Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Farmers Protest

পুলিশদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ, সিংঘু সীমানায় ধৃত সাংবাদিক

রবিবার সকালে মুচলেকায় সই করিয়ে ধর্মেন্দ্রকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক মনদীপকে শনিবার রাতে সময়পুর বদলি থানায় আটক রাখার পরে গ্রেফতার করা হয়।

গাজিপুর সীমানায় অতি ভারী ব্যারিকেড। রবিবার।

গাজিপুর সীমানায় অতি ভারী ব্যারিকেড। রবিবার। ছবি: প্রেম সিংহ।

, সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:৫১
Share: Save:

কৃষক আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রস্থল, দিল্লি-উত্তরপ্রদেশ সীমানার সিংঘু থেকে এক সাংবাদিককে গ্রেফতার করল পুলিশ। আরও এক সাংবাদিককে আটক করে মুচলেকায় সই করিয়ে ছাড়া হয়।

কর্তব্যরত পুলিশদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে মনদীপ পুনিয়া এবং ধর্মেন্দ্র সিংহ নামে ওই দুই সাংবাদিককে শনিবার রাতে প্রথমে আটক করা হয়। রবিবার সকালে মুচলেকায় সই করিয়ে ধর্মেন্দ্রকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক মনদীপকে শনিবার রাতে সময়পুর বদলি থানায় আটক রাখার পরে গ্রেফতার করা হয়। আজ সকালে তাঁকে তিহাড় আদালতে নিয়ে আসা হয়। তাঁর ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। মনদীপের আইনজীবীর অভিযোগ, তাঁকে নিয়োগ করার আগেই সকাল সকাল ওই নির্দেশ দেয় আদালত। সোমবার জামিনের আর্জির শুনানি।

কৃষক আন্দোলন নিয়ে সরব হওয়া কংগ্রেস নেতা শশী তারুর এবং ৬ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে শনিবার বিজেপি-শাসিত উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ ও হরিয়ানায় এফআইআর করা হয়েছিল। অভিযোগ, ২৬ জানুয়ারি লালকেল্লায় কৃষকদের ট্র্যাক্টর মিছিলকে কেন্দ্র করে যে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে, সেই সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর এবং ভুল তথ্য ছড়িয়েছেন এঁরা। একই অভিযোগে খবরের একটি পোর্টালের সম্পাদক সিদ্ধার্থ বরদারাজনের বিরুদ্ধেও মামলা করেছে পুলিশ। সিংঘুতে দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে পুলিশি পদক্ষেপের খবর ছড়াতেই সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে বলে দিকে দিকে আওয়াজ ওঠে। মনদীপের মুক্তি চেয়ে দিল্লি পুলিশের সদর দফতর থেকে প্রেস ক্লাব পর্যন্ত মিছিল করেন দিল্লির সাংবাদিকেরা। রাহুল গাঁধী টুইটারে লেখেন, ‘‘সত্যকে যারা ভয় পায়, তারাই সৎ সাংবাদিকদের গ্রেফতার করে।’’

ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার। সে দিন সিংঘুতে কৃষক-বিরোধী একটি মারমুখী দলের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন আন্দোলনকারীরা। ঘটনাস্থলে ব্যারিকেড দিয়ে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করছিল পুলিশ। অভিযোগ, মনদীপেরা বিক্ষোভকারীদের দলে ছিলেন। সঙ্গে সাংবাদিকের পরিচয়পত্র ছিল না। সেই সময়ে মনদীপেরা ব্যারিকেড সরিয়ে এগোনোর চেষ্টা করলে এক পুলিশকর্তা বাধা দেন। ওই কর্তার সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে মনদীপ। এবং দুর্ব্যবহার করেন।

শনিবার রাতে আটক হওয়ার আগে, ফেসবুকে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন মনদীপ। তাতে অবশ্য উল্টো বয়ান শোনা গিয়েছে। সেই ভিডিয়োয় দিল্লি পুলিশ এবং শাসক দলের ‘গোপন আঁতাঁতের’ অভিযোগ তুলেছেন মনদীপ। তাঁর দাবি, শুক্রবার সিংঘু সীমানায় জনা পঞ্চাশের একটি দল জাতীয় পতাকা হাতে আন্দোলনকারীদের উপরে চড়াও হয়। গালিগালাজ করে কৃষকদের উঠে যাওয়ার জন্য হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি পাথরও ছোড়ে তারা। এমনকি মহিলা প্রতিবাদীদের তাঁবু লক্ষ্য করে পেট্রল বোমাও ছোড়া হয়। মনদীপের বক্তব্য, আক্রমণকারীরা নিজেদের স্থানীয় বাসিন্দা বলে দাবি করলেও, আন্দোলনকারীরা বলেছেন, এরা সকলেই বিজেপির কর্মী ও সমর্থক। তাঁর আরও দাবি, ৫ থেকে ৬ হাজার পুলিশকর্মী ঘটনাস্থলে থেকেও নীরব ছিলেন। আর তাণ্ডবকারীদের আড়ালে থেকে সাহায্য করেছে অন্তত হাজার দু’য়েক পুলিশ। তাণ্ডবকারীরা যে আসলে বিজেপির কর্মীই, তা বোঝাতে ওই ভিডিয়োয় বেশ কিছু ছবি দেখিয়েছেন মনদীপ।

কৃষক আন্দোলনকে ঘিরে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এ ভাবে মামলা করা ও ধরপাকড়ের ঘটনার নিন্দা করেছে ‘ইন্ডিয়ান উইমেন্স প্রেস কোর’, ‘প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়া’, ‘দ্য এডিটর্স গিল্ড অব ইন্ডিয়া’-সহ বিভিন্ন সংগঠন।

অন্য বিষয়গুলি:

delhi Farmers Protest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy