ছবি: সংগৃহীত।
অসমে রটানো হচ্ছে, রাজ্য সরকার বিহু কমিটিগুলি ও শিল্পীদের উপরে ৬ থেকে ১৮ শতাংশ জিএসটি চাপিয়েছে। বলা হচ্ছে, সংশোধিত নাগরিক আইন তথা সিএএ-বিরোধী অবস্থা নেওয়ার কারণে ‘শিক্ষা দিতে’ এটা করা হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ ছড়ালেও রাজ্যের অর্থমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে অপপ্রচার চলছে। তাঁর বক্তব্য, এটা ঠিক যে, এ বার থেকে বিহু কমিটিগুলিকে রঙালি বিহুতে ১০ হাজার টাকার উপরে সব লেনদেন চেকের মাধ্যমে করতে হবে। কিন্তু বিহু কমিটির উপরে কোনও জিএসটি চাপানো হয়নি। আর যে সব শিল্পীর বার্ষিক আয় ২০ লক্ষ টাকার উপরে, তাদের ৬% ও যাঁদের আয় ৫০ লক্ষ টাকার উপরে, তাঁদের ১৮% হারে কর দিতেই হবে। দেড় লক্ষ টাকার বেশি পারিশ্রমিক নিলেও কর দিতে হয়।
ঘরের দরজায় ভোগালি বা মাঘ বিহু। কিন্তু সিএএ-র বিরুদ্ধে ছাত্র, শিল্পী ও নাগরিক সমাজের লাগাতার প্রতিবাদ, আন্দোলনের জেরে অনেকটাই ম্রিয়মাণ অসমের পরিস্থিতি। পিঠা, নাড়ু, দই, মোয়া বিক্রি হলেও দোকানের সামনে ঝোলানে ‘নো সিএএ’ বোর্ড।
শিল্পীরা মঞ্চ থেকে সরকারের বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত। সরকার ঘোষণা করেছে ২ হাজার শিল্পীকে এককালীন ৫০ হাজার টাকার ভাতা দেওয়া হবে। শিল্পী সমাজের অনেকেই সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।
আরও পড়ুন: সংবিধান রক্ষার দাবিতে খোলা চিঠি শর্মিলা শর্মিলা ঠাকুরদের
এখন আবার জিএসটি নিয়ে যা রটছে, তার সত্যাসত্য না জেনেই অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করেছেন। এপ্রিলে শুরু হয়ে প্রায় জুন পর্যন্ত চলে বিহু থেকে বহাগ বিদায়। এই সময়েই রাজ্যের শিল্পীরা সবচেয়ে বেশি রোজগার করেন। শিল্পী সমাজের অভিযোগ, সিএএ এবং সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খোলার ফলেই সরকারের তরফে ‘শাস্তিমূলক’ ব্যবস্থা নেওয়া হল। গায়ক বিপিন চাওদাঙের দাবি, একজন শিল্পীকে কেন্দ্র করে ২০-২৫ জনের সংসার চলে। বিহুই তাঁদের মূল রোজগার। তার উপরে কর চাপানো অন্যায়। সরকার-বিরোধী অবস্থান নেওয়ায় এ ভাবে প্রতিশোধ নিচ্ছে সরকার। গুয়াহাটির ঐতিহ্যশালী লতাশিলের বিহু সম্মিলনীর উপদেষ্টা কৈলাশ শর্মা বলেন, ‘‘বিহু অসমের প্রধান উৎসব। তাকে জিএসটির আওতা থেকে বাদ রাখা উচিত। বড় স্পনসরদের করা বড়সড় অনুষ্ঠানে জিএসটি নিলে আপত্তি নেই, কিন্তু অসমবাসী বিহু পালন করে চাঁদা তুলে।’’ এই পরিস্থিতিতে মন্ত্রী হিমন্তবিশ্বের বার্তা, ‘‘নতুন করে জিএসটি চাপানোর প্রশ্নই নেই। ২০১৭ থেকে যে নিয়ম চলছে, এর সঙ্গে সিএএ-র কোনও সম্পর্ক নেই। অথচ মিথ্য প্রচার চালিয়ে শিল্পী ও বিহু কমিটির মধ্যে সরকার-বিরোধিতা ছড়ানো হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy