ভারতে আসবেন টেসলাকর্তা ইলন মাস্ক! শনিবার দুপুরে (ভারতীয় সময় অনুসারে) নিজের সমাজমাধ্যম হ্যান্ডলে সেই কথাই জানিয়েছেন তিনি। ইলন লিখেছেন, চলতি বছরের শেষ দিকে ভারতে আসার জন্য তিনি মুখিয়ে রয়েছেন। ঘটনাচক্রে, শুক্রবারই টেসলাকর্তার সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তাঁদের। ওই ফোনালাপের পরেই ভারত সফরে আসার সিদ্ধান্তের কথা জানালেন ইলন। টেসলকর্তার সমাজমাধ্যমের পোস্টেও মোদীর সঙ্গে আলোচনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ইলন লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে কথা বলতে পেরে তিনি সম্মানিত।
বৈদ্যুতিন গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা টেসলা সম্প্রতি ভারতীয় বাজারেও নিজেদের ব্যবসা সম্প্রসারিত করতে উদ্যোগী হয়েছে। সূত্রের খবর, ভারতীয় সংস্থা ‘টাটা’র সঙ্গে ইতিমধ্যে গাঁটছড়া বেঁধেছে টেসলা। ইলনের সংস্থার তৈরি গাড়ির ভারতীয় বাজারে মূল সরবরাহকারী হতে পারে তারা। বস্তুত, ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই আমেরিকার সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কও আরও জোরদার করতে উদ্যোগী মোদী সরকার। সেই আবহেই গত ফেব্রুয়ারি মাসে আমেরিকা গিয়েছিলেন মোদী। ট্রাম্পের সঙ্গে একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় তাঁর। শুধু তা-ই নয়, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তিও অগ্রাধিকার পায়। ওই সফরের সময়ে ইলনের সঙ্গেও বৈঠক হয়েছিল তাঁর।
বস্তুত, ট্রাম্পের শুল্কনীতি এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য নিয়ে ভারত এবং আমেরিকা উভয় দেশেরই আলোচনা চলছে। দুই দেশই চাইছে দ্রুত চুক্তি চূড়ান্ত করে ফেলতে। এরই মধ্যে প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবন ক্ষেত্র নিয়ে ইলনের সঙ্গে আলোচনা সারলেন মোদী। টেসলা সংস্থার মালিক হওয়ার পাশাপাশি ট্রাম্পের প্রশাসনে অন্যতম পরামর্শদাতার ভূমিকায় রয়েছেন ইলন। তিনি আমেরিকার সরকারি দক্ষতা বিষয়ক দফতরের দায়িত্বে রয়েছেন। ঘটনাচক্রে, আগামী সপ্তাহের শুরুতে ভারত সফরে আসার কথা রয়েছে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স এবং তাঁর স্ত্রী উষা ভান্সের। আগামী ২১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারেন আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন:
অন্য দিকে, এয়ারটেল, জিয়ো-র সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে ভারতে পা রাখতে চলেছে ইলন মাস্কের কৃত্রিম উপগ্রহভিত্তিক ইন্টারনেট পরিষেবা স্টারলিঙ্ক। কিন্তু তারা ভারতে পরিষেবা প্রদানের অনুমোদন পাবে কি না, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। ‘টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সরকার স্টারলিঙ্ককে ভারতে একটি নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র তৈরি করার কথা বলেছে। শুধু তা-ই নয়, মাস্কের স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট পরিষেবা যাতে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে না পারে, সেই দিকে নজর রাখতে হবে স্টারলিঙ্ককে। তার জন্য কী কী পদক্ষেপ করতে হবে, তা-ও ইলনের সংস্থাকে জানিয়েছে মোদী সরকার। দেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলিকে প্রয়োজনে কারও ফোনের তথ্য পেতে স্টারলিঙ্ককে অনুমতি দিতে হবে বলেও জানিয়েছে কেন্দ্র। এই আবহে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে মাস্কের ফোনালাপ এবং তার পর মার্কিন ধনকুবেরের ভারত সফরের ঘোষণা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।