—প্রতীকী চিত্র।
কাউকে তলব করে ‘অযৌক্তিক’ সময়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন না এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র তদন্তকারী আধিকারিকেরা। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ইডির দফতরে অপেক্ষাও করানো যাবে না। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, সম্প্রতি এই মর্মে তদন্তকারী আধিকারিকদের জন্য একটি অভ্যন্তরীণ নির্দেশিকা জারি করেছে ইডি। এ রাজ্যেও শিক্ষা ক্ষেত্র থেকে শুরু করে একাধিক ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত চালাচ্ছে ইডি। বাংলাতেও ইডির তলবে হাজিরা দিয়ে দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করানোর অভিযোগ উঠেছে। এই ছবি শুধু বাংলাতেই নয়, দেশের অন্যান্য প্রান্তেও এই ধরনের অভিযোগ উঠেছে। একাধিক আদালতেও এই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই আবহেই এ বার জিজ্ঞাসাবাদ প্রসঙ্গে অভ্যন্তরীণ নির্দেশিকা জারি করল ইডি।
বম্বে হাই কোর্টের এক নির্দেশের প্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এক আর্থিক দুর্নীতির মামলার তদন্তে ৬৪ বছর বয়সি এক বৃদ্ধকে তলব করেছিল ইডি। সারা রাত তাঁকে ইডির দফতরে ‘আটকে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ’ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। এই নিয়ে বম্বে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বৃদ্ধ। মামলাকারীর অভিযোগ, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়েছিল তাঁকে। এমনকি মাঝরাত পার হয়ে যাওয়ার পরও তাঁকে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। এক অযৌক্তিক সময়ে তাঁর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছিল বলেও ইডির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি।
বম্বে হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল, এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ঘুমের বিঘ্ন ঘটছে এবং তাঁর ন্যূনতম মানবাধিকার খর্ব হচ্ছে। তদন্তকারী সংস্থার এই ধরনের রেওয়াজ নিয়েও আপত্তি জানিয়ে হাই কোর্ট বলেছিল, “এই ধরনের কাজে আদালত অনুমোদন দেয় না।” এই বিষয়ে প্রয়োজনী নির্দেশিকা জারি করার জন্যও ইডিকে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।
পিটিআই জানাচ্ছে, গত ১১ অক্টোবর এই মর্মে একটি অভ্যন্তরীণ নির্দেশিকা জারি করে ইডি। সেখানে বলা হয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কাউকে ডেকে পাঠানোর আগে তদন্তকারী আধিকারিকদের সমস্ত নথিপত্র এবং প্রশ্নমালা তৈরি রাখতে হবে। নির্ধারিত সময়ে কাউকে ডেকে পাঠানোর পর যাতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে না হয়, সে কথাও বলা হয়েছে নির্দেশিকায়।
মূলত আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগগুলির তদন্তভার থাকে ইডির উপর। এটি এমন একটি বিষয়, যেখানে মোবাইল বা অন্য কোনও যন্ত্রের সাহায্যে সহজেই অপরাধমূলক কাজ থেকে পাওয়া অর্থ অন্যত্র স্থানান্তর করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে একই দিনে বা পরের দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিদ্ধান্তে পৌঁছনোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে তদন্তকারী আধিকারিকদের। পাশাপাশি বয়ান রেকর্ডের জন্য কোনও ‘অযৌক্তিক’ সময়ে কাউকে তলব করা যাবে না বলেও নির্দেশিকায় জানিয়েছে ইডি। সাধারণ ভাবে বেশি রাত পর্যন্ত এটি দীর্ঘায়িত করার বদলে, অফিসের সময়ের মধ্যেই এই প্রক্রিয়া শেষ করতে বলা হয়েছে।
প্রবীণ নাগরিকদের ক্ষেত্রে বা কারও গুরুতর শারীরিক সমস্যা থাকলে এই নিয়ম অবশ্যই মানতে বলা হয়েছে। যদিও শারীরিক অবস্থা কতটা গুরুতর, তা যাচাই করে দেখার কথাও বলা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে যদি অফিসের সময়ের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব শেষ না হয়, তবে পরের দিন বা দুই পক্ষের সম্মতিক্রমে কোনও দিনে পুনরায় তলবের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
শুধু বম্বে হাই কোর্টই নয়, সম্প্রতি অপর একটি মামলায় পঞ্জাব-হরিয়ানা হাই কোর্টেও প্রশ্নের মুখে পড়েছিল ইডি। আর্থিক দুর্নীতি সংক্রান্ত এক মামলায় কংগ্রেস বিধায়ককে টানা প্রায় ১৫ ঘণ্টা ইডির দফতরে থাকতে হয়েছিল। আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, ১৫ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ কোনও ‘নায়কোচিত’ কাজ নয়। বরং এটি কোনও মানুষের মর্যাদার পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেছিল আদালত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy