ভোটের সচিত্র পরিচয়পত্র নিয়ে অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল-সহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। তার মাঝেই দেশের সব মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) এবং জেলা নির্বাচনী আধিকারিক (ডিইও)-সহ নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকদের রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠক করার নির্দেশ দিল নির্বাচন কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলির সমস্যার কথা শুনতে বলা হয়েছে তাঁদের। সেই সমস্যা শুনে আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে রিপোর্ট জমা করতে বললেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার।
মঙ্গলবার দিল্লিতে আইআইআইডিইএম-এর (ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ডেমোক্র্যাসি অ্যান্ড ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট) দফতরে দু’দিনের বৈঠক শুরু হয়েছে। সেখানেই সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক করেন জ্ঞানেশ। মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের পদে নিযুক্ত হওয়ার পরে এই প্রথম বৈঠক করছেন তিনি। সেই বৈঠকে তিনি মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক এবং জেলা নির্বাচনী আধিকারিকদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে কথা বলার নির্দেশ দেন। কমিশনের তরফে আরও বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলির কোনও সমস্যা থাকলে নিয়মিত বৈঠক করে তা মেটানোর চেষ্টা করতে হবে সিইও, ডিইও-দের। ৩১ মার্চের মধ্যে তা নিয়ে রিপোর্ট জমা করতে হবে কমিশনের কাছে।
ভুয়ো ভোটার, একই নম্বরের একাধিক সচিত্র পরিচয়পত্র নিয়ে অভিযোগ উঠেছে দেশে। কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিজেপির দিকে আঙুল তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই পরিস্থিতিতে রবিবার নির্বাচন কমিশন বিজ্ঞপ্তি জারি করে ব্যাখ্যা দেয় যে, অনেক ক্ষেত্রেই এপিক নম্বর এক হলেও ভোটকেন্দ্র এবং বিধানসভা কেন্দ্র আলাদা হয়। এপিক কার্ডে যে কেন্দ্রের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে, শুধু সেখানেই ভোট দেওয়া যাবে। অন্য কোথাও নয়। তাতেও বিতর্ক থামেনি। তৃণমূল পাল্টা দাবি করেছে, সচিত্র পরিচয়পত্র নিয়ে ‘ভুলের দায়’ স্বীকার করতে হবে কমিশনকে। সেই আবহে মঙ্গলবার সিইও, ডিইও-দের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন জ্ঞানেশ। সেখানে তাঁদের রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে কথা বলার নির্দেশ দিলেন। মনে করা হচ্ছে, সাম্প্রতিক বিতর্কের মাঝে এই নির্দেশ ‘তাৎপর্যপূর্ণ’।
আরও পড়ুন:
জ্ঞানেশ মঙ্গলবারের বৈঠকে সুষ্ঠু ভাবে ভোট করানো নিয়েও কিছু বার্তা দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, এ দেশে ১৮ বছরের বেশি বয়সি প্রত্যেক নাগরিক যাতে ভোটে দিতে পারেন, তা সিইও, ডিইও-সহ কমিশনের আধিকারিকদের নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি, এ-ও দেখতে হবে যে, কমিশনের কোনও আধিকারিককে যাতে কেউ ভয় দেখাতে না পারেন। প্রত্যেক বুথে ৮০০ থেকে ১,২০০ ভোটার, ভোটারদের বাসস্থানের ২ কিলোমিটারের মধ্যে বুথ রাখাও নিশ্চিত করতে হবে আধিকারিকদের।