Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Anubrata Mondal

কেষ্টর জামিনে অস্বস্তিতে ইডি, দিল আইনি ব্যাখ্যা

ইডি-র এই ‘নিষ্ক্রিয়তা’ নিয়ে রাজনৈতিক শিবিরে প্রশ্ন উঠেছে, এর পিছনে কি কোনও গোপন আঁতাঁত রয়েছে? না কি অনুব্রতকে কেন্দ্র করে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হতে চলেছে?

তিহার জেল থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে বোলপুর নিচুপট্টির বাড়িতে এসে নিজের চেয়ারে বসে আছেন অনুব্রত মণ্ডল।কথা বলছেন কোর কমিটির সদস্য সুদীপ্ত ঘোষ।মঙ্গলবার।

তিহার জেল থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে বোলপুর নিচুপট্টির বাড়িতে এসে নিজের চেয়ারে বসে আছেন অনুব্রত মণ্ডল।কথা বলছেন কোর কমিটির সদস্য সুদীপ্ত ঘোষ।মঙ্গলবার। ছবিঃ বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

প্রেমাংশু চৌধুরী
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:৩৪
Share: Save:

দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্ট আবগারি দুর্নীতি মামলায় গত জুনে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের জামিন মঞ্জুর করেছিল। তিনি তিহাড় জেল থেকে বার হওয়ার আগেই দিল্লি হাই কোর্টে গিয়ে ইডি জামিনের রায়ে স্থগিতাদেশ আদায় করে নিয়েছিল। গত শুক্রবার সেই রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টই তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের নির্দেশ দিয়েছে। সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে অনুব্রত সোমবার রাতে তিহাড় জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। হাতে ৭২ ঘণ্টা সময় পেলেও ইডি গরুপাচার মামলায় ওই তৃণমূলনেতার জেল-মুক্তি ঠেকানোর চেষ্টা করেনি।

ইডি-র এই ‘নিষ্ক্রিয়তা’ নিয়ে রাজনৈতিক শিবিরে প্রশ্ন উঠেছে, এর পিছনে কি কোনও গোপন আঁতাঁত রয়েছে? না কি অনুব্রতকে কেন্দ্র করে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হতে চলেছে?

ইডি সূত্রের অবশ্য যুক্তি, জুনে কেজরীওয়ালের জামিন ও সেপ্টেম্বরে অনুব্রতের জামিনের মধ্যে একটা বড় আইনগত ফারাক হয়ে গিয়েছে। তা হল, দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের মণীশ সিসৌদিয়ার জামিনের নির্দেশ। সেই রায়ে সুপ্রিম কোর্ট বলে দিয়েছে, জামিনটাই নিয়ম, জেল ব্যতিক্রম। আগে ইডি-র মামলায় জামিন পেতে যে কঠিন শর্ত পূরণ করতে হত, সুপ্রিম কোর্ট সিসৌদিয়াকে জামিন দিয়ে সেই শর্তও শিথিল করেছে। শীর্ষ আদালতের সেই রায়কে সামনে রেখেই এখন একের পর এক ইডি-র মামলায় কে কবিতা থেকে অনুব্রত, এনামুল হক থেকে সুকন্যা মণ্ডলেরা জামিন পেয়ে যাচ্ছেন। যে কেজরীওয়ালের জামিন দিল্লি হাই কোর্ট জুনে নাকচ করেছিল, তিনিই এখন সুপ্রিম কোর্টে জামিন পেয়ে গিয়েছেন।

ইডি এই যুক্তি দিলেও অনুব্রতের মতো তৃণমূল নেতাদের জামিনে বিজেপি রাজ্য রাজনীতিতে অস্বস্তির মুখে পড়েছে। কারণ তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপির প্রধান অস্ত্র ছিল, নানা দুর্নীতির মামলায় সিবিআই, ইডি-র হাতে তৃণমূল নেতাদের গ্রেফতারি। অথচ সারদা-রোজ ভ্যালির মতো ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থার কেলেঙ্কারিতে আগেই তৃণমূলের নেতারা জামিন পেয়ে গিয়েছেন। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জামিন পেয়ে গিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। গরুপাচার মামলায় অনুব্রত জামিন পেয়ে যাওয়ার পরে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, এর পরে কি পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকেরাও জামিন পেয়ে যাবেন?

ইডি-র আইনজীবীদের ব্যাখ্যা, আগে ইডি-র মামলায় জামিন মেলা খুবই কঠিন ছিল। কারণ আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইনের ৪৫ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, অভিযুক্তকেই আদালতকে বিশ্বাস করাতে হবে তিনি নির্দোষ বলে মনে করার কারণ রয়েছে। তিনি জামিন পেলে একই অপরাধ করবেন না। জোড়া শর্ত পূরণ হলে তবেই জামিন মিলত। কিন্তু সিসৌদিয়াকে জামিন দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলে, অদূর ভবিষ্যতে বিচার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার সম্ভাবনা না থাকলে জামিন পাওয়াটা মৌলিক অধিকারের অঙ্গ।

দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্ট অনুব্রতকে জামিন দেওয়ার ক্ষেত্রে সিসৌদিয়ার মামলায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বি আর গাভাইয়ের বেঞ্চের রায়ের উল্লেখ করেছে। ইডি সূত্রের বক্তব্য, ‘‘অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে আইনি পদক্ষেপ হবে কি না, তা শীর্ষ স্তরে সিদ্ধান্ত হবে। তবে শুক্রবারের জামিনের পরে তড়িঘড়ি দিল্লি হাই কোর্টে গিয়ে লাভ হত না বুঝেই সেই পদক্ষেপ করা হয়নি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Anubrata Mondal Enforcement Directorate ED
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy