ফাইল চিত্র।
বিজ্ঞান ভবনে কৃষক নেতারা মোদী সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে তিন কৃষি আইন নিয়ে বৈঠকে বসতেন। দিল্লি-হরিয়ানার সিংঘু সীমানা থেকে বাসে চেপে কৃষক নেতারা বিজ্ঞান ভবনে পৌঁছনোর কিছু ক্ষণ পরেই তাঁদের জন্য চা, জলখাবার নিয়ে গুরুদ্বার থেকে গাড়ি চলে আসত। কৃষি আইন নিয়ে দর কষাকষির বিরতিতে বিজ্ঞান ভবনে সকলের জন্য চা-জলখাবারের বন্দোবস্ত থাকত। কিন্তু কৃষক নেতারা তা স্পর্শ করতেন না। তাঁরা ডাল-রুটির থালা নিয়ে মেঝেতেই বসে পড়তেন।
সাধারণত সরকারের সঙ্গে অন্য পক্ষের মধ্যে বৈঠকে এই ধরনের বিরতিতেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা বরফ গলানোর চেষ্টা করতেন। কিন্তু কৃষক নেতারা তার সুযোগই দেননি। এক দিকে তাঁরা যেমন বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখেছেন, তেমনই সরকারের মন্ত্রীদেরও ঘনিষ্ঠতার সুযোগ দেননি।
মোদী সরকারের তরফে কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর, খাদ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের উপরে দায়িত্ব পড়েছিল কৃষকদের সঙ্গে দর কষাকষি করার। কিন্তু বিজ্ঞান ভবনের বৈঠকে কৃষক নেতারা সরকারের জলস্পর্শ না করার নীতি নেওয়ায় মন্ত্রীদেরই কৃষকদের জন্য চা-জলখাবারে গিয়ে ভাগ বসাতে হয়েছিল।
কৃষি মন্ত্রকের এক আমলা বলেন, ‘‘গত এক বছরে কৃষক নেতারা যেমন রাস্তায় নেমে আন্দোলন করে অস্বস্তিতে ফেলেছেন, তেমনই সরকারের সঙ্গে দর কষাকষিতেও মন্ত্রী-অফিসারদের নাকানিচোবানি খাইয়েছেন।’’ কী রকম? ওই আমলা গত ডিসেম্বরে বিজ্ঞান ভবনের এক দিনের বৈঠকের কথা মনে করিয়ে দিলেন। বৈঠকের মধ্যেই আচমকা কৃষক সংগঠনের নেতারা ‘মৌনব্রত’ নিয়েছিলেন। মন্ত্রীরা বার বার কৃষক নেতাদের বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন। বোঝানোর চেষ্টা করছেন, তিন-তিনটি আইন সংসদে পাশ হয়েছে। রাষ্ট্রপতির সই হয়ে আইন জারি হয়েছে। এখন সে সব প্রত্যাহার করে নিলে সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে যাবে। কিন্তু কৃষক নেতারা মুখ খুলতেই চাননি। তাঁরা হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে বসেছিলেন। তাতে লেখা, ‘ইয়েস অর নো? নো চর্চা’।
সে দিন প্রায় আধ ঘণ্টা এই ভাবে কেটে যাওয়ার পরে পীযূষ গয়াল উঠে গিয়ে অমিত শাহকে ফোন করেছিলেন। তোমর কৃষি মন্ত্রকের কর্তাদের সঙ্গে আলাদা বৈঠকে বসেছিলেন। কিন্তু কৃষক নেতারা মৌনব্রত নেওয়ায় হাল ছেড়ে ফের পরের সপ্তাহে বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়। কৃষি মন্ত্রকের ওই আমলার বক্তব্য, ‘‘সরকারের কেউই ভাবতে পারেননি, কৃষকরা এক বছর ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তা-ও আবার কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে। শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা কৃষকরা নিজেদের মতো করে মানিয়ে নিয়েছেন। কৃষকদের রসদ, উৎসাহ, শক্তি এক সময় ফুরিয়ে আসবে, এটাই ধরে নেওয়া হয়েছিল। তাঁদের এই অনড় মনোভাবই সরকারকে পিছু হঠতে বাধ্য করল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy