Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Narendra Modi

আমদানি ছেঁটে ‘আত্মনির্ভর’ নয়, পরামর্শ মোদীকে

‘আত্মনির্ভর ভারত’-এর স্লোগান তোলার পর থেকে আমদানি করা পণ্যের উপরে নির্ভরতা কমাতে চাইছে মোদী সরকার।

ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২১ ০২:৩৪
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রীর ‘আত্মনির্ভর ভারত’ গড়ার স্বপ্নপূরণ করতে গিয়ে বিভিন্ন পণ্যের উপরে আমদানি শুল্ক বেড়েই চলেছে ক্রমশ। কিন্তু শুক্রবার নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে ঠিক তার বিপরীতে সওয়াল করলেন অর্থনীতিবিদরা। তাঁদের পরামর্শ, আমদানি শুল্ক বাড়ানো নয়, বরং কমানো হোক।

‘আত্মনির্ভর ভারত’-এর স্লোগান তোলার পর থেকে আমদানি করা পণ্যের উপরে নির্ভরতা কমাতে চাইছে মোদী সরকার। শুল্ক বাড়ানোর নীতি সেই কারণেই। এই প্রেক্ষাপটে শুক্রবার বাজেট-প্রস্তুতির অঙ্গ হিসেবে লকডাউনের ধাক্কা কাটিয়ে বৃদ্ধিকে চাঙ্গা করার রাস্তা খুঁজতে অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মোদী। সূত্রের খবর, ভার্চুয়াল ওই বৈঠকে আমদানি শুল্ক কমানোর পরামর্শ উঠে এসেছে।

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনও বৈঠকে ছিলেন। তাঁর মন্ত্রকের কর্তারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এর আগে স্টেট ব্যাঙ্কের রিপোর্টেও সুপারিশ করা হয়েছিল যে, ‘আত্মনির্ভর ভারত’ গড়তে আমদানি শুল্ক না-বাড়িয়ে বরং দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধিতে নজর দেওয়া হোক। যুক্তি ছিল, আমদানি শুল্ক বাড়লে, কাঁচামালের দাম বেড়ে যাচ্ছে। ফলে খরচ বাড়ছে শিল্পে উৎপাদনের।

গত বাজেটে চিনের সস্তা পণ্য আটকাতে খেলনা থেকে আসবাব, জুতো-চপ্পল থেকে বৈদ্যুতিন পণ্য পর্যন্ত বিভিন্ন সামগ্রীতে আমদানি শুল্ক বাড়ানো হয়েছিল। শুল্ক আইন সংশোধন করে যে কোনও পণ্যের আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারির রাস্তাও তৈরি করেছিলেন অর্থমন্ত্রী। তখনই অর্থনীতিবিদরা বলেছিলেন, ১৯৯১ সালের আর্থিক উদারিকরণ নীতির উল্টো পথে হাঁটছে কেন্দ্র। কারণ, বাজার নির্ভর অর্থনীতির পথে হাঁটতে শুরু করার পরে সোনা-রুপো ছাড়া সে ভাবে আর কিছুর আমদানি-রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি ভারত।

এ দিনের বৈঠকেও অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, আন্তর্জাতিক দুনিয়ার সঙ্গে লেনদেনে বাধা কাটানো সরকারের লক্ষ্য হওয়া উচিত। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের প্রাক্তন কর্ণধার কে ভি কামাথ, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন কর্তা রাকেশ মোহন, প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা শঙ্কর আচার্য, নীতি আয়োগের প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ অরবিন্দ পানাগাড়িয়া, এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের অর্থনীতিবিদ অভীক বডুয়া, স্টেট ব্যাঙ্কের সৌম্যকান্তি ঘোষ, নোমুরা-র সোনাল বর্মা প্রমুখ। ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের প্রধান বিবেক দেবরায়ও। আত্মনির্ভর ভারত প্রকল্পে কী ভাবে দেশকে আন্তর্জাতিক জোগান শৃঙ্খলের (সাপ্লাই চেন) অংশ হিসেবে তৈরির চেষ্টা হচ্ছে, তা নিজে ব্যাখ্যা করেছেন মোদী। দাবি করেছেন, এমন আগে হয়নি। তাঁর দাবি, কোভিডের ধাক্কা সামলেও সংস্কার ভিত্তিক উৎসাহ প্রকল্পের পথে হেঁটেছে সরকার। হাত দেওয়া হয়েছে কৃষি, শ্রমের সাহসী সংস্কারেও।

অর্থনীতিবিদরা খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হারের দিকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। যা এখন ৭ শতাংশের আশেপাশে। বিলগ্নিকরণে জোর দিতে বলেছেন। আয়কর তথা প্রত্যক্ষ কর এবং জিএসটির বোঝা কমানোর পক্ষে সওয়াল করেছেন। চলতি অর্থবর্ষে রাজকোষ ঘাটতি লাগামছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা। অর্থনীতিবিদদের সুপারিশ, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে আরও সরকারি লগ্নি প্রয়োজন হলেও, ঘাটতিতে লাগাম পড়ানোর নতুন রূপরেখা তৈরি রাখুক কেন্দ্র।

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi Import
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy