উদ্ধব ঠাকরে (বাঁ দিকে) এবং একনাথ শিন্ডে (ডান দিকে)। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
শিবসেনার প্রকৃত উত্তরাধিকার নিয়ে একনাথ শিন্ডে এবং উদ্ধব ঠাকরের শিবিরের মধ্যে লড়াই চলছেই। দলের প্রতিষ্ঠা দিবসের কর্মসূচি পালনেও সেই বিরোধ প্রকাশ্যে চলে এল। শিবসেনার প্রতিষ্ঠা দিবসে আলাদা অনুষ্ঠানের আয়োজন করল দুই শিবিরই। সোমবার শিন্ডে গোষ্ঠীর তরফে প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠাটির আয়োজন করা হয়েছে উত্তর-পশ্চিম মুম্বইয়ের গোরেগাঁওতে। একই দিনে মধ্য মুম্বইয়ের সায়নে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে উদ্ধব শিবিরও।
দুই শিবির সূত্রেই খবর, দলের প্রতিষ্ঠাতা বাল ঠাকরের আসল উত্তরসূরী যে তারাই, অনুষ্ঠান থেকে সেই বার্তাই দেওয়া হবে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, শিন্ডে গোষ্ঠীর অনুষ্ঠানের মূল বক্তা হিসাবে থাকবেন একনাথ শিন্ডে এবং তাঁর পুত্র তথা শিবসেনা সাংসদ শ্রীকান্ত শিন্ডে। অন্য দিকে উদ্ধব শিবির সূত্রে খবর, তাদের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখবেন, উদ্ধব ঠাকরে, তাঁর পুত্র তথা রাজ্যের বিধায়ক আদিত্য ঠাকরে, দলের রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় রাউত। উদ্ধব শিবির নিয়ন্ত্রিত শিবসেনার মুখপাত্র ‘সামনা’-তে রবিবার লেখা হয়েছে যে, দলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে মুম্বইয়ের ওরলিতে একটি কনক্লেভের আয়োজন করা হয়েছে। ওই কনক্লেভে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে উদ্ধবের একাধিক উন্নয়নমূলক কাজকে একটি তথ্যচিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে।
রাজনৈতিক ব্যঙ্গচিত্র শিল্পী হিসাবে কর্মজীবন শুরু করা বাল ঠাকরে ১৯৬৬ সালের ১৯ জুন শিবসেনা প্রতিষ্ঠা করেন। ‘মরাঠি মানুষ’দের অধিকার রক্ষাতেই বার বার সরব হয়েছে শিবসেনা। তাঁদের আগ্রাসী এবং রক্ষণশীল নীতি নিয়ে বহু বিতর্কও তৈরি হয়েছে। তবু মহারাষ্ট্রে মরাঠা জাতিসত্তাকে নিয়ে নির্বাচনে লড়া শিবসেনার রাজনৈতিক গুরুত্ব কমেনি। মনে করা হচ্ছে, সোমবারের দুই কর্মসূচি থেকে যুযুধান দুই শিবিরই একে অপরের বিরুদ্ধে সরব হবে। দু’পক্ষই দাবি করছে যে, তাদের কর্মসূচিতেই দলের সাধারণ কর্মী-সমর্থকেরা আসবেন।
গত বছর ২০ জুন আচমকাই শিবসেনার ভিতরে বিদ্রোহ শুরু হয়। শিন্ডের নেতৃত্বে বেশ কয়েক জন দলীয় বিধায়ক উদ্ধবের সঙ্গ ত্যাগ করার কথা ঘোষণা করে মহারাষ্ট্র ছেড়ে বিজেপি-শাসিত গোয়ায় পাড়ি দেন। তখনই দেশের বিরোধী দলগুলি বিষয়টির মধ্যে বিজেপির জড়িত থাকার ইঙ্গিত দেয়। এর পরে বিক্ষুব্ধ শিবিরের সঙ্গে উদ্ধব এবং মহারাষ্ট্রের তৎকালীন শাসকজোট মহা বিকাশ আঘাড়ির শীর্ষ নেতৃত্বের দফায় দফায় বৈঠকেও বরফ গলেনি। উল্টে শিন্ডে এবং তাঁর অনুগামী বিধায়কেরা বিজেপি-যোগের প্রমাণ স্পষ্ট করে দিয়ে অসমে পাড়ি দেন। শিবসেনার ভাঙন দ্রুত স্পষ্ট হয় এবং মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়েন উদ্ধব। বিজেপির সমর্থনে নতুন মুখ্যমন্ত্রী হন শিন্ডে। শিবসেনা বিধায়কদের বড় অংশই উদ্ধবের সঙ্গ ছেড়ে শিন্ডের হাত ধরেন। পরে জাতীয় নির্বাচন কমিশন শিন্ডে শিবিরকেই প্রকৃত শিবসেনার স্বীকৃতি দিয়ে তাঁদের দলের নাম এবং তির-ধনুক প্রতীক ব্যবহারের অনুমতি দেয়। উদ্ধবের নেতৃত্বাধীন অংশটিকে শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে) নামে স্বীকৃতি দেয় কমিশন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy