Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

বর্মা-কাণ্ডে পট্টনায়কের মন্তব্যই হাতিয়ার কংগ্রেসের

সুপ্রিম কোর্ট সিবিআই অধিকর্তা পদে অলোক বর্মাকে পুনর্বহাল করলেও, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিয়োগ কমিটির বৈঠক ডেকে বর্মাকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেন। মোদীর হাতিয়ার ছিল, বর্মার দুর্নীতি নিয়ে কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশন বা সিভিসি-র তদন্ত রিপোর্ট।

অলোক বর্মা।—ফাইল চিত্র।

অলোক বর্মা।—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৫১
Share: Save:

অলোক বর্মা কাণ্ডে প্রাক্তন বিচারপতি এ কে পট্টনায়কের মন্তব্যকে হাতিয়ার করে আসরে নামল কং‌গ্রেস। ফলে অলোক বর্মাকে নিয়ে মোদী সরকারের অস্বস্তি কমল না।

সুপ্রিম কোর্ট সিবিআই অধিকর্তা পদে অলোক বর্মাকে পুনর্বহাল করলেও, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিয়োগ কমিটির বৈঠক ডেকে বর্মাকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেন। মোদীর হাতিয়ার ছিল, বর্মার দুর্নীতি নিয়ে কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশন বা সিভিসি-র তদন্ত রিপোর্ট।

কিন্তু ওই রিপোর্ট নিয়েই এ বার প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি পট্টনায়ক। সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি পট্টনায়কের নজরদারিতেই সিভিসি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। পট্টনায়ক জানান, সিভিসি-র তদন্ত রিপোর্ট সিভিসি-রই। তাঁর নয়। আরও এক ধাপ এগিয়ে পট্টনায়কের মন্তব্য, ‘‘দুর্নীতির বিষয়ে বর্মার বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ মেলেনি। পুরো তদন্ত হয়েছে রাকেশ আস্থানার অভিযোগের ভিত্তিতে। আমি আমার রিপোর্টে স্পষ্ট করে দিয়েছি, সিভিসি-র তদন্ত রিপোর্ট আমার নয়।’’

মোদীর মন্ত্রীরা ভেবেছিলেন, বর্মাকে সরানোর পরে গোটা বিতর্ক ধামাচাপা পড়ে যাবে। কিন্তু পট্টনায়কের মন্তব্য মোদী সরকারের গায়ে আরও কাদা মাখিয়েছে বলে মত বিরোধীদের। এ নিয়ে মাঠে নেমে কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনুসিঙ্ঘভির প্রশ্ন, বর্মার দুর্নীতির প্রমাণ না মিললে তাঁকে সরাতে এত তাড়াহুড়ো কেন করলেন মোদী? কোন তদন্ত ধামাচাপা দিতে? রাফাল-চুক্তি? না অন্য কোনও কেলেঙ্কারি?

কংগ্রেস সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে, লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে ফের নিয়োগ কমিটির বৈঠক ডাকার দাবি তুলতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও যে কমিটিতে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের প্রতিনিধি হিসেবে বিচারপতি এ কে সিক্রি ও খড়্গে হাজির ছিলেন। বর্মাকে সরানো নিয়ে খড়্গে আপত্তি তুললেও মোদী ও সিক্রির ভোটে তা খারিজ হয়ে যায়। খড়্গে বলেন, ‘‘কমিটির সিদ্ধান্ত শুধু সিভিসি-র রিপোর্টের ভিত্তিতে হয়েছিল। তাতে বিচারপতি পট্টনায়কের রিপোর্ট পেশই করা হয়নি।’’

পট্টনায়কের মন্তব্যের পরে রামলীলা ময়দানে বিজেপির মহাসম্মেলনে বক্তৃতা করেন মোদী। কিন্তু তিনি এ নিয়ে মুখ খোলেননি। কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারি বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে প্রশ্ন তোলেন, প্রধানমন্ত্রী কেন এই প্রশ্নের জবাব দিলেন না? মোদী সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে মহাসম্মেলনের মাঠেই বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী যুক্তি দেন, ‘‘পট্টনায়ক ঠিকই বলেছেন। এত তাড়াহুড়ো করা উচিত হয়নি। সিভিসি-র রিপোর্টের ভিত্তিতে বর্মার জবাবও শোনা উচিত ছিল।’’

অস্বস্তিতে পড়ে মোদী সরকারের শীর্ষ কর্তারা প্রশ্ন তুলেছেন, পট্টনায়ক নিজে তো কোনও তদন্ত করেননি। তা হলে তিনি কী করে বলেন, তদন্তে দুর্নীতির প্রমাণ মেলেনি! যদি প্রমাণ না মেলে, তা হলে ওই কমিটিতে বিচারপতি এ কে সিক্রি কেন আপত্তি তুললেন না? তিনি কেন বর্মাকে সরানোর পক্ষে সায় দিলেন?

এখানেই বিচারপতি সিক্রির ভূমিকা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। প্রধান বিচারপতি কেন তাঁকে প্রতিনিধি হিসেবে পাঠালেন, তা নিয়ে আগেই প্রবীণ আইনজীবীরা প্রশ্ন তুলেছিলেন। কারণ বিচারপতি সিক্রি মার্চেই অবসর নেবেন। তারপরে তাঁকে লোকপাল বা আইন কমিশনের প্রধান করা হতে পারে বলে জল্পনা চলছে। আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহের দাবি, ‘‘বিচারপতি সিক্রি শপথ করে বলুন, তিনি অবসরের পরে কোনও সরকারি পদ নেবেন না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

A. K. Patnaik Reprot CVC Alok Verma Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE