Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in India

অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে! রজনী এখনও বাকি

সেপ্টেম্বর মাসে জিএসটি থেকে রাজকোষে ৯৫,৪৮০ কোটি টাকা জমা পড়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রেমাংশু চৌধুরী
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২০ ০৪:৪৪
Share: Save:

অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বলে নির্মলা সীতারামনের অর্থ মন্ত্রক যতই দাবি করুক, অর্থনীতিবিদরা এখনও তার সঙ্গে একমত নন। তাঁদের মতে, ডিসেম্বর-জানুয়ারির ছবি দেখে তবেই বোঝা যাবে, অর্থনীতি সত্যিই ঘুরে দাঁড়িয়েছে কি না।

বৃহস্পতিবারই সরকারি তথ্য জানিয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসে জিএসটি থেকে রাজকোষে ৯৫,৪৮০ কোটি টাকা জমা পড়েছে। করোনা বিপর্যস্ত চলতি অর্থ বছরের এর আগে এত টাকা জিএসটি থেকে আয় হয়নি। তা দেখিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থসচিব অজয় ভূষণ পাণ্ডে দাবি করেছেন, এ হল অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর সুস্পষ্ট ইঙ্গিত। কারণ, জিএসটি থেকে আয় বেড়েছে মানেই কারখানায় উৎপাদন, বাজারে কেনাকাটা বেশি হয়েছে। কিন্তু দেশের প্রাক্তন মুখ্য পরিসংখ্যানবিদ প্রণব সেনের মতে, এ হল দীর্ঘ দিন লকডাউনের পরে বাজারহাট খুলে যাওয়ার প্রভাব। মার্চের শেষ থেকে লকডাউন জারি হয়। জুলাই মাস থেকে ঠিক মতো লকডাউন উঠেছে। ফলে মানুষ অনেক দিন টাকা খরচ করতে পারেননি। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারেননি।

অর্থনীতির নিয়ম মেনেই অনেক দিন বাজারে কেনাকাটা কম হলে তারপর আচমকাই তা বেড়ে যায়।

বর্তমানে ইন্টারন্যাশনাল গ্রোথ সেন্টারের ভারতীয় প্রধান প্রণব সেন বলেন, ‘‘লকডাউন তোলার পরে জুলাই মাস থেকে মানুষ কেনাকাটা করার সুযোগ পেয়েছেন। অনেক দিন টাকা খরচ করতে না পারার ফলে স্বাভাবিক ভাবেই কেনাকাটা বেড়ে যায়। তা ছাড়া সামনেই দুর্গাপুজো, দশেরা, দীপাবলির মতো উৎসবের মরসুম। এই সময় এমনিতেই কেনাকাটা বাড়ে। সংসারের ইলেকট্রনিক্স সরঞ্জামের মতো ভোগ্যপণ্য বেশি কেনা হয়। অক্টোবর-নভেম্বর পর্যন্ত এই ছবি বজায় থাকবে। জিএসটি থেকে আয়ও বাড়বে। ফলে তত দিন পর্যন্ত বোঝা যাবে না, অর্থনীতি সত্যিই ঘুরে দাঁড়িয়েছে, না কি এটা সাময়িক।’’

অর্থসচিবের দাবি, শুধু যে জিএসটি থেকে আয় বেড়েছে তা নয়। পণ্য পরিবহণের জন্য প্রয়োজনীয় ই-ওয়ে বিল বা ইলেকট্রনিক পারমিটেও রেকর্ড বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে। অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা বলছেন, গাড়ির ডিলাররা শো-রুমে বেশি সংখ্যায় গাড়ি রাখতে শুরু করেছেন। উৎসবের মরসুমে বাম্পার বিক্রির আশা করছেন তাঁরা। নতুন বরাত ও রফতানিতে ভর করে দেশের উৎপাদন শিল্পের সূচকেও ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিতও মিলেছে।

চিন্তা অন্যত্র। অর্থ মন্ত্রক সূত্রই মানছে, শিল্পে নতুন প্রকল্প শুরুর ক্ষেত্রে এখনও ভাটার টানই রয়েছে। জুলাই-সেপ্টেম্বরেও নতুন প্রকল্পের মূল্য এপ্রিল-জুনের তুলনায় কমেছে। গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরের তুলনায় এ বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে নতুন প্রকল্পের মূল্য প্রায় ৮২ শতাংশ কম। প্রণব বলেন, ‘‘নতুন প্রকল্প এখনও একেবারেই হচ্ছে না। কিছু পুরনো প্রকল্পে কাজ শুরু হচ্ছে। তা-ও পুরোপুরি না।’’

অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসে জিডিপি-র প্রায় ২৪ শতাংশ সঙ্কোচন হয়েছিল। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরেও সঙ্কোচনের ধারা অব্যাহত থাকবে বলে অর্থনীতিবিদ ও পরিসংখ্যানবিদদের মত। প্রণব বলেন, ‘‘আমার হিসেব, ২০২০-২১-এ জিডিপি-র প্রায় ১২ শতাংশ সঙ্কোচন হবে।

দ্বিতীয় দফায় অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার দাওয়াই দেওয়া হলে একটু ভাল হতে পারে। তা হলেও ৮ থেকে ১০ শতাংশ সঙ্কোচন হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy