ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা অনুযায়ী দু’দেশের সেনাই পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) বরাবার ২০২০ সালের মে মাসের আগেকার অবস্থানে ফিরে গিয়েছে। সোমবার এই দাবি করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, ‘‘পূর্ব লাদাখের এলএসিতে ‘ডিসএনগেজমেন্ট’ (মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পিছনো) প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে।’’ ২০২০ সালের মে মাসের আগে দু’পক্ষের সেনা এলএসসি যে এলাকা পর্যন্ত টহলদারি করতে যেত, সাড়ে চার বছর পরে সেই ব্যবস্থাই পুনর্বহাল হচ্ছে।
সোমবার বিদেশমন্ত্রীর ওই বিবৃতির আগে বিদেশ সচিব বিক্রম মিশরি জানিয়েছিলেন, সংঘাতের অবসান ঘটাতে ‘টহলদারির সীমানা’ নির্ধারণের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে ভারত এবং চিন। তিনি বলেন, ‘‘আলোচনার মাধ্যমে আমরা চিনের সঙ্গে এ বিষয়ে সহমতে এসেছি।’’ আগামী ২২-২৩ নভেম্বর ব্রিকস গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির (ভারত, রাশিয়া, চিন, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা) শীর্ষবৈঠকে যোগ দিতে রাশিয়া যাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার আগেই লাদাখ পরিস্থিতি নিয়ে নয়াদিল্লি-বেজিং সমঝোতায় পৌঁছল।
আরও পড়ুন:
২০২০ সালের এপ্রিল থেকে এলএসি পেরিয়ে পূর্ব লাদাখের বিভিন্ন এলাকায় অনুপ্রবেশের অভিযোগ উঠেছিল চিনা ফৌজের বিরুদ্ধে। উত্তেজনার আবহে ওই বছরের ১৫ জুন গালওয়ানে চিনা হামলায় নিহত হয়েছিলেন ২০ জন ভারতীয় সেনা। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতীয় জওয়ানদের পাল্টা হামলায় বেশ কয়েক জন চিনা সেনাও নিহত হয়েছিল।
আরও পড়ুন:
গালওয়ান-কাণ্ডের পর থেকেই কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনে দফায় দফায় বৈঠক শুরু হয়েছিল। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে চুশুল-মলডো পয়েন্টে দুই সেনার কোর কমান্ডার স্তরের বৈঠকে এলএসির কিছু এলাকায় ‘মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পিছনো’ (ডিসএনগেজমেন্ট) এবং ‘সেনা সংখ্যা কমানো’ (ডিএসক্যালেশন)-র বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছিল। কিন্তু প্যাংগং হ্রদ লাগোয়া ফিঙ্গার এরিয়া, ডেপসাং উপত্যকা-সহ বিভিন্ন এলাকা নিয়ে সমস্যা মেটেনি। তা ছাড়া, ২০২০-র এপ্রিলের আগে ভারতীয় জওয়ানেরা ফিঙ্গার-৮ পর্যন্ত টহল দিলেও নতুন ব্যবস্থায় ফিঙ্গার-৫ পেরোতে পারছিলেন না বলে অভিযোগ উঠেছিল। সেই ব্যবস্থা আবার চালু হচ্ছে জানিয়ে জয়শঙ্কর বলেছেন, ‘‘দুই বৃহৎ প্রতিবেশির মতপার্থক্য দূর করার পথে একটি বড় পদক্ষেপ হয়েছে।’’