বিক্ষোভ: যন্তরমন্তরে আত্মঘাতী কৃষকের সন্তানরা। —নিজস্ব চিত্র।
বছর দশেকের অনিল অবতারের নেড়া মাথা। বাড়ি মহারাষ্ট্রের নাসিকে। গলায় সাদা দড়িতে ঝুলছে একটি মাটির হাঁড়ি। পিতৃবিয়োগের প্রতীক। মাথার সাদা গাঁধীটুপিতে লেখা, ‘আমি আত্মহত্যা করা কৃষকের সন্তান।’ অনিলের বাবা অম্বাদাস কৃষিঋণ শোধ করতে না পেরে আত্মঘাতী হয়েছিলেন। অনিলের পাশেই আনন্দ পাটিল। অনাথ। তার বাবাও আত্মহত্যা করেছিলেন একই কারণে।
সোমবারই সংসদের শুরুতে কৃষকদের ‘প্রণাম’ জানিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। অনিল-আনন্দের মতোই আরও ৪০ জন বালক-বালিকা সে কথা জানে না। দিল্লির যন্তর মন্তরে তারাই আজ হয়ে উঠল কৃষক আন্দোলনের মুখ।
ফসলের ন্যায্য দাম, কৃষিঋণ মকুবের দাবি নিয়ে আন্দোলন ছড়াচ্ছিল একের পর এক রাজ্যে। মধ্যপ্রদেশের মন্দসৌরে কৃষকদের উপরে গুলি সেই আগুনেই ঘৃতাহুতি দেয়। আজ মন্দসৌর থেকেই কৃষক-মিছিল এসে ধর্নায় বসে যন্তর মন্তরে। আসেন অন্যান্য রাজ্যের কৃষকেরাও। প্রায় শ’চারেক সংগঠন মিলে তৈরি সর্বভারতীয় কৃষক সংগঠন সমন্বয় সমিতি দাবি তোলে, চাষের খরচের দেড় গুণ ফসলের দাম দিতে হবে। সরকারকে কোনও কৃষক ফসল বেচতে চাইলে তাঁকে সেই আইনি অধিকার দিতে হবে। শ্রম মন্ত্রক, বিদ্যুৎ মন্ত্রক ও জল সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের দফতর শ্রম-শক্তি ভবনেও আজ ঢুকে পড়েন একদল কৃষক। তাঁদের অভিযোগ, বিজেপি লোকসভা ভোটের ইস্তাহারে স্বামীনাথন কমিটির সুপারিশ মেনে চাষের খরচের দেড় গুণ ফসলের দাম দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা পূরণ করেনি। কেন্দ্রের গবাদি বিধি, গোরক্ষক বাহিনীর তাণ্ডবে কৃষকেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
আজ সংসদের দুই কক্ষেই হইচই হয় কৃষকদের দুর্দশা নিয়ে। সংসদ থেকে এসে কৃষকদের সভায় যোগ দেন শরদ যাদব, সীতারাম ইয়েচুরিরা। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি সংসদে বলেন, সরকার আলোচনায় রাজি। সমন্বয় সমিতিতে জায়গা হয়নি কংগ্রেসের। কৃষক সংগঠনগুলির বক্তব্য, ইউপিএ আমলেও স্বামীনাথন কমিটির সুপারিশ কার্যকর হয়নি। রাহুল গাঁধী অবশ্য কৃষক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে মরিয়া। বুধবার মন্দসৌরের কাছে রাজস্থানের বন্সওয়ারাতে ‘কিষাণ আক্রোশ সভা’-য় যাচ্ছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy