুনানির জন্য শনিবার বিশেষ বেঞ্চ গঠন নিয়েও ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ললিত। সাধারণত শনিবার সুপ্রিম কোর্ট বন্ধ থাকে। ১৪ অক্টোবর, শুক্রবার বম্বে হাই কোর্টে জামিন পান সাইবাবা। তার বিরুদ্ধে সে দিনই মহারাষ্ট্র সরকার সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ললিতের এজলাসে শুনানি শেষ হয়ে গিয়েছিল। তাই তৎকালীন দ্বিতীয় শীর্ষ বিচারপতি ও বর্তমান প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের এজলাসে বিষয়টি জরুরি শুনানির জন্য উল্লেখ করা হয়। সেই আর্জি খারিজ করে বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, ‘‘শনিবার এ নিয়ে নির্দেশ দেওয়া সম্ভব নয়।’’ ললিতের বক্তব্য, ‘‘বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের মন্তব্যের কথা আমি জানতাম না। তাঁর বেঞ্চের নির্দেশে কিন্তু জানানো হয়, এই মামলা পরের দিন অর্থাৎ শনিবার তালিকাভুক্ত করতে আবেদন জানাবেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা।’’ পরে বিচারপতি ললিতের তৈরি বিশেষ বেঞ্চ সাইবাবার জামিন স্থগিত রাখে। শনিবার এই ধরনের শুনানির জন্য বিশেষ বেঞ্চ গঠনের সিদ্ধান্ত সমালোচনার মুখে পড়েছে।
অন্য দিকে বিচারপতি নিয়োগের কলেজিয়াম পদ্ধতি নিয়ে কেন্দ্রের বক্তব্য খারিজ করেছেন বিচারপতি ললিত। সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ শীর্ষ বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত কলেজিয়ামের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্ট ও হাই কোর্টে বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘদিন টানাপড়েন চলছে মোদী সরকার ও বিচার বিভাগের। সম্প্রতি বিচার বিভাগের দিকে আঙুল তুলে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেন, ‘‘কলেজিয়াম পদ্ধতিতে দেশবাসী খুশি নন। এই পদ্ধতি অস্বচ্ছ। সংবিধানের চরিত্র অনুযায়ী সরকারেরই বিচারপতি নিয়োগ করার কথা।’’ কিন্তু প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ললিত আজ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘এটা আইনমন্ত্রীর ব্যক্তিগত মত। কলেজিয়াম বিচারপতি নিয়োগের সঠিক ও ভারসাম্যপূর্ণ পদ্ধতি। ওই পদ্ধতিতে সকলের মতই বিবেচনা করা হয়।’’ বিচারপতি ললিতের বক্তব্য, ‘‘হাই কোর্টের কলেজিয়াম থেকে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামে নাম সুপারিশ করা হয়। যাঁদের নাম সুপারিশ করা হয়েছে তাঁদের সম্পর্কে নিজেদের মত জানায় রাজ্য সরকার। তার পরে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম কেন্দ্রের কাছে নাম সুপারিশ করে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বুরো-সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থার মত বিবেচনা করা হয়।’’ নিয়ম অনুযায়ী, কেন্দ্র কোনও নামে আপত্তি জানালেও সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম ফের সেই নাম সুপারিশ করলে কেন্দ্র তা মানতে বাধ্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy