নাগেশ্বর রাও।
সমাজকর্মী এবং আর্য সমাজের নেতা স্বামী অগ্নিবেশের মৃত্যু নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করলেন প্রাক্তন সিবিআই-প্রধান নাগেশ্বর রাও। একজন আইপিএস অফিসারের এমন আচরণে স্তম্ভিত সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষ। তাঁর মন্তব্য নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন নেটিজেনরা। তাঁদের কটাক্ষ, একাধিক দুর্নীতিতে জড়িত বিজেপি-ঘনিষ্ঠ নাগেশ্বরের কাছ থেকে এমন মন্তব্যই প্রত্যাশিত।
গেরুয়াধারী স্বামী অগ্নিবেশ দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে মানবাধিকার সংক্রান্ত একাধিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। একাধিক ঘটনায় দীর্ঘ দিন ধরেই অন্য বহু সমাজকর্মীর মতোই বিজেপি নেতৃত্বের নিশানায় ছিলেন তিনি। বছর দুয়েক আগে ঝাড়খণ্ডে বিজেপির যুব মোর্চার কর্মীদের হাতে প্রহৃত হন। সে সময় তাঁর লিভারে গুরুতর আঘাত লাগে। শেষ পর্যন্ত লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। স্বামী অগ্নিবেশের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন অংশের বিশিষ্ট জনেরা। বিজেপির তরফে অবশ্য এ নিয়ে বিশেষ কোনও শব্দ খরচ করা হয়নি। তা নিয়ে ক্ষোভের মধ্যেই নজরে আসে সিবিআইয়ের প্রাক্তন অন্তর্বর্তী প্রধানের মন্তব্য। স্বামী অগ্নিবেশের মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা পরেই ‘গেরুয়া পোশাক পরা হিন্দু-বিরোধী অগ্নিবেশের মৃত্যু আকাঙ্খিত নিষ্কৃতি’ বলে মন্তব্য করে যে ভাষায় নাগেশ্বর রাও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন, তাতে স্তম্ভিত অনেকেই। তাঁর এমন আচরণ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে পুলিশের সংগঠন ইন্ডিয়ান পুলিশ ফাউন্ডেশন। একাধিক কর্তার বক্তব্য, নাগেশ্বর রাও পুলিশের উর্দির কলঙ্ক।
এই প্রসঙ্গেই ফের আলোচনায় উঠে এসেছে তাঁর একাদিক দুর্নীতির কথা। আর্থিক দুর্নীতি-সহ একাধিক ঘটনায় তাঁর নাম জড়িয়েছে। পাশাপাশি তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধেও কয়েকটি দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। বছর কয়েক আগে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে কলকাতায় তাঁর সম্পত্তিতে হানা দিয়েছিল পুলিশ। অভিযোগ, বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব, বিশেষ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের জন্যই তাঁর বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মাস কয়েক আগেও টুইটারে সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ান নাগেশ্বর। সে সময় তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছিলেন নেটিজেনরা। কিন্তু কিছুই হয়নি। এ বারেও প্রয়াত সমাজকর্মীর মৃত্যুর পরে তাঁর কুরুচিকর মন্তব্যে ক্ষুব্ধ নেটিজেনরা শাস্তির দাবি তুলেছেন। যদিও তাঁদের একাংশের মন্তব্য, নরেন্দ্র মোদী সরকার এই প্রাক্তন পুলিশ কর্তার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাই নেবে না। উল্টে অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy